নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা, আপনজন: শুক্রবার অনার্স-পিজি টিচারদের সংগঠন “অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন” এর পক্ষ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি - চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য কে শিক্ষকদের পদোন্নতি নিয়ে ডেপুটেশন দেওয়া হলো ও ক্যাস বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়, উনি দাবিপত্র নিয়ে স্কুল শিক্ষা দপ্তর নির্ধারিত ৬ সদস্যের কমিটিতে পর্যালোচনা করবেন বলে জানান। ডেপুটেশনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সম্পাদক চন্দন গরাই, যুগ্ম সম্পাদক আশরাফ আলী, কোষাধ্যক্ষ জয়প্রকাশ দাস ও রাজ্য কমিটির সদস্য অভিজিৎ নন্দী এই রাজ্য কমিটির চারজন । আলোচনায় স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কয়েকটি পদোন্নতি সংক্রান্ত মানদণ্ড নিয়ে আলোচনা করেন কাউন্সিল সভাপতি। রাজ্য সরকারের বর্তমান ক্যাস বিষয়ক নির্দেশিকা রাজ্র শিক্ষা নীতি -২০২৩ অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারী ও সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, কলেজ, ইউর্নিভার্সিটি, পৌরসভার কর্মচারী যারা ৮ বছর, ১৫ বছর এবং ২৪ বছর চাকরি সম্পন্ন করার পর একটি করে অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট সহ পরবর্তী উচ্চতর স্কেলে উন্নীত হন। এটাকেই বলা হয় ক্যাস। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ক্যাস বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টে ২০২০ সালে প্রথম মামলা করা হয়। যার উদ্দেশ্যে সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল ও মাদ্রাসাগুলির অনার্স ও পিজি পোস্টের শিক্ষকরা যাতে চাকরি জীবনে তাদের পরিবর্তিত বেতন পান। পরিবর্তন হয় না, অবসর নেওয়া পর্যন্ত অপরিবর্তিতই থাকে। সরকারী সাহায্য প্রাপ্ত ও পোষিত স্কুলের পিজি ও অনার্স টিচাররাই একমাত্র কর্মচারী যারা চাকুরী জীবনে 10 বছর ও 20 বছরে একটি করে অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট ছাড়া অন্য কিছু পান না ।
অনার্স পিজি টিচারদের পদোন্নতি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের দাবি নিয়ে রাজ্যের প্রথম ও প্রধান অনার্স/পিজি টিচারদের রেজিস্টার্ড সংগঠন “ অল পোস্ট গ্ৰ্যজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন “ হাইকোর্টে কেসের মাধ্যমে CAS বেনিফিটের Reasoned Order পেলেও আমরা মনে করি, স্কুল শিক্ষা দপ্তর যথাযথ যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই এই CAS বেনিফিট না দেওয়ার একটি নোটিশ জারি করে। পরবর্তীতে, CAS মামলাটিতে মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে হলফনামা জমা দেবার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা মনে করি, এটি আমাদের একটি ন্যায্য অধিকার ও দাবি । এই ন্যায্য দাবির জন্য সংবিধান মেনে ও গণতান্ত্রিক ভাবে আমাদের লড়াই দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছি। সম্প্রতি, Govt. of West Bengal থেকে প্রকাশিত নোটিফিকেশন, মেমো নং - 29/ secy/ DSE -11019/1/2023 Dated 9th October, 2023 অনুযায়ী স্কুল শিক্ষা দপ্তরের ৬ সদস্যের কমিটির নিকট আমাদের দাবী সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করার আবেদন করছি। সংগঠন চায়, Govt. Aided ও Sponsored স্কুল/মাদ্রাসার অনার্স/পিজি শিক্ষকদের জন্য CAS প্রদান বিষয়ে দ্রুত নির্দেশিকা জারী করুক সরকার এবং সমতা আনুক শিক্ষক ও সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে । সরকারের সদিচ্ছা থাকলে রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষকের এতদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটবে। সরকার পোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল ও মাদ্রাসাগুলোর অনার্স /পিজি ক্যাটাগরি শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন ক্রমের প্রতি সরকারের বৈষম্য মূলক আচরন অনভিপ্রেত । শিক্ষা দপ্তর শিক্ষকদের স্বার্থে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুক এবং বৈষম্য দূর হোক। সুতরাং, বর্তমান CAS বিষয়ক ৬ সদস্যের কমিটির মাধ্যমে Career Advancement Scheme অতিদ্রুত চালু করুক স্কুল শিক্ষা দপ্তর।
এবিষয়ে সংগঠনের কয়েকটি দাবি হলো :
(১) সাম্প্রতিক সরকারি নোটিফিকেশন অনুযায়ী সরকারি কর্মচারী ও সরকারি স্কুলের টিচারদের মতো কোনরকম শর্ত ছাড়াই সিনিয়রিটি (Seniority) এর মান বজায় রেখে ৮,১৫ ও ২৪ বছরে Career Advancement Scheme (CAS) চালু করতে হবে।
(২) প্রত্যেককে চাকুরীজীবনের শুরু থেকে CAS বেনিফিটের Notional Effect দেওয়া হোক।
(৩) Hons/ PG টিচারদের চাকুরীজীবনে কোনরকম CAS এর সুযোগ দেওয়া হয় না, স্কুল ও মাদ্রাসায় একমাত্র HONS/PG টিচাররাই একমাত্র ক্যাটেগরি যাদের কোনরূপ Scale of Pay পরিবর্তন হয় না। সুতরাং, HONS/PG পোস্টের টিচারদের CAS প্রদান বিষয়টি কমিটি অতিদ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুক।(৪) CAS প্রদানে স্বজনপোষণহীনতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। শিক্ষকদের পদোন্নতি নিয়ে যে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করে রিপোর্ট জমা করতে স্কুল শিক্ষা দপ্তর অর্ডার প্রকাশ করেছে সেই কথা বিবেচনা করে “ ক্যারিয়ার এডভান্সমেন্ট স্কিম “ অর্থাৎ CAS আদায়ে অনার্স পিজি টিচারদের সংগঠন “অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন “ ২০২০ সাল থেকে কেস চালিয়ে আসছে। সংগঠনের সেক্রেটারী চন্দন গরাই জানান, সরকারি কর্মচারী ও সরকারি স্কুলের টিচারদের মতো ৮,১৫, ২৪ বছরে কোনরকম শর্তহীন ও স্বজনপোষণহীন ভাবে ক্যাস /পদোন্নতি চালু করতে হবে। যেখানে সিনিয়রটি ও নোশনাল এফেক্টকে মান্যতা দেওয়ার প্রস্তাব রাখতে হবে এবং অনার্স পিজি টিচারদের ক্যাস চালু করতে হবে । “ইতিপূর্বেই সংগঠনের পক্ষ থেকে স্কুল শিক্ষা কমিশনার, DSE- চিন্ময় সরকার ও ডিএসই উপদেষ্টা অনিরুদ্ধ গাঙ্গুলীকে দাবিপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct