নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা, আপনজন: বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পরিচারক রাম স্বরূপ শর্মার একটি ফ্ল্যাটের হদিশ মিলল কেষ্টপুর অঞ্চলে । প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা মূল্যের এই ফ্ল্যাটটি সে কিনেছিল দু বছর আগে। রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক । এবার খোঁজ পাওয়া গেল তার পরিচারকের প্রায় ২০ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি ফ্লাটের । কেষ্টপুরের প্রফুল্ল কানন অঞ্চলে শান্তিনিকেতন এপার্টমেন্টের চতুর্থ তলে তার এই ফ্ল্যাট । এই অ্যাপার্টমেন্টের অন্যান্য বাসিন্দারা জানান, তারা জানতেন রাম স্বরূপ মন্ত্রীর পরিচারক হিসেবে কাজ করেন । তারা আরো জানান, মাঝেমধ্যেই তারা এই ফ্ল্যাটে এসে থাকেন । সূত্রের খবর, এই ফ্ল্যাটের পাশাপাশি কলেজ স্ট্রিটেও রাম স্বরূপের বাড়ি রয়েছে । মল্লিক বাড়িতে পরিচারকের কাজ করলেও রাম স্বরূপ রাজ্য কৃষি দপ্তরেও কর্মরত । প্রশ্ন উঠছে, এই ফ্ল্যাট কেনার টাকা তিনি কিভাবে পেয়েছিলেন এবং তিনি কি করে কৃষি দপ্তরে কাজ পেলেন সবটাই খতিয়ে দেখছে, ইডি আধিকারিকরা। এদিকে ইডি সোমবার রিমান্ড লেটার আদালতে পেশ করে। সেই তথ্য অনুযায়ী , রেশন বন্টন দুর্নীতির পর সামনে আসতে চলেছে ধান দুর্নীতি।
রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে ফের ইডি হেফাজত প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এবার আরও এক দুর্নীতির মামলার দিকে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ইডি। এবার ধান দুর্নীতি। ধান কেনার নামে তছরুপ হয়েছে সরকারি টাকা। ভুয়ো চাষিদের নামে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে তুলে নেওয়া হয়েছে টাকা। এমনটাই অনুমান ইডির। তাই আরও চাপে পড়তে চলেছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রেশন দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়েই উঠে এসেছে ধান কেনায় দুর্নীতি কথা। এমনটাই জানিয়েছে ইডি। সোমবার যখন জ্যেতিপ্রিয়কে আদালতে তোলা হয় তখন ইডি তাঁদের রিমান্ড লেটারে সেই তথ্য দিয়েছে। ধানচাষীদের কাছ থেকে সরকারি দামে ধান কেনে কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলি। ধানের দাম সরাসরি চাষিদের অ্যাকাউন্টে চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু ইডি তদন্ত করে দেখেছে, ধান কেনার ক্ষেত্রে সরকার ও কোঅপারেটিভ সোসাইটিগুলির মধ্যে চলে আসছে কোনও না কোনও এজেন্ট মারফত লেনদেন। মিল মালিকরা ওইসব এজেন্টদের মাধ্যমে সরকারি রেটের থেকে কম দামে ধান কিনে নিত।ওই ধান কেনার জন্য খাতায় কলমে কারচুপি করা হতো, এমনটাই অভিযোগ।প্রসেস কিভাবে হত , সেই বিষয়ে জানা গিয়েছে, ওইসব এজেন্টরা কিছু চাষিদের জোগাড় করতো। তাদের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতো। সমবায় সমিতির খাতায় ওইসব চাষিদের দেখানো হতো। তাদের নামে ধান কেনা হতো। এভাবে ধান কিনলে মিল মালিকদের প্রতি কুইন্টালে ২০০ টাকা লাভ করত। ওই লাভের টাকায় মিল মালিক ছাড়াও এজেন্ট ও সরকারি আধিকারিকরা এমনকি মন্ত্রীও লাভবান হয়েছেন বলে অনুমান ইডির। এনিয়ে জ্যোতিপ্রিয়কে জিজ্ঞাসবাদ করেছে ইডি। জ্যোতিপ্রিয় ইডিকে জানিয়েছেন, তা হল তাঁর আমলে বিষয়টি তাঁর নজরে এসেছিল। তিনি সিআইডিকে দিয়ে তদন্তও করিয়েছিলেন। কিন্তু সেই তদন্তের অগ্রগতি কী তা তিনি বলতে পারেননি। তবে ইডি আরও একটি মামলা করতে চলেছে । আদালতে রিমান্ড লেটার দিয়ে সেই তথ্যই জানিয়েছে ইডি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct