আপনজন ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা ক্রমেই ‘শিশুদের জন্য কবরস্থানে’ পরিণত হচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি সোমবার নিউ ইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, গাজা শিশুদের জন্য কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে। প্রতিদিন সেখানে শত শত বালক ও বালিকা হতাহত হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।গত এক মাস ধরে গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছে মানবতার শত্রু ইসরাইল। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে ৭ অক্টোবর ভয়াবহ পরাজয়ের মুখোমুখি হওয়ার পর থেকে গাজার নিরপরাধ বেসামরিক ফিলিস্তিনি জনগণের উপর অবিরাম বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তেল আবিব। বর্বর এই হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা সোমবার ১০ হাজার অতিক্রম করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে গুতেরেস আরো বলেন, যুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ইসরাইলি বাহিনী একসঙ্গে বেসামরিক নাগরিক, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জা এবং জাতিসংঘের স্থাপনার ওপর বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে। গাজায় এখন আর কেউ নিরাপদ নয়।গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের ৮৯ কর্মী ইসরাইলি গণহত্যার শিকার হয়েছেন জানিয়ে গুতেরেস বলেন, জাতিসংঘের ইতিহাসে আর কখনও কোনো যুদ্ধে এত বেশি সংখ্যক কর্মী নিহত হননি। গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আমাদেরকে এই নৃশংস, ভয়ঙ্কর ও যন্ত্রণাদায়ক ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বেরিয়ে আসার একটি উপায় খুজে বের করতে হবে।গুতেরেস বলেন, গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে। গাজার বিরুদ্ধে ইসরাইলের চলমান যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করাকে ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ দেয়ার আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব।গাজাবাসীর জন্য এখন মানবিক ত্রাণ অতি জরুরি বলেন জানান গুতেরেস। তিনি বলেন, যুদ্ধের আগে যেখানে গাজায় প্রতিদিন পণ্যবাহী ৫০০ ট্রাক ঢুকত সেখানে গত দু’সপ্তাহে সব মিলে মাত্র ৪০০ ট্রাক প্রবেশ করেছে। গুতেরেস বলেন, শুধুমাত্র রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজাবাসীর সমুদ্রসম প্রয়োজন পূরণ করা সম্ভব নয়। তিনি ইসরাইলের অন্যান্য ক্রসিং খুলে দিয়ে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ব্যাপকভাবে ত্রাণ সরবরাহ করার সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct