আপনজন ডেস্ক: ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে সংহতি জানাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ। গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ শুরু হওয়ার পর থেকেই ছোট পরিসরে মিছিল বের করে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাচ্ছেন ইন্দোনেশিয়ার সক্রিয় কর্মীরা। তাঁরা নভেম্বর মাসকে ফিলিস্তিন সংহতির মাস হিসেবে ঘোষণা দেন। এরপর গত রবিবার জাকার্তার জাতীয় মনুমেন্ট কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত সর্ববৃহৎ সংহতি সমাবেশে অংশ নেয় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি সমর্থক।দি ইন্দোনেশিয়ান ওলামা কাউন্সিল আয়োজিত আন্তর্ধর্মীয় এ সমাবেশে খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরাও অংশ নেন। তা ছাড়া দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদিসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও এতে উপস্থিত হন।সেদিন সকাল থেকেই তাঁরা সাদা পোশাক পরে ন্যাশনাল মনুমেন্ট স্কয়ারে জড়ো হন। তাঁদের মাথায় ছিল সাদা ও কালো রঙের ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি স্কার্ফ।আর হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা। অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলি নৃশংসতার তদন্তের দাবি জানিয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি দিতে থাকেন তাঁরা। এ সময় তাঁরা ইসরায়েলি পণ্য বয়কট, উপনিবেশবাদের অবসান ও স্বাধীন ফিলিস্তিন গঠনে বিশ্ব নেতৃত্বকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।রেতনো মারসুদি বলেন, ‘আজ আমরা মানবতার প্রতি আমাদের সংহতি জানাতে নিজেদের বৈচিত্র্য নিয়ে এখানে সমবেত হয়েছি।
ইন্দোনেশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে আমরা ফিলিস্তিন জাতির সংগ্রামের প্রতি ইন্দোনেশিয়ার সমর্থন আবার নিশ্চিত করতে চাই। ফিলিস্তিন, তুমি আমার ভাই। আমি ও আমার ইন্দোনেশিয়া সব সময় তোমার সঙ্গে থাকব। আমার ইন্দোনেশিয়া এবং আমি সব সময় তোমার সঙ্গে রয়েছি, যতক্ষণ না উপনিবেশকারীরা তোমার বাড়ি ছেড়ে না যায়। গাজায় প্রতি ১০ মিনিটে একটি শিশু হত্যা করা হচ্ছে।হাজার হাজার মাতা-পিতা তাঁদের সন্তানদের হারিয়েছে। হাজার হাজার শিশু তাদের মাতা-পিতাকে হারিয়েছে। আমার ইন্দোনেশিয়া ও আমি কখনো সাহায্য করা থেকে পিছপা হব না।’দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়া একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ ও বহু সংস্কৃতির দেশ। ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দেশটি ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখেনি। দেশটি দীর্ঘকাল ধরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দখলদারির অবসান এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমারেখার ভিত্তিতে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে।সমাবেশে অংশ নেওয়া ৪০ বছর বয়সী ইসিয়ানা আরথারিনি বলেন, ‘একজন সাধারণ ব্যক্তি হিসেবে আমি পুরোপুরি শক্তি ও সামর্থ্যহীন। সর্বনিম্ন আমি যা করতে পারি তা হলো তাদের প্রতি সমর্থন দেখানো।’ পরিবারসহ সমাবেশে অংশ নেওয়া বারলিয়ান ইদরিস বলেন, ‘আহত ফিলিস্তিনি শিশুদের ছবি ও গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞের ছবি আমাকে কাঁদিয়েছে। আমরা হিতাহিত জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ। আমরা ইসরায়েলের নৃশংসতার নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা ফিলিস্তিনকে সমর্থন করি এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানাই।’২২ বছর বয়সী সায়িফা বলেন, ‘আমি এই সমাবেশে অংশ নিয়েছি যেন আমি মানুষকে দেখাতে পারি যে ইন্দোনেশিয়ায় অনেক মানুষ আছে, যারা ফিলিস্তিনি ইস্যুতে খুবই সোচ্চার। আমি মনে করি, মানবতার জন্য আপনার কণ্ঠস্বর উঁচু করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত ফিলিস্তিনি ইস্যুতে বর্তমানে যা ঘটছে তা কোনো সংঘাত নয়, তা সুস্পষ্ট গণহত্যা।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct