এম মেহেদী সানি, বাদুড়িয়া, আপনজন: সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের শিক্ষা মানচিত্রে সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রীদের উত্তরণের পথ দেখাতে অগ্রণী ভূমিকা রাখা ‘অল-ইন্ডিয়া সুন্নাত অল জামায়াতে’র সর্বভারতীয় কনভেনশন অনুষ্ঠিত হল উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বাদুড়িয়ায় ৷ জানা গিয়েছে, ১৯৮৩ সালে মরহুম হাফেজ শামসুর রহমানের হাত ধরে বাদুড়িয়া ব্লক সুন্নাত অল জামায়াত নামে প্রতিষ্ঠিত সংগঠন বর্তমানে ‘অল ইন্ডিয়া সুন্নাত অল জামায়াত’ হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে ৷ সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি জামিয়া রাহমানিয়া-র প্রধান পরিচালক শাইখুল হাদিস, মুফতি আব্দুল কাইয়ুম এবং সাধারন সম্পাদক মুফতি আব্দুল মাতিনের তত্ত্বাবধানে বর্তমানে সংখ্যালঘু শিক্ষার মানোন্নয়নে এবং সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের ইসলামিক এবং আধুনিক শিক্ষা দিয়ে উত্তরনের পথ দেখাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে ৷ সংগঠনের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘুদের সামগ্রী উন্নয়নে ‘ভিশন ২০৩০’ শীর্ষক কর্মসূচিকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত আয়োজিত সর্বভারতীয় কনভেনশন আলেম-উলামা সহ বিশিষ্ট জনের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো ৷ এ দিন ‘অল ইন্ডিয়া সুন্নাত অল জামায়াতে’র সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুল মাতিন সংগঠনের বিগত দিনের শিক্ষা ও সমাজসেবা মূলক কাজের সফলতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন । উপস্থিত ছিলেন জামিয়া রহমানিয়ার ডিরেক্টর ও সংগঠনের সভাপতি মুফতী আব্দুল কাইউম, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী, জেলা পরিষদের বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ একেএম ফারহাদ, জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ বুরহানুল মোকাদ্দিম (লিটন), প্রাক্তন বিধায়ক ডা: মোত্তর্জা হোসেন, কামারুজ্জামান, অধ্যাপক আলোক চক্রবর্তী, বিজয় উপাধ্যায়, সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস, ছোটন দাশ, ড. মুস্তফা আব্দুল কাইউম, আবু সিদ্দিক খান প্রমুখ ৷ আর্থ-সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মুসলিম সমাজকে মুক্তির দিশা দেখাতে ওই সংগঠন কার্যকলাপের ভূয়সী প্রশংসা করেন সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী। সর্বভারতীয় কনভেনশন থেকে ‘ভিশন ২০৩০’ নামে একটি প্রকল্প ঘোষণা করেন ‘অল-ইন্ডিয়া সুন্নাত অল জামায়াত’ কর্তৃপক্ষ ৷ ওই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ১৫ দফা কর্মসূচির মধ্যে একাধিক বিষয় তুলে ধরা হয়েছে ৷ আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার উন্নতির জন্য ইসলামী শিক্ষার সাথে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় রেখে কমপক্ষে একটি করে গুণগত মান সম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষা প্রদানের জন্য রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ২০০০ মক্তব প্রতিষ্ঠা করা ৷ পশ্চিমবাংলার কোনো মুসলমান যেন “কুরআন” শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না থাকে । মুসলিম জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে মাধ্যশিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র ও গবেষণাগার স্থাপন করা ও ‘কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ তৈরি করা ৷ উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আধুনিক মানসম্মত কমপক্ষে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, একটি নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার তৈরি করা, ডব্লিউ.বি.সি.এস, ইউ.পি.এস.সি সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অন্যান্য চাকরির পরীক্ষার আবাসিক ও অনাবাসিক কোচিং এর ব্যবস্থা করা। প্রতিটি মাদ্রাসায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, মাদ্রাসার শিক্ষকদের বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা ও উন্নত ভবিষ্যৎ গঠনের লক্ষ্যে অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা ‘কেরিয়ার কাউন্সেলিং’, সুদ বিহীন ইসলামী ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠা করা প্রভৃতি ৷
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct