আপনজন ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে সেখানে মানবিক ও ত্রাণ সহায়তার প্রবেশ এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন কুয়েতের ক্রাউন প্রিন্স শেখ মিশাল আল-আহমাদ আল-সাবাহ। গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) কুয়েত আইনসভার অধিবেশনে তিনি ফিলিস্তিন ইস্যুতে কুয়েতের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ‘কুয়েতের সরকার ও জনগণ ফিলিস্তিনি অঞ্চলে, বিশেষত গাজা উপত্যকায় সংঘটিত রক্তাক্ত ঘটনাগুলোর নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।’ তিনি আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ফিলিস্তিন সমস্যার ন্যায্য ও ব্যাপক সমাধানের পক্ষে কুয়েতের দৃঢ় সমর্থনের কথা তুলে ধরেন।এর আগে গত ২৯ অক্টোবর আরব শান্তি উদ্যোগ ও আন্তর্জাতিক প্রস্তাব অনুসারে ১৯৬৭ সালের ৪ জুনের সীমারেখায় স্বাধীন ফিলিস্তিন গঠন ও ফিলিস্তিন ইস্যুতে দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ সালিম আবদুল্লাহ আল-জাবির আল-সাবাহ।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত কুয়েত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার বিপক্ষে। এটি কুয়েতের স্পষ্ট অবস্থান, যা থেকে কুয়েত সরকার কখনো সামান্য পরিমাণও সরে দাঁড়ায়নি।’ফিলিস্তিন ইস্যুতে কুয়েতের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গাজায় চলমান যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে কুয়েতের তিনটি দাবি রয়েছে। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি দেওয়া, গাজায় সাহায্য পাঠানো এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সুষ্ঠু ও চূড়ান্ত সমাধান সম্পন্ন করা।আমরা চলমান সহিংসতা ভবিষ্যতেও দেখব। তাই আমরা এর ন্যায্য সমাধানের দাবি জানাচ্ছি। আর তা হলো, ১৯৬৭ সালের আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুসারে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা।’ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গাজায় ২৩ দিন ধরে চলমান এই যুদ্ধ প্রতিশোধমূলক যুদ্ধ।এটি সম্মিলিত হামলা ও যুদ্ধাপরাধের শামিল। তা কোনো আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধ নয়। তিন হাজারেরও বেশি শিশুকে হত্যার পরও তা কিভাবে আত্মরক্ষামূলক থাকে? আমরা এই বীভৎস নৃশংস হত্যাযজ্ঞের অবসান চাই।’গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। ২৩ দিন ধরে হামাসের সঙ্গে চলমান এই যুদ্ধে গাজায় সাত হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে, যার অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু।দীর্ঘ তিন সপ্তাহ পর গত ২৭ অক্টোবর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ১২০ দেশের ভোটে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়। এই যুদ্ধে গাজায় আট হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়, যার মধ্যে রয়েছে তিন হাজারের বেশি শিশু। আর ইসরায়েলের এক হাজার ৪০০ জনের বেশি নিহত হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct