আপনজন ডেস্ক: কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে বিরিয়ানির রেস্তরাঁ ‘সিরাজ’। এই শহরে এসে পা রাখেননি এমন পাকিস্তানি ক্রিকেটার কমই আছে। ইমরান খান, জাভেদ মিয়াঁদাদ, ওয়াসিম আকরাম, শোয়েব আখতার, শোয়েব মালিকদের প্রিয় রেস্তরাঁ ছিল সিরাজ। কিন্তু এবার সেই রেস্তরাঁর সুস্বাদু বিরিয়ানি মুখে তোলার সুযোগ হচ্ছে না বাবর আজমদের। কারণ, পাকিস্তান দলের একের পর এক হারের সঙ্গে ক্রিকেটারদের ফিটনেস নিয়েও চলছে সমালোচনা। পাকিস্তানের ক্রিকেট গ্রেট ওয়াসিম আকরাম তো পাকিস্তান দলের ক্রিকেটারদের ফিটনেস নিয়ে কটাক্ষ করে বলেই ফেলেছেন- ‘দেখে তো মনে হয়, তারা প্রতিদিন আট কেজি করে খাসির গোশ্ত খায়।’ খাওয়া নিয়ে সমালোচনা পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের জন্য নতুন নয়। কিন্তু ৭ বছর পর কলকাতায় পা রেখে নিজেদের প্রিয় বিরিয়ানির দোকানে যাওয়াটাই এখন তাদের জন্য বিষের মতো। হবে না কেন পয়েন্ট টেবিলে ছয় নম্বরে দল। বাকি তিন ম্যাচ জিততে না পারলে এই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা এখন কঠিন স্বপ্ন। আজ কলকাতার ইডেনে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান।
এই ম্যাচে হারলে রেস থেকেই ছিটকে যাবে তারা। আর তাই সিরাজে তো নয়-ই, টিম হোটেলেও বিরিয়ানি মুখে তুলছে না বাবররা! এ নিয়ে মন খারাপ সিরাজ রেস্তরাঁর মালিক ইশতিয়াক আহমেদেরও। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ওরা এলে পার্ক সার্কাস মোড়ে ট্রাফিক জ্যাম হয়ে যেত। এবার সম্ভবত ওরা আসবে না। হ্যাঁ, কলকাতায় এলেই ইমরান খান, মিয়াঁদাদরা এখানে বিরিয়ানি খেতে আসতেন।’ পাকিস্তান দল কলকাতায় আসার আগে থেকে শুরু হয় গুঞ্জন এবার কি তারা যাবেন পার্ক স্ট্রিটে সেই বিরিয়ানির দোকানে! ১৯৪১-এ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই সিরাজ রেস্তরাঁ। পাকিস্তান দলের ক্রিকেটাররা সিরাজের উমদা বিরিয়ানি খেতে প্রতিবার যান. সাত বছর আগে শেষ যেবার পাক দল কলকাতায় এসেছিল সেবারও গিয়েছিল এই রেস্তরাঁতে- এমনটাই নিশ্চিত করেন ইশতিয়াক। একেতো হারের বৃত্তে দল বিশ্বকাপে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ। তার ওপর এবার পাক দলের বিরিয়ানি খাওয়া নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হওয়ায় তারা সেখানে যেতে কুণ্ঠিত। রেস্তরাঁর মালিক ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘আসাদ আলী এবং আলী হোসেন নামে দুই শেফ এই রেস্তরাঁ শুরু করেন. ওদের সঙ্গে ছিলেন নবাব ওয়াজিদ আলী শাহ্র খাস রসুইকার এর বংশধর শামসুদ্দিন। মূলত আয়ুধি স্টাইলে এখানে খাবার তৈরি হয়। এখানে এর আগে দমপোক্ত বিরিয়ানি খেয়েছে পাকিস্তান দল।’ পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান সিরাজের বিরিয়ানির সবচেয়ে বড় ভক্ত। এই দোকানের মালিক তো ইমরানের বিরিয়ানি খাওয়ার পরের একটি স্মৃতি এখনো ভুলতে পারেননি। সবশেষ ইমরান যখন এখানে এসেছিলেন তার সেই স্মৃতি নিয়ে জানা যায়- ইমরান লখনৌ বিরিয়ানি খেয়ে এতো খুশি হন যে বাবুর্চি খানায় গিয়ে তিনি সবাইকে একশ’ রুপি করে বখশিশ দিয়েছিলেন। তবে এবার বাবরদের দুর্ভাগ্য তাদের ক্রিকেট গ্রেটদের স্মৃতির রেস্তরাঁয় যাওয়া হচ্ছে না। তবে যদি পাকিস্তান সেমিফাইনালে শেষ পর্যন্ত যেতে পারে তাহলে কলকাতায় তারা খেলতে আসবে। হয়তো তখনই তাদের একটি সুযোগ থাকবে। তবে কাগজে-কলমে পাকিস্তান দলের যে অবস্থা তাতে সেই স্বপ্নপূরণ হবে কিনা- সেটি ছেড়ে দিতে হবে ভাগ্যের ওপরই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct