আপনজন ডেস্ক: যে গুজরাতকে দেশের মধ্যে উন্নয়নের দৃষ্টান্ত বলে জাহির করে থাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ বিজেপি সেই গুজরাতের সুরাতে আর্থিক সমস্যার কারণে গণআত্মহত্যায় তিন শিশুসহ একই পরিবারের ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে সুরাতের পালনপুর পটিয়া এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টে। শনিবার সকালে এক আসবাবপত্র ব্যবসায়ীর পরিবারের সাতজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সাত, পাঁচ ও তিন বছর বয়সী শিশু প্রাণ হারিয়েছে। পুলিশ সূত্র প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহ করছে মণীশ সোলাঙ্কি নামে ওই ব্যবসায়ী শুক্রবার গভীর রাতে আত্মহত্যার আগে তার বাবা-মা, স্ত্রী ও সন্তানদের বিষ প্রয়োগ করেছেন। যদিও এ বিষয়ে আরও জানা যায় ঋণগ্রহীতাদের তিনি যে ঋণ দিয়েছিলেন তা আদায় করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে তারা আর্থিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। তার কারণেই সপরিবারে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তারা।
সপরিবারের মৃত্যুর সন্দেহ জাগে যখন প্রতিবেশীরা তাদের ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ পান। এ ব্যাপারে সংস্বাদ সংস্থা সূত্র জানিয়েছে,
সুরাতের পালনপুর পটিয়ার সি২ শ্রী সিদ্ধেশ্বর কমপ্লেক্সের জি-১ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা বিষয়টি জানতে পারেন। দখলদারদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংশ্লিষ্ট বাসিন্দারা সুরাত পুলিশ কন্ট্রোল রুমকে অবহিত করেন।
আদাজান থানার কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে জোর করে মূল দরজায় প্রবেশ করেন। ভিতরে তারা সোলাঙ্কি পরিবারের সাত সদস্যের প্রাণহীন দেহ দেখতে পান। নিহতরা হলেন মনীশ সোলাঙ্কি (৩৫), তার স্ত্রী রিতা (৩২), তাদের সন্তান দিশা (৭), কাব্য (৫) ও খুশাল (৩)। অন্য দু’টি মৃতদেহ ছিল মণীশের বাবা কান্তিলাল সোলাঙ্কি (৬৫) ও শোভনা (৬০)।
মণীশ মূলত আমরেলি জেলায় অবস্থিত সাভারকুন্ডলা থেকে এখানে এসে বসবাস করছেন। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে তার পরিবারের সাথে সুরাতে বসবাস করছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, তিনি এবং তার পরিবার যেখানে থাকতেন সেই একই বিল্ডিংয়ের মধ্যে তার চারটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। শনিবার বিকেলে পুলিশ লাশগুলো নিউ সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ ঘটনাটিকে অপরাধ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত ও তদন্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শুরু করেছে। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মণীশ একাধিক ব্যক্তিকে ঋণ দিয়েছিলেন এবং দীপাবলি উৎসব ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে তিনি এই ঋণগুলি পরিশোধের অনুরোধ করেছিলেন। তাতে তিনি হতাশ হযে পড়েন। আদাজান পুলিশের ধারণা, সেই হতাশা থেকেই এই ধরনের চরম পদক্ষেপ নিয়েছে তার পরিবার। সুরাটের মেয়র নিরঞ্জন জাঞ্জমেরা বলেন, মনে হচ্ছে সোলাঙ্কি গলায় ফাস দেওয়ার আগে তার পরিবারের সদস্যদের বিষ পান করান। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct