আপনজন ডেস্ক: আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম জন্মভূমি প্রাঙ্গণে আসন্ন মন্দিরের গর্ভগৃহে রামের মূর্তি প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিশ্চিত করেছেন। এর পর মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি অংশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে অযোধ্যার সোহাওয়াল তহসিলের ধন্নিপুর গ্রামে প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদের বিকল্প মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে অনুষ্ঠানে তাকে অংশ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে।
তবে এই আবেদনের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মসজিদের দায়েত্ব থাকা ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন (আইআইএফসি) বলেছে, মসজিদের নকশা এখনও অনুমোদিত হয়নি এবং পর্যাপ্ত তহবিল সংগ্রহ করা হয়নি। তাই এখনই প্রধানমন্ত্রীকে ভিত্তি স্থাপনের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে মসজিদ প্রকল্পকে রাজনীতিকরণ করা উচিত নয়।
২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর অযোধ্যা প্রশাসন অযোধ্যা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে ধন্নিপুর গ্রামে উত্তরপ্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডকে মসজিদ নির্মাণের জন্য ৫ একর জমি বরাদ্দ করেছিল। এ ব্যাপারে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের অযোধ্যা শাখার সভাপতি মুফতি হিসবুল্লাহ বাদশা খান বলেন, ‘মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি হিন্দু ও মুসলিম উভয়ের পক্ষে। তিনি যদি হিন্দু ভাইদের ‘উপাসনা গৃহ’ মন্দির উদ্বোধন করতে আসেন, তাহলে তারও উচিত মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা।
বাবরি মসজিদ পুনঃনির্মাণের জন্য আওয়াজ তোলা ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগের রাজ্য সভাপতি নাজমুল হাসান গনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ও মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে। একইভাবে অযোধ্যার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আন্দোলন ‘পায়াম-ই-ইনসানিয়াত’-এর আহ্বায়ক মাওলানা অসীম নদভী মনে করেন, প্রস্তাবিত মসজিদ এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর সফর অবশ্যই একটি ইতিবাচক বার্তা দেবে।
এদিকে অযোধ্যার মুসলিম নেতৃত্বের একাংশের আবেদনের প্রতিক্রিয়ায় ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি আতহার হুসেন বলেছেন, মসজিদে আসতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী স্বাগত। তবে জনগণের উচিত প্রস্তাবিত মসজিদকে রাজনৈতিক রঙ দেওয়া থেকে বিরত থাকা। হুসেন বলেন, মসজিদ প্রকল্প বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিষয়গুলি আইআইসিএফের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।তিনি আরও বলেন, ভিত্তি স্থাপনের সময় কেবল তখনই আসবে যখন তহবিল সংগ্রহ করা হবে এবং নকশাটি পাস হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ এবং আমরা ধন্যিপুরে তার উপস্থিতি দেখতে চাই। তবে তার সফরের সাথে কিছু প্রোটোকল সংযুক্ত রয়েছে। আমাদের সেগুলি পূরণ করতে হবে। আইআইসিএফ সচিব বলেন, যারা রাজনীতিবিদ অনেক কিছু বোঝেন না। তিনি বলেন, আদালতের মাধ্যমে শত বছরের পুরনো বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে। তাই ধন্যিপুর গ্রামে দেওয়া জমিতে মসজিদ নির্মাণ করে আদালতের রায়কে সম্মান জানানো আমাদের দায়িত্ব। আমরা এখনও তহবিল সংগ্রহ করছি। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে প্রধানমন্ত্রীকে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে পারি?
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct