সাদ্দাম হোসেন, জলপাইগুড়ি, আপনজন: পঞ্চমীর ভোরবেলা। একেবারে দল পাকিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন ওঁরা। আট থেকে আশি-মোটামুটি সব বয়সের সদস্যরাই রয়েছেন। প্রথমে চায়ের দোকানে ঢুঁ, তারপর সেখান থেকে জাতীয় সড়কের মাঝ বরাবর ধরে ভ্রমণ। আবার গাড়ি, পথ চলতি মানুষ দাঁড় করিয়ে রাস্তা পারাপার! পঞ্চমীর সাতসকালে ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ব্লকের গ্রাস মোর চা দোকান সংলগ্ন ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে সদ্যোজাত-সহ ২৫ টি হাতির দল রীতিমতো ফুরফুরে মেজাজে। স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য জানাচ্ছেন, বুধবার রাতেই হাতির দলটি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এলাকায় ঢুকে পড়েছে। ভোরের আলো ফুটতেই হাতির দলটি ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক পার করে ডায়না জঙ্গলের দিকে এগোতে থাকে। বাগানের ৪ নম্বর গেট দিয়ে এক পাল হাতির এমন আনাগোনা। জাতীয় সড়কের ধার ঘেঁষে বেশ কয়েকটি চায়ের দোকান রয়েছে। ওই এলাকাতেও বেশ কয়েক বার পাক খায়। দৃশ্যত মনে হচ্ছিল, যেন সকালের চা-জলখাবারটা সেখানেই সারবে। তারপর বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে রাস্তা পার হওয়া, সে দৃশ্যও মোবাইলবন্দি করার মতো বইকি। কয়েক দিন, মাস থেকে শুরু করে দলের প্রবীণ সদস্য, সকলেই রাস্তা পার হচ্ছে।জানা গিয়েছে, অন্তত ৪০টি হাতির একটি পাল এই মুহূর্তে ডায়নার জঙ্গলে রয়েছে। সেগুলিই প্রতিদিন সন্ধ্যায় একবার ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক পেরোচ্ছে, আবার পরদিন ভোরে আরেকবার। উদ্দেশ্য, ওই রুট ধরে লুকসান চা বাগানের সীমান্ত পেরিয়ে ভুটানে প্রবেশ। সেখানকারই বাসিন্দারা বলছেন, প্রতিবেশী দেশের সদ্য পাকা ধানক্ষেত সাবাড় করে তবেই নিজেদের ডেরা ডায়নার জঙ্গলে ফিরছে হাতির পাল। কখনও ভুটানে না গিয়ে লুকসান বাগানের জঙ্গল লাইন লাগোয়া স্থানীয় চাষিদের ধানের জমিতে গিয়েও দাপাদাপি করছে। গত এক মাস ধরে এমনটাই চলছে বলে জানান এলাকার বাসিন্দারা। ডায়নার রেঞ্জার অশেষ পাল বলেন, “হাতির দলের ওপর প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকালে জঙ্গলে ফেরা না পর্যন্ত সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে।”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct