আলম সেখ, কলকাতা, আপনজন: ১৭ অক্টোবর, ১৮১৭ সালে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন শিক্ষা জগতের রত্ন তথা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্ব প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা স্যার সৈয়দ আহমেদ খান। মডার্ন শিক্ষায় মুসলিম সম্প্রদায়কে শিক্ষিত করার ডাক দেওয়াই লাথি, ঝাঁটা খেয়ে, ব্রিটিশদের দালালের উপাধি পাওয়ার সত্ত্বেও থামেননি। যার ফল স্বরূপ দক্ষিণ এশিয়ায় আদুনিক শিক্ষার লক্ষ্যে স্থাপিত হয় আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি। শিক্ষা ব্যবস্থায় তার অবদানকে সম্মানিত করতে তার নামেই শিক্ষায় শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার প্রদান করল কলকাতার মুসলিম ইন্সটিটিউট। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতার মুসলিম ইন্সটিটিউটেই অনুষ্ঠিত হয় স্যার সৈয়দ আহমেদ খানকে নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই মুসলিম ইন্সটিটিউট আয়োজিত স্যার সৈয়দ আহমেদ খান শ্রেষ্ঠত্ব পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হয় মামুন ন্যাশনাল স্কুলের সম্পাদক তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী কাজী মুহাম্মদ ইয়াসিনকে, মিল্লি এডুকেশন অর্গানিজশনের সম্পাদক জিয়াউদ্দিন হায়দারকে ও কলকাতা এডুকেশনাল এন্ড চ্যারিটেবাল ট্রাস্টকে। পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিচারক অসীম কুমার রয়। স্যার সৈয়দ আহমেদ খানের জীবন যাত্রা নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা দেন লোকায়ুক্তর বিচারপতি অসীম কুমার রায। তিনি বলেন আমি যতটুকু ইসলাম জেনেছি সেই মতে কোনও মুসলমান যদি তাকে দেওয়া নির্দেশিকা মেনে চলে তবে তার থেকে সচেতন এবং নিখুঁত কেউ হতে পারবে না যেমনটা ছিলেন স্যার সৈয়দ আহমেদ খান। তিনি স্যার সৈয়দ আহমেদ খানের দেওয়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তাও ব্যাখ্যা করেন। স্যার সৈয়দ আহমেদ খানের আদর্শকে বাস্তবে রূপ দান করার জন্য অনুপ্রাণিত করেন রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতরের বিশেষ সচিব অফিসার সাকিল আহমেদ। স্যার সৈয়দ আহমেদ খানের মুসলিম শিক্ষার লক্ষ এবং উদ্দেশ্য নিয়ে দীর্ঘক্ষণ বক্তব্য রাখেন কলকাতার ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিস-এর পরিচালক অধ্যাপক অচিন চক্রবর্তী। শিক্ষায় শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার প্রাপ্ত মামুন ন্যাশনাল স্কুলের সম্পাদক কাজী মুহাম্মদ ইয়াসিন বক্তৃতা রাখেন কিভাবে তারা “স্যার সৈয়দ আহমেদ খানের চিন্তাভাবনা ও আদর্শকে নিজেদের স্কুলে বাস্তবায়ন করেছেন। স্যার সৈয়দ আহমেদ খান যেরূপ বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা চেয়ে টাকা জোগাড় করে প্রতিষ্ঠান চালিয়েছেন সেই রূপ আমাদের মাদ্রাসার ১৫০০ স্টুডেন্ট যাকাতের টাকায় পড়াশুনা করে। তিনি যেমন মুসলিম সম্প্রদায়কে মডার্ন শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য লাঞ্ছিত হয়েছেন, অপমানিত হয়েছেন তার সত্ত্বেও টিকে থেকেছেন এবং নিজের প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসায় মডার্ন ইংলিশ চালু করেছেন, কলেজ প্রতিষ্ঠিত করেছেন যেই কলেজ দক্ষিণ এশিয়ার সর্ব প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। মামুন ন্যাশনাল স্কুলে একজন হাফেজ ইঞ্জিনিয়ার হয়, কলকাতা ইউনিভার্সিটিতে অঙ্কে ফার্স্ট ক্লাস রেজাল্ট করে। ইসলামের শিক্ষার সাথেই মডার্ন শিক্ষা দিয়ে কিভাবে তারা ছাত্রদের হীরায় রূপান্তরিত করেন তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। দরিদ্র ছাত্রদের ৪০ শতাংশ ফিজ নেওয়া হয় বরে তিনি জানান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এডুকেশন সাব কমিটির চেয়ারম্যান ড: খালিদ এম.ডি সাইফুল্লা, উপস্থিতি থাকেন মুসলিম ইন্সটিটিউটের সভাপতি তথা রাজ্য সভার সাংসদ নাদিমুল হক, মুসলিম ইন্সটিটিউটের সাধারণ সম্পাদক নিসার আহমেদ, সহকারী সাধারণ সম্পাদক নায়েম আনিস, এডুকেশন সাব কমিটির সম্পাদক এম.ডি সামসুস সলেহীন প্রমুখ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct