আপনজন ডেস্ক: কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি মঙ্গলবার বলেছেন, আরএসএস দ্বারা পরিচালিত বিজেপি ভারতীয় সংস্কৃতি, ভাষা এবং ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করছে। তাই মিজোরামের জনগণকে ৭ নভেম্বরের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানান তিনি।মিজোরামের লুংলেইতে এক নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি বলেন, বিজেপি এটাও জানে যে তারা যদি সরাসরি মিজোরামে আসে তবে রাজ্যের জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে এবং এ কারণেই তারা ক্ষমতাসীন মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের (এমএনএফ) মাধ্যমে রাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করছে।বিরোধী দল জোরাম পিপলস মুভমেন্ট (জেডপিএম) বিজেপিকে রাজ্যে প্রবেশে সহায়তা করছে বলে অভিযোগ রাহুল গান্ধির।রাহুল বলেন, ‘আমি আমার ‘মন-কি-বাত’ বলতে কম আগ্রহী, তবে আমি আপনাদের ‘মন-কি-বাত’ শুনতে আগ্রহী। আপনাদের ধর্ম, সংস্কৃতি ও ভাষা ভারতের প্রকৃত সম্পদ। ধর্ম ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য ভারতের ঐতিহ্য, যা বিজেপি ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।কেন্দ্রীয় সরকার আরএসএস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। মোদী, অমিত শাহ এবং কেন্দ্রীয় সরকার ভারতের সমস্ত রাজ্য, সমস্ত প্রতিষ্ঠান এবং জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, আমরা কর্নাটকে বিজেপিকে পরাজিত করেছি। তেলেঙ্গানায় আমরা বিজেপিকে পরাজিত করব। আমরা মধ্যপ্রদেশে বিজেপিকে ধ্বংস করব। ছত্তিশগড়ের নির্বাচনে আমরা বিজেপিকে পরাজিত করব। আমরা গতবার রাজস্থানে বিজেপিকে পরাজিত করেছিলাম এবং এবারও আমরা তাদের পরাজিত করব। এবার আমরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও একই কাজ করার পরিকল্পনা করছি।উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কংগ্রেস নেতা বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সরাসরি ব্যাংকিং সহায়তা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ব্যাপক বেকারত্বের কারণে মাদকের সমস্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, যার ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি ও নোট বাতিল নীতির কারণে মিজোরামের অর্থনীতির অগ্রগতি কঠিন হয়ে পড়েছে।কেরলের ওয়ানাদ কেন্দ্রের লোকসভা সদস্য রাহুল রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার প্রতি ১,০০০ টাকার পরিবর্তে ৭৫০ টাকা ও বয়স্কদের জন্য প্রতি মাসে ২,০০০ টাকা বয়স্ক ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। রাহুল রাজস্থানের ২৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমা, কর্ণাটকে পাঁচটি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প এবং ছত্তিশগড়ে কৃষক বান্ধব এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মিজোরামে আসতে পারাটা সবসময়ই আনন্দের। এটি ১৯৮৬ সালে ১৬ বছর বয়সে প্রথম এখানে আসার পুরানো স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। সে সময় মিজোরাম সহিংসতা থেকে শান্তির দিকে ধাবিত হচ্ছিল। আপনি ১৯৮৭ সালে রাষ্ট্রের মর্যাদা অর্জন করেন। সুতরাং এটি বেশ দীর্ঘ যাত্রা ছিল। যে কোনও অগ্রগতি শান্তি ও সম্প্রীতির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। রাহুল বলেন, মিজোরামে তরুণ প্রজন্মের সহিংসতার কোনও অভিজ্ঞতা নেই, তবে প্রবীণরা সংঘাতের মূল্য জানেন।মিজোরামের অবকাঠামো অত্যন্ত দুর্বল দাবি করে লোকসভার সদস্য বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্যে কংগ্রেস সরকারের আমলে লেংপুই বিমানবন্দর ছিল।রাহুল গান্ধী বলেন, “দেশের প্রতিটি রাজ্যের জন্য কংগ্রেসের একটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে এবং মিজোরাম রাজ্যের জন্যও একই দৃষ্টিভঙ্গি প্রণয়ন করা হবে।প্রতিবেশী মণিপুরে জাতিগত সহিংসতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারী ও শিশুসহ শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, অসংখ্য নারী ধর্ষিত হয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) নীরব ছিলেন এবং পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে জ্বলন্ত অবস্থায়ও রাজ্যে যাওয়া এড়িয়ে গেছেন।রাহুল গান্ধী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব এমন যে মণিপুর ভারতের অংশ নয় এবং তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্কটাপন্ন রাজ্য পরিদর্শনের সময় নেই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct