আপনজন ডেস্ক: গুজরাতের রাজকোটের থোরালা এলাকায় একটি রূপা ও নকল গহনা তৈরির কারখানার মালিক ও কর্মচারীরা রাহুল শেখ (২৫) ও মিনু শেখ (২৬) নামে দুই পরিযায়ী স্বর্ণশিল্পী শ্রমিককে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১২ অক্টোবর ঘটনাটি ঘটেছে এবং তদন্ত এখনও চলছে বলে শনিবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা আইএনএস জানিয়েছে, ভাবনগর রোডে এমবিএস অলংকার নামে একটি গয়না তৈরির কারখানা থেকে ১০০ গ্রাম রূপা চুরি করার চেষ্টা করার সময় পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা রাহুল শেখ নামে এক কারিগরকে আটক করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে শিফট শেষ হওয়ার পর তিনি ইউনিট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন।কারখানার কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ইউনিটের নিরাপত্তা রক্ষী পুষ্পরাজের হাতে রুপোসহ ধরা পড়ার পর রাহুল তাকে বলেন, তিনি চুরি হওয়া রুপো পশ্চিমবঙ্গের সহকর্মী কারিগর মিনু শেখের হাতে তুলে দিচ্ছিলেন। মিনু রাজকোটের আরেকটি গয়না তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। পুলিশ জানিয়েছে, এরপর রাহুলকে জোর করে মিনুকে এমবিএস অলঙ্কার ইউনিটে ডেকে নিয়ে যায়, যেখানে ১৩ জন লোক দুজনকে মারধর করে বলে অভিযোগ।
এ বিষয়ে রাজকোটের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সজনসিং পারমার বলেন, কারখানার নিরাপত্তারক্ষী, তার ভাই, ইউনিটের মালিক, তিন ম্যানেজার এবং একই ইউনিটে কর্মরত আরও আট জন কারিগর পালাক্রমে কাঠের লাঠি এবং ফাইবার পাইপ দিয়ে দুজনকে মারধর করে। পরে শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ওই ইউনিটের প্রথম তলার একটি কক্ষে তাদের তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। শুক্রবার সকাল ৮টা নাগাদ নিরাপত্তারক্ষী ঘরের দরজা খুললে তিনি দেখতে পান যে দু’জন নড়াচড়া করছে না, শেষ পর্যন্ত তারা ১০৮ (জরুরি পরিষেবা) ডায়াল করে এবং অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসা চিকিৎসা কর্মীরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারখানার মালিক সাগর সাভালিয়া, ম্যানেজার বিপুল মোলিয়া এবং কারখানার শ্রমিক হিমালয় ও ধাওয়ালসহ সাতজনকে আটক করা হয়েছে। তন্ময় মাঝি ও প্রদীপ নামে দুই শ্রমিক ঠিকাদার, যাদের মাধ্যমে রাহুলকে এমবিএস অলঙ্কারে রাখা হয়েছিল, তাদেরও মারধরের অভিযোগে আটক করা হয়েছে। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার পারমার বলেন, কারখানার ম্যানেজাররা লক্ষ্য করেন যে তাদের মজুদে তিন কেজি রূপার অসামঞ্জস্য রয়েছে এবং তাই নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের কাজের শিফট শেষ হওয়ার পরে ইউনিট ছেড়ে চলে যাওয়া কারিগরদের চেক করার জন্য অতিরিক্ত সতর্ক থাকতেন। তবে, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার নিহত বাংলার দুই শ্রমিকের কোথায় বাড়ি তা সংবাদমাধ্যমকে বলেননি। উল্লেখ্য, বাংলা থেকে বহু স্বর্ণশিল্পী সোনার কাজে গুজরাতে রয়েছেন। চুরির অপবাদে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তাদেরর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct