আপনজন ডেস্ক: শনিবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ও হাই ভোল্টেজ ম্যাচে মাঠের লড়াইটাও হল একপেশে। অবিশ্বাস্য এক ধসে পড়ে ১৯১ রানেই আটকে যায় পাকিস্তান, ভারত সে লক্ষ্য পেরিয়ে গেছে ৭ উইকেট ও ১৯.৩ ওভার হাতে রেখেই। বিশ্বকাপে দুই দলের লড়াইয়ের ইতিহাসও অবশ্য একপেশেই। আগের ৭ ম্যাচেই জিতেছিল ভারত। আহমেদাবাদের দাপুটে জয় ব্যবধানটাকে করল ৮–০। টানা তিন ম্যাচ জয়ে এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট ভারত এগিয়ে গেল আরও একটু। অন্যদিকে টানা দুটি জয়ের পর বড় ধাক্কা খেল পাকিস্তান। অথচ এ ম্যাচ রোমাঞ্চকর কিছুরই আশা ছিল। একদিকে গত বিশ্বকাপের পর থেকে পাকিস্তানের টপ অর্ডার ও ফাস্ট বোলিং, ফর্মে থাকা মিডল অর্ডার; অন্যদিকে ভারতের হেভিওয়েট ব্যাটিং ও মাঝের ওভারের স্পিন-বিষ। সব কটি দ্বৈরথেই পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বকাপের স্বাগতিকেরা। প্রথম ইনিংসের অনেকটা সময় অবশ্য রোমাঞ্চের আভাসই দিয়েছিল ম্যাচটি, যখন ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান এগোচ্ছিল বেশ ভালোভাবে। ধীরগতির উইকেটে ২৭০-২৮০ রানও হতে পারত লড়াই করার মতো স্কোর। ২৯.৩ ওভারে ২ উইকেটে ১৫৫ রান করে ফেলেছিল টসে হেরে ব্যাটিং করতে নামা পাকিস্তান। অধিনায়ক বাবর আজম করেন প্রথম অর্ধ শতরান, দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ানও এগোচ্ছিলেন অর্ধ শতরানের পথে। এরপর যা ঘটল, সেটিকে কোনো বিশেষণেই ব্যাখ্যা করা কঠিন। ও রকম শক্ত অবস্থান থেকে ৩৬ রান তুলতেই শেষ ৮ উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান, গুটিয়ে যায় ৪২.৫ ওভারের মধ্যেই। ভারতকে এত কম লক্ষ্য দিয়ে আটকানোটা শাহিন শাহ আফ্রিদিদের জন্য বেশ কঠিনই ছিল। এরপর রোহিত শর্মা যেভাবে ব্যাটিং করা শুরু করলেন, সেটিকে আর সম্ভব বলেই মনে হয়নি। ৬টি করে চার ও ছক্কায় ৬৩ বলে ৮৬ রানের ইনিংসে ভারতের রান তাড়ায় নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত নিজেই। তার হিটিং ছিল চোখধাঁধানো। আফ্রিদি, হাসান আলী, হারিস রউফদের বিপক্ষে রোহিতের ব্যাটিংটা যে রকম আক্রমণাত্মক ছিল, তাতে এ ম্যাচ দিয়ে ফেরা শুভমান গিল আর বিরাট কোহলির কম রানে আউট হয়ে যাওয়াও কোনো পার্থক্য গড়তে পারেনি। অবশ্য শাহিন শাহ আফ্রিদির স্লোয়ারে ক্যাচ তুলে নাগালের মধ্যে থাকা বিশ্বকাপের অষ্টম সেঞ্চুরিটি হাতছাড়া করেন রোহিত, ম্যাচে তাঁর একমাত্র আক্ষেপ থাকতে পারে এটা নিয়েই। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে গ্যালারি ভর্তি ভারতীয় সমর্থকদের চাপের মধ্যেও পাকিস্তানের ওপেনাররা শুরুটা করেছিলেন বেশ ভালো। পেসারদের জন্য তেমন কিছুই ছিল না উইকেটে, সে সুযোগে ইমাম-উল-হক ও আবদুল্লাহ শফিক প্রথম ৭ ওভারে মারেন ৭টি বাউন্ডারি। তবে বাবরের আউটের পরই ধসে পড়বে পাকিস্তানের ইনিংস। গত বিশ্বকাপের পর থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট যার, সেই কুলদীপের এক ওভারেই বদলে যায় সব। লাইন ধরে রাখা বলে এলবিডব্লু সৌদ শাকিল, যে উইকেটটা ভারত পায় রিভিউ নিয়ে। সে ওভারেই লেগ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে সুইপ করতে গিয়ে স্টাম্পে বল ডেকে আনেন ইফতিখার আহমেদ। পরের ওভারে যশপ্রীত বুমরা রিজওয়ানকে বোল্ড আউট করায় পাকিস্তান মাথা তুলে আর দাঁড়াতে পারেনি। পাকিস্তানের৪২.৫ ওভারে ১৯১ রান রোহিত শর্মারা করে ফেলেন মাত্র ৩০.৩ ওভারে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct