আপনজন ডেস্ক: আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরই মাঠে গড়াবে বিশ্বকাপের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। এ ম্যাচকে ঘিরে উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। সেই উত্তাপ আরেকটু বাড়িয়ে দিলেন দুই ভারতীয় কিংবদন্তি বীরেন্দর শেহবাগ ও জহির খান। ক্রিকেটভিত্তিক পোর্টাল ক্রিকবাজের হয়ে ভারত-পাকিস্তানের একটি সম্মিলিত একাদশ বানিয়েছেন তারা, যেখানে ভারত-পাকিস্তানের কিংবদন্তি খেলোয়াড়দের মধ্য থেকে নিজেদের পছন্দের একাদশ বেছে নিয়েছেন তাঁরা। তবে তাঁদের নির্বাচিত তালিকা থেকে ছিটকে গেছেন বেশ কিছু বড় নামও। একাদশ নির্বাচনের শুরুতে শেহবাগ বলেন, ‘আমরা আপনাদের জন্য দারুণ একটি একাদশ বানাব। বিশ্বকাপ চলছে এবং বিশ্বকাপের সবচেয়ে মাহাত্ম্যপূর্ণ ম্যাচটি আসছে (ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ)। সেই ম্যাচকে ঘিরে দলটা আমরা বানাব। ভারত-পাকিস্তানের সেরা একাদশ, যেখানে ভারতের কিছু খেলোয়াড় ও পাকিস্তানের কিছু খেলোয়াড় থাকবে। কিন্তু নিয়ম হচ্ছে, আমি ও জহির নিজেদের নাম দেব না। এ ছাড়া বর্তমানে খেলছে, এমন খেলোয়াড়ও এ তালিকায় রাখা হবে না। আমরা সমতা রাখার চেষ্টা করব।’ ওপেনার বাছাই করতে গিয়ে শেহবাগ বলেন, ‘ওপেনার হিসেবে কিছু নাম রাখছি। সাঈদ আনোয়ার, শচীন টেন্ডুলকার, আমির সোহেল, শিখর ধাওয়ান ও সৌরভ গাঙ্গুলী। এরা সবাই ওপেনার। কাকে নিতে চাও?’ জহির খান বলেন, ‘যেসব নাম নেওয়া হয়েছে, সেখানে সবার আগে শচীন আসবে।’ তখন সবার আগে নির্বাচন করা হয় শচীনকে। এরপর শচীনের সঙ্গী হিসেবে লড়াইটা হয় সাঈদ আনোয়ার ও সৌরভ গাঙ্গুলীকে নিয়ে। তবে শেহবাগ-জহির মিলে ভারতের সাবেক অধিনায়ক গাঙ্গুলীকেই নির্বাচন করেন। তিন নম্বরে তাঁদের তালিকায় ছিলেন জাভেদ মিঁয়াদাদ, ইনজামাম-উল-হক, রাহুল দ্রাবিড়, ইউনিস খান, শোয়েব মালিক, মোহাম্মদ ইউসুফ ও যুবরাজ সিং। তবে সবাইকে ছাপিয়ে জায়গা পেয়েছেন ইনজামাম-উল-হক। তাঁকে রাখার ব্যাখ্যায় শেহবাগ বলেছেন, ‘আমি ইনজামামকে এশিয়া, এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে ভালো মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মনে করি। সে আর ব্রায়ান লারা। এ দুজন মিডল অর্ডারকে নিয়ন্ত্রণ করত এবং ম্যাচ জেতাত।’ এরপর চার নম্বরে শেহবাগ-জহির বেছে নেন যুবরাজ সিংকে। মূলত ম্যাচে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে বড় শট ও ইনিংস খেলার দক্ষতার কারণেই যুবরাজকে বেছে নেন তাঁরা। উইকেটকিপার হিসেবে মঈন খান, সরফরাজ রশিদ লতিফ ও মহেন্দ্র সিং ধোনির নাম নেন এই দুজন। তবে কোনো দ্বিধা ছাড়াই ধোনিকে তাঁরা বেছে নেন উইকেটরক্ষক হিসেবে। শেহবাগ বলেছেন, ‘এমন উইকেরক্ষক আর আসেনি, যে কিনা এত বেশি প্রভাব রেখেছে।’
এরপর দুই অলরাউন্ডার হিসেবে কোনো বিবেচনা ছাড়াই নাম দুটি বলে দেন জহির খান—কপিল দেব ও ইমরান খান। ইতিহাস ও পরিসংখ্যান বিবেচনা করলে এখনো তাঁদের কেউ ছাড়িয়ে যেতে পারেননি বলেই বিশ্বাস জহির-শেহবাগের। এরপর স্পিনার হিসেবে তাঁদের বিবেচনায় আসেন হরভজন সিং, সাকলায়েন মোশতাক, মুশতাক আহমেদ ও অনিল কুম্বলে। তবে সবার ওপরে স্পিনার হিসেবে তাঁরা বেছে নেন কুম্বলেকে। তাঁকে রাখার ব্যাখ্যায় জহির খান বলেন, ‘সে অনেক বড় ম্যাচ উইনার ছিল। আর যেকোনো পরিস্থিতিতে তাকে আপনি বল করাতে পারবেন। এমনকি পাওয়ার প্লেতে নতুন বলেও তাকে বিনা দ্বিধায় ব্যবহার করা যায়।’ এরপর তিন পেসার হিসেবে শেহবাগ বেছে নেন ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস ও জাভাগাল শ্রীনাথকে। শেহবাগের সঙ্গে একমত পোষণ করেন জহিরও। এরপর দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে তাঁরা বেছে নেন সাকলায়েনকে। দুসরার কারণেই হরভজনের ওপরে তাঁরা সাকলায়েনকে জায়গা দেন। এরপর শোয়েব আখতারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেহবাগ বলেছেন, ‘শোয়েব আখতার অবশ্যই আমাদের ওপর রাগ করবেন। কারণ, আমরা তাঁকে রাখিনি। কিন্তু আপনারা বলতে পারেন, তাঁকে রাখলে আমরা কোথায় রাখব? আমার মনে হয়নি, তাই রাখিনি। দুঃখিত শোয়েব।’ শেহবাগ-জহিরের সম্মিলিত সেরা একাদশ: শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলী, ইনজামাম-উল-হক, যুবরাজ সিং, মহেন্দ্র সিং ধোনি, ইমরান খান, কপিল দেব, অনিল কুম্বলে, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস ও জাভাগাল শ্রীনাথ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct