সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: মাটি তোলার সরকারি অনুমতি নিয়ে দারকেশ্বর নদ থেকে রীতিমত যন্ত্রের সাহায্যে দেদার বালি তোলার অভিযোগ, ক্ষোভে ফুঁসছে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলির মানুষ। ছিল মাটি কাটার অনুমতি। আর সেই অনুমতি দেখিয়েই রীতিমত পে লোডার লাগিয়ে নদীর পাড় ও পাড় সংলগ্ন নদী বক্ষ থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে বালি। এমন ঘটনায় রীতিমত ক্ষোভে ফুঁসছেন নদী তীরবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। স্থানীয়দের আশঙ্কা এভাবে নদীর পাড় থেকে বালি সরিয়ে ফেলা হলে আগামী বর্ষাতেই বন্যায় ভেসে যাবে বেশ কয়েকটি গ্রাম। ঘটনা বাঁকুড়ার কোতুলপুর ব্লকের ঘোড়াঘাট এলাকায়। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নের মুখে ভূমি দফতর ও প্রশাসনের ভূমিকা।
বর্ষার কারণে নদী বক্ষ থেকে আপাতত বালি উত্তোলন বন্ধ রেখেছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি কোতুলপুর আরামবাগ রাজ্য সড়কের ধারে টোল ট্যাক্স আদায়ের জন্য পূর্ত দফতরের তরফে একটি ভবন নির্মাণের বরাত পায় একটি বেসরকারী ঠিকাদার সংস্থা। সেই ভবনের জন্য প্রয়োজন হয় নীচু জমি ভরাটের। আর সেই ভরাটের কাজ করার জন্য স্থানীয় ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে মাটি কাটার অনুমতি নেয় বরাতপ্রাপ্ত সংস্থাটি। অভিযোগ সেই অনুমতিপত্রকে কাজে লাগিয়েই বরাত পাওয়া ঠিকা সংস্থাটি দারকেশ্বর নদের পাড় ও পাড় সংলগ্ন এলাকা থেকে দেদার বালি উত্তোলন করে তা চড়া দামে বিক্রি করে দিচ্ছে অন্যত্র। এভাবে যন্ত্রের সাহায্যে ট্রাক্টরের পর ট্রাক্টর বালি তুলে ফেলায় দারকেশ্বর নদের পাড়ে থাকা প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট বাঁধ লোপাট হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় মথুরাটপল, গৌড়, রানাহাট সহ নদ তীরবর্তী গ্রামগুলির মানুষ। তাঁদের দাবী পাড় ও পাড় সংলগ্ন এলাকা থেকে অবৈধ ও অবৈজ্ঞানিক ভাবে যেভাবে বালি উত্তোলন করে পাচার করা হচ্ছে তাতে আগামী বর্ষায় দারকেশ্বরের বন্যায় গ্রামগুলি নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়তে পারে। ভূমি সংস্কার দফতরের নাকের ডগায় কীভাবে দিনের পর দিন এমন অবৈধ কাজ চলছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। কোতুলপুর ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক জানিয়েছেন মাটি তোলার অনুমতি নেওয়া থাকলেও নদী বক্ষ থেকে বালি তোলার কোনো অনুমতি ওই ঠিকা সংস্থাকে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct