আপনজন ডেস্ক: ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শনিবার সকালে আকস্মিক অভিযান শুরু করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। তাদের এ অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে দুই হাজারের বেশি লোক। তবে ইহুদিবাদীদের পাল্টা হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন হামাসের যোদ্ধা ও সাধারণ ফিলিস্তিনিরাও। ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামাস এই বিশাল অভিযান শুরুর পরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ হামাসের পক্ষ নিয়েছে। এছাড়া অনেক দেশের সাধারণ মানুষ বিজয় মিছিল করেছেন। হামাসের সবচেয়ে বড় সহায়তাকারী ইরান রক্তক্ষয়ী এ অভিযানকে ‘সাফল্য’ হিসেবে দেখছে। ইরান সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতারা হামাসের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।অপরদিকে এশিয়ার পাওয়ার হাউজ চীন পরোক্ষভাবে ফিলিস্তিন এবং হামাসের পক্ষ নিয়েছে। দেশটি জানিয়েছে, এই সংঘাত বন্ধের একমাত্র উপায় হলো স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
আরব বিশ্বের দেশ তিউনিশিয়ায় হামাসের পক্ষে বিশাল মিছিল হয়েছে। দেশটির হাজার হাজার মানুষ এতে অংশ নেন। এছাড়া তুরস্ক ও লেবাননেও দেখা গেছে একই চিত্র। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী দেশ কাতার সরাসরি ফিলিস্তিনি যোদ্ধা তথা হামাসের পক্ষে কথা বলেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, হামাসের এই হামলার জন্য শুধুমাত্র ইসরায়েল একা দায়ী। কারণ তারা ফিলিস্তিনের ওপর অত্যাচার নির্যাতন ও পবিত্র আল-আকসা মসজিদে হামলা চালিয়ে এই হামলার পথ উন্মুক্ত করেছে। অপরদিকে সৌদিও এই যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলকে দোষারোপ করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা বার বার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, ফিলিস্তিনিদের উপর যে অব্যাহত নির্যাতন চালানো হচ্ছে এবং এরমাধ্যমে যে ক্ষোভ জমা হচ্ছে সেটি বিস্ফোরিত হতে পারে। আর এবার সেই বিস্ফোরণই ঘটেছে।যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ সিরিয়াও হামাসের এই হামলাকে সমর্থন জানিয়েছে। দেশটি বলেছে, হামাসের এই অভিযান একটি ‘বড় অর্জন’ এবং তারা ‘ইহুদি সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে শুরু হওয়া এই লড়াইকে সমর্থন জানায়। এশিয়ার অপর দেশ আফগানিস্তানও সরাসরি হামাসের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দেশটির বর্তমান শাসক তালেবান বলেছে, ‘অত্যাচারিত ফিলিস্তিনিদের অধিকার পদদলিত করার ফলাফল হলো এই হামলা।’ এদিকে দখলদার ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্রেও ফিলিস্তিন ও হামাসের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে মিছিল করেছে অনেকে।বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যেকোনও ধরনের হামলার নিন্দা ও বিরোধিতা করি। ইসরায়েলি সরকারের বিপরীতে এর অর্থ হলো আমরা ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যেকোনও হামলারও বিরোধিতা করি। আমাদের অবশ্যই সেই ভয়ানক ঘটনা (আক্রমণ) এবং চলমান দখলদারিত্বের বিষয়গুলো নিয়ে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে।’ক্যাসিফ আরো বলেন, ‘ইসরায়েল সরকার ফ্যাসিবাদী সরকার। ফিলিস্তিনিদের জাতিগতভাবে নির্মূলকে সমর্থন দিয়ে উৎসাহ এবং নেতৃত্ব দেয়। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন চলছে। ফিলিস্তিনিদের রক্তে এটা স্পষ্টভাবে দেয়ালে লেখা আছে। দুর্ভাগ্যবশত এখন ইসরায়েলিদেরও একই দশা হতে চলেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct