নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা: দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নামখানা ব্লকের আবাস যোজনার তালিকায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে জেলাশাসককে তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। নামখানা ব্লকের বাসিন্দা স্নেহাশিষ গিরি আবাস দুর্নীতি নিয়ে হাইকোটে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন। শুধুমাত্র নামখানা পঞ্চায়েত ও হরিপুর পঞ্চায়েত এলাকার ৪৯ জনের একটি তালিকা তিনি আদালতকে দেন। যে তালিকায় সরকারি চাকরিজীবী ও পাকা বাড়ির মালিকরা আবাস যোজনার টাকা পেয়েছেন, এমন নথি জমা দিয়েছেন। সেই মামলার প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে জেলাশাসককে তদন্ত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছেন। ৪৯ জনের তালিকায় নাম আছে নামখানা পঞ্চায়েতের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী শিবনগর আবাদের বাসিন্দা সন্তোষ ওঝা। বর্তমানে পেনশন প্রাপক। পাকা দোতলা বাড়ি তাঁর। তিনিও তিন দফায় ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছেন। তবে কোনো বাড়ি করেন নি।
একই ছবি ধরা পড়ল পড়শি শ্রীহরি প্রামাণিকের ক্ষেত্রেও। তিনি বনদপ্তরের প্রাক্তণ কর্মী। শ্রীহরি ও তাঁর ছেলে অরুণ প্রামাণিকের নামে আবাস যোজনায় তোলা হয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার করে টাকা। প্রামাণিক পরিবারও বাড়ি করেনি।
সবক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে সরকারি ওয়েবসাইটে বাড়ি তৈরীর ছবি দেওয়া আছে। তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি শ্রীমন্ত মালি হাইকোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে সরকারি কর্মীদের দিকেই দায় ঠেলেছেন। প্রশাসন যথাযথ তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে বলে তাঁর আশ্বাস।তবে আবাসে দুর্নীতি নিয়ে নামখানা যুবক স্নেহাসিস গিরি হাইকোর্টের যে তথ্য দিয়েছেন তা দেখে বিচারকের চোখ ছানাবড়া অবস্থা। মামলাকারী বলছেন আরো দুর্নীতি রয়েছে। তবে কি দুর্নীতি অতল গভীরে লুকিয়ে? সেই প্রশ্নটাই ঘুরছে আমজনতার মধ্যে। একদিকে যখন আবাস যোজনার টাকা ও ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বে দিল্লিতে ধরনা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তখন হাইকোর্টের এই নির্দেশ অনেকটাই প্রাসঙ্গিক মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct