আপনজন ডেস্ক: উত্তর চব্বিশ পরগনার কামদুনিতে ২১ বছর বয়সী এক কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। যদিও বারাসাতের একটি আদালত ২০১৩ সালের ৭ জুন পরীক্ষা শেষে বৃষ্টির দিনে বাড়ি ফেরার সময় এই ঘটনার জন্য তিন অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল।
রাজ্য সরকার হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আদেশ শুনে আদালত প্রাঙ্গণে অচেতন হয়ে পড়েন নিহতের ভাই।
২০১৬ সালে আমিন আলী, সাইফুল আলী ও আনসার আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ইমানুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম ও ভোলানাথ নস্করকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় নিম্ন আদালত। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ আমিন আলীকে বেকসুর খালাস দেয় এবং সাইফুল ও আনসারের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে স্বাভাবিক জীবনের শেষ পর্যন্ত কারাদণ্ড দেয়।
আদালত গণধর্ষণের অভিযোগ থেকে ইমানুল, আমিনুল ও ভোলানাথ নস্করকে বেকসুর খালাস দিয়ে ফৌজদারি ষড়যন্ত্র ও সাক্ষ্য-প্রমাণ উধাও করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে।
গ্রেফতারের পর থেকে এই তিনজন ইতিমধ্যে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাবন্দি এবং দোষী সাব্যস্ত হওয়ার জন্য সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে উল্লেখ করে আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে তাদের প্রত্যেককে ১০,০০০ টাকা জরিমানা প্রদানের পরে মুক্তি দেওয়া হবে, যার মধ্যে তাদের আরও তিন মাসের সাধারণ কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
হাইকোর্টের আদেশের পর ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। নির্যাতিতার দুই ভাইয়ের একজন বলেন, ‘আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত, কারণ তিন অভিযুক্তকে আদালত বেকসুর খালাস করে দিয়েছে।
অন্যদিকে, ধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডের পরে প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মৌসুমী কয়াল ও টুম্পা কয়াল। তারই ছিলেন আন্দোলনের মুখ। শুক্রবার রায় ঘোষণার পরে দুজনেই কার্নায ভেঙে পড়েন। মৌসুমী কয়াল বলেন, আমরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাব। প্রয়োজনে নির্ভয়া-কাণ্ডের আইনজীবীর সাহায্য নেব। অামার চাই নির্ভয়া কাণ্ডের মতো কামদুনি কাণ্ডেও দোষীদের যাবজ্জীবন নয়, ফাঁসি হোক।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct