আপনজন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রের তহবিল আটকে রাখার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস রাজভবন অভিযান করে। পদযাত্রা করে রাজভবনের নর্থ গেটের কাছে ধর্নায় বসেন অভিষেক। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ না থাকায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যপাল তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা না করা পর্যন্ত রাজ্যপালের বাসভবনের বাইরে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়া হবে। তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে। তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, তিনি রাতেও বিক্ষোভস্থলে উপস্থিত থাকবেন। তবে রাত ৯টা থেকে ১৪ ঘণ্টার মধ্যে কোনও স্লোগান বা লাউডস্পিকার ব্যবহার করা হবে না।ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ জোর দিয়ে বলেন, কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসাবে রাজ্যপালের উচিত পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে ব্যাখ্যা দেওয়া। আমরা গভর্নরের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তিনি আমাদের কোনও সুযোগ দেননি। তিনি উত্তরবঙ্গে চলে গেছেন। মনে হচ্ছে যেন তিনি আমাদের দিনমজুর বলে মনে করেন। আজ, আমরা এখানে এসেছি এবং তিনি আমাদের সাথে দেখা না করা পর্যন্ত আমরা এই বিক্ষোভ শেষ করব না। আজ রাত ৯টা পর্যন্ত আমাদের অবস্থান ধর্মঘট চলবে ও শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে আবার শুরু হবে। অভিষেক আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন, বাংলার রাজ্যপালের কাছ থেকে আমাদের দুটি ব্যাখ্যা চাওয়ার আছে। প্রথমত, বাংলার ২০ লক্ষ শ্রমিক এমজিএনআরইজিএ-র আওতায় কাজ করেছেন কি না? দ্বিতীয়ত, যদি থাকে, তাহলে গত দুই বছর ধরে তাঁদের মজুরি আটকে রাখার আইনি ভিত্তি কী? আমরা রাজভবনের বাইরে আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চালিয়ে যাব। তিনি বলেন, মাননীয় গভর্নর আমাদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা না করা পর্যন্ত এবং এই দুটি প্রশ্নের উত্তর না দেওয়া পর্যন্ত আমি এখানেই থাকব এবং এক ইঞ্চিও নড়ব না।
তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, দলীয় নেতা ও জব কার্ডধারীদের সমন্বয়ে গঠিত ২৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রাজভবনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করবেন। তারা “বঞ্চিত” এমজিএনআরইজিএ জব কার্ডধারীদের কাছ থেকে ৫০ লক্ষেরও বেশি চিঠি বাইরে মোতায়েন পুলিশ বা প্রশাসনিক কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেবে। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীরা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের এমজিএনআরইজিএ বকেয়া আটকে দেওয়ার প্রতিবাদে মিছিল করে রাজভবনের দিকে যান। দলীয় কর্মীরা রাজ্যপালের বাসভবনের সামনে পৌঁছলেও ততক্ষণে তিনি উত্তরবঙ্গে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে চলে যান। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ই-মেইল করে রাজ্যপালের পক্ষ থেকে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে শিলিগুড়িতে দেখা করতে বলা হয়। অথচ তিনি জানতে পারেন বিকেল চারটে পর্যন্ত শিলিগুড়িতে থাকবেন রাজ্যপাল। মাত্র দু থেকে তিন ঘন্টার মধ্যে কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে যাওয়া কি করে সম্ভব, তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন।উল্লেখ্য, এমজিএনআরইজিএ প্রকল্পের বকেয়া পরিশোধে বিলম্বের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করার লক্ষ্যে ও আবাস যোজনার টাকা আদায়ের দাবিতে নয়াদিল্লিতে দলের দুই দিনের প্রতিবাদ কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছিল। এরপর কৃষি ভবনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্যে যান। কিন্তুপ্রায় দেড় ঘণ্টা পরে তৃণমূল নেতারা দাবি করেন মন্ত্রী তাদের সাথে দেখা করতে অস্বীকার করেন এবং বলেন যে তিনি পাঁচজনের বেশি প্রতিনিধির সাথে দেখা করবেন না। এরপর কৃষি ভবনে ধর্নায় বসলে দিল্লি পুলিশ তাদেরকে হেনস্থা করে। তার প্রতিবাদে বুধবার অভিষেক ঘোষণা করেন, এবার রাজভবন অবিযান করা হবে বৃহস্পতিবার। সেই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে রাজভবনে অভিযান রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct