আপনজন ডেস্ক: দিল্লি পুলিশের হাতে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘বর্বর আচরণ’ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দল শিগগিরইরাজধানী দিল্লিতে বড় ধরনের আন্দোলন শুরু করবে।তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দলের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বসুর সঙ্গে দেখা করবে এবং রাজ্যের বকেয়া বকেয়া আটকে রাখার বিষয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেবে। কেন্দ্রীয় সরকার ও তার মন্ত্রীরা জমিদারদের মতো আচরণ করছেন। গতকাল এত ঘন্টা অপেক্ষা করার পরেও গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। পুলিশ আমাদের কৃষি ভবন থেকে টেনে বের করে নিয়ে যায়। শহরে ফেরার পর বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, “এটা বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজির নতুন ভারত।তিনি বলেন, ‘কয়েক মাস অপেক্ষা করুন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা নয়াদিল্লিতে আরও বড় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করব।দিল্লিতে যা ঘটেছিল তা ছিল ট্রেলার, সিনেমা দেখাবেন মমতা দুই মাস পর ব্যানার্জি। এর জন্য অপেক্ষা করুন। মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে রাজপথে পদযাত্রা করবেন বাংলার প্রায় ১ লক্ষ মানুষ। ইডি-র সমনের কথা উল্লেখ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ইডি ও সিবিআই-এর অভিযানের মাধ্যমে বিজেপি বিরোধী নেতাদের টার্গেট করছে। তবে, দিল্লিতে বাংলার বকেয়া আদায়ের দাবিতে কৃষি ভবনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি তৃণমূল প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা না করায় এবং তৃণমূল নেৃতত্বকে পুলিশি হেনস্থার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার তৃণমূল অভিযোগ করেছে, কৃষি ভবন থেকে তৃণমূল নেতাদের হেনস্থা করে আটকের প্রায় ৩ ঘণ্টা পর ছাড়া পান অভিষেকরা। অভিযোগ, তৃণমূলের প্রতিটি মহিলা সাংসদকে ২৫ জনেরও বেশি সদস্য লাঞ্ছিত ও লাঞ্ছিত করেছে দিল্লি পুলিশ। ভিডিওতে সেই চিত্র ধরা পড়েছে। ছবি মিথ্যে বলে অতিরঞ্জিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আরও অভিযোগ, মহুয়া মৈত্র, বীরবাহা হাঁসদা, প্রতিমা মণ্ডল, দোলা সেন, শান্তনু সেন, সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, সামিরুল ইসলাম প্রমুখকে মারধর করা হয়। তারা প্রসূন বন্দোপাধ্যায়কে নির্যাতন করে এবং মহিলা সাংসদদের চুল ধরে টেনে নিয়ে যায়। অভিষেক দিল্লির পুলিশ লাইন থেকে বেরিয়ে বলেছিলেনম ‘আজ ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য একটি অন্ধকার দিন।’ এরপরই অভিষেক দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতায় ‘রাজভবন চলো’ মিছিলের ডাক দেন। তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড বলেন, ‘দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদে ৫ অক্টোবর রাজভবন চলো অভিযানের ডাক দিচ্ছি। কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে গণতন্ত্র সম্পর্কে যারা বাংলায় সকাল বিকেল জ্ঞান দিচ্ছেন, যেভাবে দিল্লির বুকে গণতন্ত্র ভুলুণ্ঠিত হয়েছে, তাতে রাজ্যপালের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারকেই চিঠি লেখা। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাইব। যে ৫০ লক্ষ চিঠি দিল্লি নিয়ে এসেছিলাম। সেই সমস্ত চিঠি নিয়ে রাজভবনে যাব। আরও বলা হয়েছে, গভর্নর গণতন্ত্র নিয়ে অনেক কথা বলেন। এই কারণেই আমরা আশা করি তিনি গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবেন। কারণ আমরা গতকাল দিল্লির রাস্তায় গণতন্ত্রের উপর নৃশংসতা দেখেছি এবং এমজিএনআরইজিএ সুবিধাভোগীদের দিল্লি পুলিশ হেনস্থা করেছে। এই কারণেই আমরা রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছি। যদি তিনি আমাদের সাথে দেখা করতে অস্বীকার করেন তবে আমরা সেখান থেকে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ ঘোষণা করব। বিকেল ৩টে নাগাদ রবীন্দ্র সদনে মানুষ জড়ো হয়ে যাবে। আমরা প্রতিবাদ মিছিল করব। যেহেতু সবাই রাজভবনে যেতে পারবেন না, তাই ৪০ বা ৫০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চিঠি নিয়ে রাজভবনে যাবে। আমরা আজ রাতের মধ্যে প্রতিনিধি দলের নাম নির্ধারণ করব। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা গভর্নরের কাছে কিছু সময় চাইবেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct