আপনজন ডেস্ক: মিসরে পবিত্র কুরআনের সবচেয়ে পুরনো একটি পাণ্ডুলিপির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে হিজরি প্রথম শতাব্দীতে (সপ্তম খ্রিস্টাব্দ) লেখা বিশ্বের প্রাচীনতম পাণ্ডুলিপি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। মিসরের ফুসতাত নগরীতে ন্যাশনাল লাইব্রেরি অ্যান্ড আর্কাইভস বিভাগ কুরআনের প্রাচীন পাণ্ডুলিপি পুনরুদ্ধার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই আয়োজন করে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর দেশটির সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ড. নেভিন আল-কিলানির সভাপতিত্বে অধ্যাপক ড. উসামা তালাতের তত্ত্বাবধানে ‘ঐতিহ্য সংরক্ষণে নতুন প্রজন্ম’ শীর্ষক এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। জানা যায়, পবিত্র কুরআনের প্রাচীন এই পাণ্ডুলিপিতে ৩২ পৃষ্ঠা রয়েছে, যা চামড়ার ওপর লেখা হয়েছে। প্রথমে তা মিসরের প্রাচীন মসজিদ জামে আমর ইবনুল আস (রা.)-এ সংরক্ষিত ছিল। এরপর ১৯১১ সালে পাণ্ডুলিপিটি উদ্ধার করে ফুসতাতে জাতীয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষণ করা হয়। ইসলামের প্রাথমিক যুগে প্রচলিত হিজাজি লিপিতে এই পাণ্ডুলিপি লেখা হয়েছে। বিভিন্ন শিলালিপি, সমাধি ও প্যাপিরাসে এ ধরনের লিপিশৈলীর দেখা মেলে, যা থেকে এর তারিখ অনুমান করা হয়।
ন্যাশনাল লাইব্রেরির পরিচালক ড. উসামা তালাত বলেন, ‘আজ আমরা হিজাজি মাসহাফ পুনরুদ্ধার কার্যক্রম উদযাপন করছি। এটি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ মাসহাগুলোর একটি। হিজরি প্রথম শতাব্দী তথা সপ্তম খ্রিস্টাব্দে তা লেখা হয়েছিল।বৈজ্ঞানিক ও শৈল্পিক গবেষণার ভিত্তিতে এ কথা বলা যায়, এটি ওই শতাব্দীর প্রথম ধাপে লেখা হয়েছিল। এর মাধ্যমে সব যুগে লিখিতভাবে কুরআন সংরক্ষণের গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়।’ মিসরের পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রণালয়ের পুরাকীর্তি পরিদর্শক মালাক নাসহি বলেন, পবিত্র কুরআনের এই কপিটি ‘মাসহাফ আল-হিজাজি’ নামে পরিচিত। কারণ তা খত্তে হিজাজি বা হিজাজি লিপিতে লেখা হয়েছে।এই লিপিটি কুফি লিপির চেয়ে অনেক পুরনো। হিজরি প্রথম শতাব্দীতে এই লিপির প্রচলন ছিল। তাই এটি ইসলামী সভ্যতার প্রাচীনতম লিপিশৈলীর অন্যতম। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অ্যান্ড আর্কাইভসে প্রাচীন নথিপত্র, পাণ্ডুলিপিসহ পবিত্র কুরআনের প্রাচীন কপি সংরক্ষিত রয়েছে। এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অভিজ্ঞ শিল্পীরা পাণ্ডুলিপি পুনরুদ্ধারে কাজ করেন। মালাক নাসহি আরো বলেন, পবিত্র কুরআনের প্রাচীন এই পাণ্ডুলিপি মহানবী (সা.)-এর সাহাবিদের যুগে লেখা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এটি মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের দুর্লভ পাণ্ডুলিপিগুলোর অন্যতম। চামড়ার ওপর লেখা এই পাণ্ডুলিপিতে ৩২টি পৃষ্ঠা রয়েছে। এটি লোহার কালি দিয়ে পার্চমেন্টে লেখা হয়েছিল। অতঃপর তা খুবই সুন্দরভাবে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct