এম মেহেদী সানি, হাড়োয়া: পশ্চিমবাংলায় সংখ্যালঘু শিক্ষার বিকাশে বিভিন্ন মিশনারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক বড় ভূমিকা রয়েছে। মূলত আশির দশক থেকে সংখ্যালঘু সমাজে শিক্ষার সেই নবজাগরণের শুরু হয়। এই কয়েক দশকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় গড়ে উঠেছে একের পর এক সংখ্যালঘু পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আর এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য হয়ে উঠেছে আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ইসলামি শিক্ষার পাঠ দেওয়া। সেই সমস্ত প্রথম শ্রেণীর আবাসিক সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাড়োয়া থানার মল্লিকপুরে ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত “হাশিমিয়া ইন্টারন্যাশনাল একাডেমী” (উঃ মাঃ)। বেশ কয়েক বছর ধরে মূলত পিছিয়ে পড়া মুসলিম ছাত্রদের সামগ্রিক মানোন্নয়নে দাপটের সঙ্গে কাজ করে দৃষ্টি আকর্ষণ করে চলেছে এই মিশন। জানা গিয়েছে, ইসলামিক মূল্যবোধের আদর্শ প্রচার, প্রসার ও বিকাশের স্বার্থে যুগোপযোগী মর্ডাণ টেকনোলজি ও মর্ডাণ এডুকেশন বিস্তারে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, জাতি ও দেশকে নৈতিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ আদর্শ মানুষ উপহার দিতে হাশিমিয়া ইন্টারন্যাশনাল একাডেমীর শিক্ষাদান পদ্ধতি একেবারেই ব্যতিক্রমী।
পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সিলেবাস অনুযায়ী সম্পূর্ণ ইসলামিক পরীমন্ডলে আবাসিক ভাবে যেমন পাঠ দান করা হয় ঠিক তেমনভাবেই, যে সমস্ত ছাত্রদের বয়স ১০বছরের উর্দ্ধে, তাদের হাফেজী পড়ার সাথে সাথে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সিলেবাস অনুযায়ী ভর্তি করিয়ে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পাশ করানো হয়। ছাত্ররা যাতে ভবিষ্যতে ডাক্তার, অধ্যাপক, আইনবিদ, প্রশাসক পদে অধিষ্ঠিত হয়ে নিষ্ঠার সাথে দেশ ও দশের সেবায় নিবেদিত প্রাণ হতে পারে, এমনই মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই এই কোর্সের সূচনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাডেমীর সুপারইন্টেনডেন্ট মুফাস্বির হোসেন। তিনি আরও বলেন, এখানে নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির NEET ফাউন্ডার কোর্সের উপযুক্ত ব্যবস্থা রয়েছে। শাহীন গ্রুপ অফ ইনস্টিটিউশনস (বিদার, কর্ণাটক) এর তত্ত্বাবধানে NEET কোচিং সেন্টার হাশিমিয়া’স শাহীন অ্যাকাডেমীর তত্ত্বাবধানে প্রথম বছরেই বেনজির সাফল্য পেয়েছে একাডেমীর শিক্ষার্থীরা।
হাশিমিয়া ইন্টারন্যাশনাল একাডেমীর সভাপতি রওশন জামির নূরী ও সম্পাদক আকবর আলির তত্ত্বাবধানে ইহলৌকিক ও পরলৌকিক শিক্ষাদানে সদা-সর্বদা নিবেদিত প্রাণ একাডেমীর পঠন পাঠন ব্যবস্থা। দক্ষ যোদ্ধার মতো প্রতিনিয়ত সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী। পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘু সমাজ সহ সমগ্র সমাজের কল্যাণে ছাত্রদের সেবামূলক কাজকর্মে যেমনি উৎসাহিত করা হয় তেমনই মিশনের পক্ষ থেকে গরীব, দুঃস্থ, মেধাবী ছাত্রদের বিনা খরচে শিক্ষাদানের সুব্যবস্থা রয়েছে। মূলত নিম্ন ও মধ্য মেধা সম্পন্ন ছাত্রদের নিয়ে সেরার সেরা হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই এক দশক ধরে কাজ করে চলেছে হাশিমিয়া ইন্টারন্যাশনাল একাডেমী। একাডেমী নির্দিষ্ট সূচি অনুযায়ী আবাসিক ছাত্রদের নিয়মমাফিক পড়াশোনা, ধর্মচর্চা, শরীরচর্চা, খাওয়া-দাওয়া, শিক্ষামূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শিক্ষার্থীদের পারদর্শী করে তুলতে সহায়তা করছে। একাডেমির লাইব্রেরী, কম্পিউটার ল্যাব, প্রশস্ত মসজিদ আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ইসলামি শিক্ষার পীঠস্থান হিসেবে আগামীতে দেশের মানচিত্রে হাশিমিয়া ইন্টারন্যাশনাল একাডেমী বিশেষ স্থান করে নেবে বলে মনে করছেন শিক্ষানুরাগীরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct