সাদ্দাম হোসেন, জলপাইগুড়ি: জলকষ্টে ভুগছে গোটা গ্রাম অথচ জল প্রকল্পে জলের ট্যাঙ্ক নিজের বাড়িতেই বসানোর অভিযোগ তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে। সরকারি প্রকল্প নিজের বাড়িতে বসানোকে ঘিরে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। প্রধানের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ওই অঞ্চলেরই প্রাক্তন প্রধান তথা খোদ তৃণমূল নেতা খয়বর রহমান। ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীরা লিখিত আকারে গণস্বাক্ষর দিয়ে অভিযোগ জানালেন জলসম্পদ দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে। জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের মাগুরমাড়ী ২ নং গ্রাম পঞ্চয়েতের ঘটনা। ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়।
অভিযোগ, মাগুরমাড়ী ২নং অঞ্চলের ময়নাতলি এবং ভেমটিয়া গ্রামের প্রায় ১৫০০ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে জলকষ্টে ভুগছেন। তাই প্রায় দু’বছর আগে জলসম্পদ মন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছিলেন যে গ্রামে জলের ব্যবস্থা করা হোক। সেই দাবীকে মান্যতা দিয়ে ‘জল স্বপ্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে দুই গ্রামে জল পৌঁছানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। সরকারি ভাবে জলের ট্যাঙ্ক বসানোর জন্য একটা জায়গাকে চিহ্নিত করাও হয় ও নিয়মমাফিক কাজ শুরু হওয়ায় কথা কিন্তু আচমকাই প্রধান ব্যক্তিগতভাবে সকলের অজান্তে নিজের বাড়িতেই সেই প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। আর এই চাউর হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ তৃণমূলেরই একাংশ, অভিযোগ জলের ট্যাঙ্ক যার জমিতে বসানো হবে সেই পরিবারের দুজন চাকরি পাবে। এলাকার তৃণমূল নেতারা অভিযোগ করেছেন, দু’জনের চাকরির লোভেই জল প্রকল্পকে নিজের বাড়িতে নিয়ে এসেছেন তৃণমূল প্রধান।
সেই গ্রামের বাসিন্দা অম্বিকা রায়, নূর আলমরা বলেন, আমাদের গ্রামে এমনি জলের কষ্ট, তারমধ্যে গ্রামে জলের যে ট্যাঙ্ক হওয়ার কথা ছিল সেই ট্যাঙ্ক সড়িয়ে নিয়ে গিয়ে প্রধান নিজের বাড়িতে বসাচ্ছেন। এতে আরও বেশি সমস্যা বাড়বে আমাদের এলাকায়। আমরা চাই যেখানে ট্যাঙ্ক করার জন্য যে জায়গা ঠিক করা হয়েছে সেখানেই করা হোক। প্রাক্তন প্রধান তথা তৃণমূল নেতা খয়বর রহমান বলেন, আমাদের গ্রামের মানুষ এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ। সকলে গণ আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। গণ ডেপুটেশন দিয়েছেন পিএইচই দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে। প্রধান বেআইনিভাবে নিজের স্বার্থে ১৫০০ পরিবারের পানীয় জলের সমস্যার কথা না ভেবে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করার জন্য নিজের বাড়িতে সরকারি প্রকল্পের জলের ট্যাঙ্ক বসাচ্ছেন। চাকরির লোভেই করছেন সবকিছু। জল স্বপ্ন প্রকল্পের আওতায় জল পৌঁছানোর কাজ চলছে গ্রামে গ্রামে।তবে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মাগুরমারী ২নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সীমা রায়। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এসব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। পিএইচির তরফে বেশ কয়েকটি জায়গা দেখে গিয়েছে। তার মধ্যে আমাদের এখানকারও জায়গা রয়েছে, তবে এখনও ঠিক হয়নি কোথার বসানো হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct