সমাজ - জীবনে যখন বিশৃঙ্খলা উত্তঙ্গ , বিচ্ছিন্নতার প্রেতনৃত্যে চারিদিকে আচ্ছন্ন, পরিবেশ যেখানে বিষাক্ত ও কলুষিত, অজ্ঞানতার তামসিকতায় মানুষ যখন নিদ্রাচ্ছন্ন , অর্থাৎ জীবনের সর্বত্রই যখন অবক্ষয় -- ঠিক এইরূপ মনুষ্যত্ব বিবর্জিত সমাজে মানবতার মুক্তির চিরন্তন সওগাত হযরত মুহাম্মদ সা. প্রতিষ্ঠিত করেছেন মানবাধিকার, ফিরিয়ে দিয়েছেন মানুষের শান্তি, স্তব্ধ করেছেন নির্যাতিত - নিপীড়িত মানুষের আহাজারি। লিখেছেন এম ওয়াহেদুর রহমান।
সমাজ - জীবনে যখন বিশৃঙ্খলা উত্তঙ্গ , বিচ্ছিন্নতার প্রেতনৃত্যে চারিদিকে আচ্ছন্ন, পরিবেশ যেখানে বিষাক্ত ও কলুষিত, অজ্ঞানতার তামসিকতায় মানুষ যখন নিদ্রাচ্ছন্ন , অর্থাৎ জীবনের সর্বত্রই যখন অবক্ষয় -- ঠিক এইরুপ মনুষ্যত্ব বিবর্জিত সমাজে মানবতার মুক্তির চিরন্তন সওগাত হযরত মুহাম্মদ সা. প্রতিষ্ঠিত করেছেন মানবাধিকার, ফিরিয়ে দিয়েছেন মানুষের শান্তি, স্তব্ধ করেছেন নির্যাতিত - নিপীড়িত মানুষের আহাজারি। যাঁর বাণী ছিল , “ The strong and the weak, the big and the small are equal in the eye of law .” বিশ্বের সকল ধর্মের মানুষের প্রতি তাঁর নিদারুণ সমত্ববোধ ভালোবাসা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। মানব প্রেমের এমন নজির সহসাই মেলে না। তিনি যে বিশ্ব নিখিলের শ্রেষ্ঠতম মহাপুরুষ- মহামানব , এটা কেবল পবিত্র মহাগ্ৰন্থ কোরআন, হাদীস তথা ইসলামী মানষিকতারই বহিঃ:প্রকাশ নয়, বরং বর্তমান বিশ্বের বরেণ্য জ্ঞানী - গুনী মহৎ ব্যক্তিরাও তাঁর ধ্যান ,জ্ঞান , চিন্তা আর কর্মের শ্রেষ্ঠত্ব একবাক্যে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তাঁরা হযরত মুহাম্মদ সা.এর জীবনের প্রতিটি বিষয়ের উপর সুক্ষ বিচার বিশ্লেষণ তথা সম্যক পর্যালোচনা করে হযরত মুহাম্মদ সা. এর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন। তিনি একজন জয়গুরু। হযরত মুহাম্মদ সা. ছিলেন শান্তির প্রতীক। পবিত্র কোরআনের সূরা আম্বিয়ায় বলা হয়েছে , “আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমতরুপে প্রেরণ করেছি।” তিনি ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের সূরা কালামে বলেছেন , “ আপনি উত্তম চরিত্রের অধিকারী।”
জর্জ বার্নাড’শ হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) এর আচার আচরণে মুগ্ধ হয়ে বলেছেন, “ If all the world was united under the one leader than Mohammad (sm ) would have been the best fitted man to lead the peoples
of verious creeds, dogmas and ideoms to peace and happiness.” নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছেন, “ মুহাম্মদ সা.আরব বাসীদের ঐক্যের সবক দিয়েছেন। তাদের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব - কলহ নিরসন করেছেন। অল্প কিছুদিনের ভেতর তাঁর অনুসারী উম্মত বিশ্বের অর্ধেকেরও চেয়ে বেশি অংশ জয় করে ফেলে। পনেরো বছর সময়ের মধ্যে আরবদের লোকেরা প্রতিমা এবং মিথ্যা দেবতাদের পূজা থেকে তওবা করে ফেললো। মাটির প্রতিমা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হলো।এ বিস্ময়কর সাফল্য মুহাম্মদ সা.এর শিক্ষা ও তার আমল করার কারণেই সূচিত হয়েছে।” প্রফেসর সাধু টি এল বাম্বনী বলেছেন, “ দুনিয়ার অন্যতম মহৎ বীর হিসেবে মুহাম্মদ ( সাঃ)কে আমি অভিবাদন জানাই। মুহাম্মদ সা.এক বিশ্ব শক্তি, মানব জাতির উন্নয়নের মহানুভব শক্তি।” লিও টলস্টয় বলেছেন , “ মুহাম্মদ সা.এর কর্মপদ্ধতি ছিল মানব চরিত্রের বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত। আর একথা বিশ্বাস করতে আমারা বাধ্য যে হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ)এর শিক্ষা ও আদর্শ ছিল একান্ত বাস্তব ভিত্তিক।” জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী বলেছেন, “ প্রতীচ্য যখন গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত, প্রাচ্যের আকাশে তখন উদিত হলো এক উজ্জ্বল নক্ষত্র এবং আর্ত পৃথিবীকে তা দিলো আলো ও স্বস্তি। ইসলাম একটি সত্য এবং ন্যায়ের ধর্ম। শ্রদ্ধার সঙ্গে হিন্দুরা তা অধ্যায়ন করুক এবং আমার মতোই ইসলামকে ভালোবাসুক। “ এডার্মিংহাম বলেছেন, “ আরবরা ছিল উচ্ছশৃঙ্খল ও বিভেদ প্রিয়। মুহাম্মদ সা. তাদের ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে দু:সাধ্য এক অলৌকিক কাজ করেছেন। নি: সন্দেহে পৃথিবীতে কোনো ধর্মীয় পথ এমন ভাবে প্রর্দশিত হয় নি ; যা মুহাম্মদ সা.এর মতো বিশ্বস্ত অনুসারী মিলেছে। মুহাম্মদ সা.এর শিক্ষা ও আদর্শ আরবদের জীবনধারা বদলে দিয়েছিল। একথা কে অস্বীকার করতে পারে? “ড্রেপারের ভাষায় , “The man who all men has exercised the greatest influence upon the human race .” গীবন বলেছেন, “ One of the most memorable revolutions which impressed A new and lasting character on the nation of the globe. “ মহিশুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কে এস রামকৃষ্ণ ১৯৭৯ সালে হযরত মুহাম্মদ সা.এর বিশ্বজনীন আদর্শের প্রতি অভীভূত হয়ে “Muhammad - The profet of Islam “ নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। তাঁর মতে , “ পৃথিবীর একজন সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতে হলে বিশ্বের মানবজাতি কে প্রভাবিত করা ধর্ম আর দর্শন অধ্যায়ন করা অপরিহার্য , যে প্রতিবেশী, অন্য ধর্মের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্কের সৃষ্টি করে।” ১৯৭৮ সালে মাইকেল এইচ হার্ট “ The Hundred “ নামের একটি বই প্রকাশ করেন। এই বই টিতে যুগ যুগান্তরের ইতিহাসের একশো জন ব্যক্তির জীবন তথা ধর্ম সম্পর্কে তিনি উল্লেখ করেছেন। কিন্ত তিনি আইজ্যাক নিউটন, অশোক,অ্যারিস্টটল, গৌতম বুদ্ধ,যীশু, হিটলার,প্লেটো, মহাত্মা গান্ধী সহ বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তিদের মধ্যে হযরত মুহাম্মদ সা.কে প্রথম স্থান দিয়েছেন। তিনি বলেছেন , “O Muhammad unlike Jesus was secular as well as religious leader ...... He may will rank as the most influential political leader of all times.It is the unparalleled combination on secular and religious influence which I entitle Muhammad to be considered most influerrtial single person in human history.” স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন , “ আমার দৃষ্টিতে মহানবী ( সা:) হচ্ছেন-- সেই মহাপুরুষ যিনি বিশ্বজগতে সাম্যভাবের বার্তাবহন করে এনেছেন। তিনি হলেন সাম্যবাদের প্রবাদপুরুষ। তিনিই মানবজাতির ভাতৃভাবের এনে দিয়েছিলেন বিশ্বের সকল মানুষের মধ্যে। তিনি ঈশ্বর প্রেরিত পুরুষ বটে।”
হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ)এর নবুওয়ত বিশ্বব্যাপী সকল মানুষের কল্যাণের জন্য প্রযোজ্য ছিল। এজন্য প্রত্যেক জাতির কবি , সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, ধর্মগুরু তথা পন্ডিত গন হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ)এর প্রশংসা প্রশস্তি গেয়েছেন। ফরাসি লেখক আলফ্রেড দ্য ল্যামারটাইন, বীর যোদ্ধা নেপোলিয়ন বোনাপার্ট, ইংরেজ পাদ্রী বচওয়ারাথ স্মিথ,স্ট্রিফেন, পন্ডিত টয়েনবী , ঐতিহাসিক গীবন,থমাস কার্লাইল,আলবার্ট জনসন, জওহরলাল নেহরু, সরোজিনী নাইডু,এনি এ বেচান্ত ,বেদপ্রকাশ উপাধ্যায়, সুশান্ত ভট্টাচার্য,এম এন রায়, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী লক্ষী শংকরাচার্য প্রমুখরা হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) এর প্রশংসাই পঞ্চমুখ হয়েছেন। তাঁরা অকপটে স্বীকার করেছেন তিনি ছিলেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মহামানব।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct