সাদ্দাম হোসেন, জলপাইগুড়ি, আপনজন: সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ৬৩ বছরের বৃদ্ধা। বছরের পর বছর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও সরকারি দফতরে ঘুরে এমনকি দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়েও সফল হয়নি। অবশেষে সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজের দূরবস্থার কথা তুলে ধরলেন।যেখানে বৃদ্ধ, বৃদ্ধা কিংবা বিধবা প্রত্যেককেই রাজ্য সরকার থেকে দেওয়া হচ্ছে ভাতা। সরকার যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একগুচ্ছ প্রকল্প চালু করেছে। সেখানে দাঁড়িয়ে বছর ৬৩-এ এর এক বৃদ্ধা এখনো ভাতা থেকে শুরু করে সমস্ত রকমের সরকারি সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত। বৃদ্ধার নাম মিনারানী মন্ডল। জরাজীর্ণ কুটিরে কোনোমতে রাত কাটাচ্ছেন বৃদ্ধা। জলপাইগুড়ির জেলার বানারহাটের ব্লকের গয়েরকাটা এলাকার বাসিন্দা তিনি।বার্ধক্য জনিত কারণে চলাফেরা করতে অসুবিধা হয় মিনারানী মন্ডলের। বহুদিন আগেই স্বামী মারা গেছেন।দুই কন্যা সন্তানেরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে। পরিবারে আয় উপার্জন করার কেউ না থাকায় চরম আর্থিক সংকটে ভুগছেন তিনি। পাড়াপড়শিদের সাহায্যেই কোনো ভাবে খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন বলেই জানান তিনি।জরাজীর্ণ ভাঙা ঘর, ফুটো হয়েছে ঘরের ছাদ। বর্ষাকালে বিছানায় পরে বৃষ্টির জল। শীতকালে ভাঙা বেরা দিয়ে ঢুকে ঠাণ্ডা বাতাস। এভাবেই কষ্টে রাত্রি যাপন করছেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা হোক কিংবা বাংলার আবাস যোজনা সমস্ত রকমের সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত তিনি।
সরকারি ভাতা এর আশাতেই দিনের পর দিন সরকারি অফিস ও দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের লাইমে দাঁড়াচ্ছেন ৬৩ বছরের বৃদ্ধা মিনা রানী দেবী। তবে এখনো পর্যন্ত পায়নি কোন সরকারি সুযোগ-সুবিধা।রাজ্য সরকারের তরফে যেখানে প্রচার চালানো হয় জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একগুচ্ছ সরকারি প্রকল্প রয়েছে। ঠিক এই জায়গায় প্রশ্ন উঠছে তাহলে সেই সমস্ত প্রকল্প কাদের জন্য?বৃদ্ধার অভিযোগ, প্রত্যেকবার ভোটের আগে সমস্ত দলের নেতারা আসেন শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি দেন, ভোট মিটলে আর কেউ কোনো দিন খোঁজ খবর নিয়ে দেখেনা বলেই জানান। তিনি বলেন সরকার একটু ভাতা, রেশন কার্ড ও একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিক। বিজেপি নেতা কমলেশ সিংহ রায়ের অভিযোগ, “ যারা কাটমানি দিবে তারাই সরকারি সুযোগ সুবিধা পাবে। বৃদ্ধা মহিলা কাটমানি দিতে পারছেন জন্যেই সম্ভবত সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ করছি।ভারতীয় জনতা পার্টি ওনার পাশে থাকবে”।যদিও বৃদ্ধা মহিলার সমস্যার কথা মেনে নিয়ে তার সমস্ত দার ভার উল্টে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর চাপিয়ে দেয় সাঁকোয়াঝোরা-১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ - প্রধান গোপাল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, বৃদ্ধা মহিলার অভিযোগে সত্যতা রয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতে আসলে জি. আর এর ব্যবস্থা করে দেয়। ওনার আধার কার্ড না থাকার কারণেই কোনো রকমের সরকারি প্রকল্প পাচ্ছেন না। কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত জায়গায় আঁধার কার্ড বাধ্যতামূলক করেছে। আমরা ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করবো।এবিষয়ে বানারহাট এর বিডিও প্রহ্লাদ বিশ্বাস কে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct