নিজস্ব প্রতিবেদক, হুগলি, আপনজন: নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার পর এবার হুগলিতে বেশ কিছু স্পট চিহ্নিত হয়েছে ‘রেড জ়োন’। হুগলি জেলার উত্তরপাড়া শ্রীরামপুর ও চন্ডীতলা এলাকা ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এদিকে নিষিদ্ধ ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতে। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্র বলছে, সে কারণে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গির হাত প্রসারিত হয়েছে উত্তর বঙ্গে। মালদহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। একমাত্র দার্জিলিং এবং কোচবিহারে ডেঙ্গির প্রকোপ এখনও কিছুটা কম।স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলার কালিয়াচকের ১, ২ এবং ৩ নম্বর ব্লক, রতুয়া ২ নম্বর ব্লকে ডেঙ্গির প্রকোপ সব থেকে বেশি। পাশাপাশি, ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকাতেও ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এগুলির উপর চলছে নজরদারি। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে মালদহের যে সব এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, সেখানে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। শহরের কিছু প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও গ্রামীণ এলাকার বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডেঙ্গি পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জেলার স্বাস্থ্য কর্মীদের ডেঙ্গির চিকিৎসার প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।মালদহ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারি মাস থেকে এখন পর্যন্ত ওই জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১,০৩২ জন। গত এক মাসে মালদহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৮৭ জন। গত সপ্তাহে শুধু ইংরেজবাজার শহরেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ জন। তা ছাড়াও মালদহের কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকে গত সপ্তাহে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ জন। মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ১০০ জন।উত্তর ২৪ পরগনাতেও ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। বনগাঁ, বাগদা, গাইঘাটা, বাদুড়িয়া, দক্ষিণ দমদম, বিধাননগর, হাবড়ায় লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। ৩৭ সপ্তাহ পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এই জেলায় প্রায় সাত হাজার। প্রশাসনের আশা, খুব শীঘ্রই নিয়ন্ত্রণে আসবে ডেঙ্গি। চরিত্রগত ভাবে ডেঙ্গি ভাইরাস অক্টোবর মাস পর্যন্ত সক্রিয় থাকে।বাঁকুড়া জেলাতেও সক্রিয় ডেঙ্গি। ইতিমধ্যেই জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ৩৬৩ জন। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পৃথক একটি ডেঙ্গি ওয়ার্ড খুলে চলছে চিকিৎসা। সব থেকে বেশি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত বাঁকুড়া পুরসভা এলাকায়। স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব অনুযায়ী, বাঁকুড়া পুর এলাকাতে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ৮০ জন। এ ছাড়াও রানিবাঁধ ব্লকে ৪৪ জন, খাতড়া ব্লকে ৩৮ জন এবং ওন্দা ব্লকে ৩২ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে গ্রামে গ্রামে সচেতনতার কাজ চলছে। যে গ্রামে জ্বরের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে, সেখানে রক্তপরীক্ষার আয়োজন করা হচ্ছে।ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী মঙ্গলবার জরুরি বৈঠক ডেকেছে হাওড়া পুরসভা। সকল বিধায়ক, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং পুরসভার বোর্ড সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন বৈঠকে। জানুয়ারি থেকে গত সপ্তাহ পর্যন্ত হাওড়া পুর এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭১১ জন। উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড। শুধুমাত্র এই ওয়ার্ডে ২১০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী জানান, এ বছর ডেঙ্গিতে কেউ মারা যাননি। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য বেশি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct