নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা: লোকসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল পাসের পর জামাআতে ইসলামী হিন্দ-এর তরফে বলা হয়েছে, মহিলাদের জন্য লোকসভা এবং বিধানসভায় আসন সংরক্ষণ খুবই প্রয়োজনীয়। কিন্তু একইসঙ্গে ওবিসি এবং মুসলিম মহিলাদের জন্যও এই সংরক্ষণ কাম্য। জামাআতের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক সেলিম ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন, গণতন্ত্রকে মজবুত করতে রাজনৈতিক ক্ষমতার অলিন্দে সব সম্প্রদায় ও সব শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন ।
জাসায়তে ইসলামি বলেছে, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও এ দেশের সংসদ এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভায় মহিলা প্রতিনিধিত্বের হার খুবই হতাশাজনক। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে লোকসভায় সদ্য পাস হওয়া মহিলা সংরক্ষণ বিল অবশ্যই প্রশংসনীয় পদক্ষেপ, যা আরো অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল । কিন্তু ভারতের মতো এতবড় দেশে সামাজিক বৈষম্যের বিষয়টা বিলের খসড়ায় সেভাবে গুরুত্ব পায়নি। ওবিসি এবং মুসলিম মহিলাদের সংরক্ষণের বিষয়টা ঠাঁই পায়নি। যদিও তপশিলী জাতি-উপজাতি মহিলাদের সংরক্ষণের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মুসলিমদের একাংশ ওবিসি-র আওতায় পড়লেও তারা এসসি-এসটির মধ্যে পড়ে না। এসসি-এসটিরা সকলেই অমুসলিম বা সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের।
জামায়অতের প্রেস বিবৃতিতে আরও বলা হযেছে, সাচার কমিটির রিপোর্ট (২০০৬), পরবর্তীতে সাচার কমিটির রিপোর্ট এর ওপর মূল্যায়ন (২০১৪), এক্সপার্ট গ্রুপ ডাইভারসিটি ইনডেক্স (২০০৮), ইন্ডিয়া এক্সক্লুসন রিপোর্ট (২০১৩-১৪), জনগণনা এবং ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভে (২০১১) এই সমস্ত রিপোর্টেই স্বীকার করা হয়েছে, ভারতীয় মুসলিম সম্প্রদায় বিশেষ করে মুসলিম মহিলারা সব দিক থেকে আর্থ-সামাজিক সূচকে অনেক পিছিয়ে আছে। লোকসভা, রাজ্যসভা, বিধানসভা, বিধান পরিষদ সর্বত্র মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব খুবই কম। যা দেশে মুসলিমদের সংখ্যানুপাতে সামঞ্জস্যহীন। বর্তমানে পার্লামেন্টে বিজেপি দলের তরফে কোনও মুসলিম এমপি-ই নেই ।
জামাআতে ইসলামী হিন্দের বক্তব্য, পরবর্তী সেন্সাস রিপোর্ট প্রকাশ হলে তারপর বিধানসভা ও লোকসভা আসনের ডিলিমিটেশন বা পুনর্বিন্যাসের পর মহিলা সংরক্ষণ বিধি কার্যকর হবে। অর্থাৎ বাস্তবায়িত হতে ২০৩০ সাল লেগে যাবে। ফলে ২০২৪ লোকসভা ভোটে তো হবেই না, এরপরের লোকসভা ভোট হবে ২০২৯ সালে।
তখনও মহিলারা আদৌ সংরক্ষণের সুবিধা পাবে বলে মনে হয় না। তার মানে লোকসভা ও বিধানসভাগুলোতে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ হবে ২০৩৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে। যাই হোক, এই বিলে ওবিসি এবং মুসলিম মহিলাদের কোনও সংরক্ষণ না দেওয়াকে অন্যায় বলে অভিহিত করেছে জামাআত। এই সংগঠনের মতে, কেন্দ্র সরকারের ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ নীতির পরিপন্থি এই বিল ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct