আপনজন ডেস্ক: রাজ্যের ওয়াকফ সম্পত্তি বেদখল হওয়ার পিছনে পশ্চিমবঙ্গ ওয়াকফ বোর্ডের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুললেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী তথা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সভাপতি মাওলনা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি। বৃহস্পতিবার ধর্মতলার রানি রাসমনী রোডে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য শাখার ডডাকা জমাযেতে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি বুঝিয়ে দেন, মন্ত্রী হলেও মা মাটি মানুষের আমলেও ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধারে তিনি অপারগ।
পশ্চিমবঙ্গে ওয়াকফ সম্পত্তি বেআইনিভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সিদ্দিকুল্লাহ বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ওয়াকফ সম্পত্তি বেআইনিভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে। ওয়াকফ বোর্ডই ওই সম্পত্তি প্রমোটারদের হাতে তুলে দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে তিনি কলকাতার ওয়াকফ সম্পত্তি বেদখল হওয়ার কথা তুলে ধরেন। ভিড় ঠাসা জমায়তে তিনি বলেন, ‘‘ওয়াকফ সম্পত্তি আমাদের রক্ষা করতেই হবে । সম্পত্তি রক্ষা করা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয় । আমার এলাকায়, আমার পড়ায়, আমার বিধানসভায়, আমার থানায় ব্লকে, মহকুমায় লুকিয়ে চুরিয়ে ওয়াকফ সম্পত্তি বেদখল হয়ে যাচ্ছে । বেহাত হয়ে যাচ্ছে । আমি দু’টি জায়গার কথা বলছি, রাজাবাজার নারকেলডাঙায় একটা জায়গার ট্যাক্স না নিয়ে মালিকবিহীন সম্পত্তি করার চক্রান্ত করছে ওয়াকফ বোর্ড। সেই জমি প্রমোটারদের দিয়ে দেওয়া হবে । বিক্রি করে দেওয়া হবে। এটা খুবই দুরর্বাগ্যজনক ঘটনা।
এ বিষয়েই পরে মন্ত্রী প্রশ্ন করলে তার উত্তরে বলেন, পুরনো বদঅভ্যাস পাল্টাতে হবে । ইতিমধ্যে রাজ্য জমিয়তে উলামায়ের তরফে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লেখা হয়েছে । আমি মন্ত্রী হিসেবেও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি। একই সঙ্গে জানতে চেয়েছি বর্তমানে কত ওয়াকফ সম্পত্তি আছে । গ্রন্থপঞ্জি হিসেবে ওই সম্পত্তির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি ওয়অকফ সম্পত্তি রক্ষায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে ওয়াকফ সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছেন। যার সদস্যরা ভালো কাজ করছেন। এছাড়াও এইদিন নাম না করে বিজেপির বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন সিদ্দিকুল্লাহ। তার অভিযোগ, দেশ জুড়ে ইচ্ছাকৃত মাদ্রাস গুলোকে টার্গেট করা হচ্ছে। এইদিন রাজ্য জমায়েত উলামায়ে হিন্দের চারটি সংকল্প নিয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ হন জমায়েত এর সদস্যরা।
অন্যদিকে দেশজুড়ে যখন সনাতন ধর্ম নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে তখন এদিন জমিয়তে উলামার মঞ্চে অন্য ধর্মের ধর্মবেত্তাদের দেখা যায়। বিশেষ করে বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের উপস্থিতি সকলের নজর কাড়ে। সেই সব ধর্মবেত্তারা জমিয়তে উলামার ডাকা এদিনের জমায়েতের সমর্থন জানান।
মঞ্চে দেখা গেল সনাতন ধর্ম থেকে বিদ্ধ ধর্মের ধর্মগুরুরা উপস্থিত । তারাও এই দিন জমায়েত এর দাবিকে সমর্থন জানিয়ে অংশগ্রহন করেন। পাশাপাশি ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট রাজ্যের শাসক দলের দিকে ঝুঁকবে কিনা তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেত চাননি। উল্লেখ্য, করোনার কারণে দু বছর পর জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের এই সভা। এদিন অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জমিয়াতে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সম্পাদক মুফতি আবদুস সালাম।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct