রাজু আনসারী, অরঙ্গাবাদ, আপনজন: গাইডেন্স একাডেমীতে মুসলিম ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক- স্টাফদের নামাজ রোজা সহ ধর্মপালনে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে এবার তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করলো জামায়াতে ইসলামী হিন্দ। মঙ্গলবার বিকেলে জামায়াতে ইসলামী হিন্দের চার সদস্যের এক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিনিধি দল মুর্শিদাবাদের উমরপুরে অবস্থিত গাইডেন্স একাডেমিতে গেলে তাদের একাডেমির ভেতরে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন জামায়াতে ইসলামী হিন্দের মুর্শিদাবাদ জেলার সম্পাদক মন্ডলী সদস্য মোঃ আমিনুল ইসলাম, মানবাধিকার সংগঠন এপিসিআরের জেলা সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এবং জামাতের সদস্য গোলাম মোস্তফা। এদিন জামাতের প্রতিনিধি টিমকে গাইডেন্স একাডেমি চত্বরে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার পরেই কার্যত তীব্র খুব ব্যক্ত করেন জামায়াতে ইসলামী হিন্দের নেতৃবৃন্দ। কেন ছাত্রছাত্রী এবং স্টাফদের ধর্ম পালনে বাধা দেওয়া হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তারা। ভাইরাল হওয়া পোস্টারের দাবি কি তাহলে সত্য? যদি সত্য না হয় তাহলে কেন জামাতি ইসলামীর ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমকে গাইডেন্স একাডেমির মধ্যে প্রবেশ করতে দেওয়া হলো না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জামাতের নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি পোস্টার ভাইরাল হতেই আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে অভিভাবকদের নিয়ে গাইডেন্স একাডেমির ডাকা বৈঠক নিয়েও সন্দিহান প্রকাশ করেন জামাতে ইসলামীর প্রতিনিধি দল। এদিকে গাইডেন্স একাডেমি চত্বরে জামাতে ইসলামীর প্রতিনিধি দল আসতেই রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশকে খবর দেন একাডেমি কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে সঙ্গেই রঘুনাথগঞ্জ থেকে এক গাড়ি পুলিশ পৌঁছে যান একাডেমি চত্বরে। এদিকে জামাতে ইসলামী হিন্দের প্রতিনিধি দলকে প্রবেশ করতে না দেওয়ার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও আটকে দেই গাইডেন্স একাডেমী কর্তৃপক্ষ। কোন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন তারা। ভাইরাল হওয়া পোস্টার নিয়ে ফোনে কোন রকম মন্তব্য করতে চাননি গাইডেন্স একাডেমীর শিক্ষ্ক শিক্ষিকারাও। স্বাভাবিক কারণেই গাইডেন্স একাডেমির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে আমারা সত্যতা যাচাই করতে পারিনি।
উল্লেখ করা যেতে পারে, মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার ওমরপুর ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন তালাই মোরে অবস্থিত গাইডেন্স একাডেমী। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় হঠাৎ একটি পোস্ট পরিলক্ষিত হয়। সেখানেই কার্যত গাইডেন্স একাডেমী এবং গাইডেন্স ফাউন্ডেশন এর মুসলিম কর্মীবৃন্দ বলে প্রচারিত এই পোস্টারে গাইডেন্স একাডেমির বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ ওঠে। পোস্টারে উল্লেখ করা হয়, গাইডেন্স একাডেমিতে মুসলিম ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষক সহ অন্যান্য স্টাফদের নামাজ রোজা কোন কিছুই করতে দেওয়া হয় না। শুধু তাই নয় জুমার নামাজ পড়তেও বাধা দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে সেই পোস্টারে। শুধু পোস্টারই নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় গাইডেন্স একাডেমির প্রাক্তন ছাত্ররাও একাডেমি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। সার্বিক বিষয়েই মিডিয়া এবং জামায়াতে ইসলামী হিন্দের প্রতিনিধি দল তদন্ত ও সত্যতা যাচাই এর উদ্দেশ্যে গেলে তাদেরকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। স্বাভাবিক কারণেই বিষয়টি আমরা যাচাই করে উঠতে পারিনি। যদিও তাদেরকে একাডেমি চত্বরে প্রবেশ করতে না দেওয়াই পোস্টারটি সত্য বলেই দাবি করেছেন জামাতে ইসলামী হিন্দের নেতৃবৃন্দ।বিষয়টি নিয়ে জামায়াতে ইসলামী হিন্দের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মোঃ আমিনুল ইসলাম তীব্র খুব ব্যক্ত করে বলেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এভাবে ধর্ম পালনে বাধা দেওয়ার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। কেন নামাজ পড়ার জায়নামাজ কেড়ে নেওয়া হবে ছাত্রদের কাছ থেকে? সার্বিক বিষয়ে প্রশ্ন তুলে আজ আমরা একাডেমী প্রাঙ্গনে গেলেও আমাদের সঙ্গে কোনো রকম কথা বলতে রাজি হননি একাডেমী কর্তৃপক্ষ। যদি ঘটনা মিথ্যা হয় তাহলে কেন একাডেমি কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করল? কেনইবা তড়িঘড়ি ধর্ম বিষয়ক বৈঠক ডাকতে হল গাইডেন্স একাডেমিতে? আমরা সমস্ত বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct