আপনজন ডেস্ক: সিবিআই তদন্ত হলে মানুষের মনে যে আর দাগ কাটে না তা খোলসা করে বলে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআই তদন্তে অভিযুক্তদের সঙ্গে আঁতাতের সন্দেহও প্রকাশ করলেন তিনি। আর তাই সিবিআইএর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর প্রধান অশ্বিন শেণভিকে তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওএমআর শিট কাণ্ডে সিবিআইয়ের ব্যর্থতার কথাই শুধু তুলে ধরেননি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সিবিআই আধিকারিকদের আঁতাত থাকার সম্ভাবনার কথা বলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ওএমআর শিটের ডিজিটাইজড কপি আর অভিযুক্তদেরকে প্রশ্নের ধরন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।বিচারপতির ধারণা সিবিআই নিজেই অপরাধীদের ঢাকার চেষ্টা করছে। রিপোর্ট দেখে সেটাই মনে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। নিয়োগ মামলায় সিবিআই ধীর গতিতে চলায় আগেই বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবারও সিবিআইকে ব্যাপক সমালোচনা করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বিশেষ করে টাইপ করা কপিকে ডিজিটাইজড কপি বলে তুলে ধরায় সিবিআইকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। ডিজিটাইজ়ড’ ওএমআর শিটের নাম করে যে সব তথ্য দিচ্ছে, সেগুলি হাতে টাইপ করা। তার সঙ্গে আসল কপির কোনও মিল নেই। অথচ হাতে টাইপ করা ওই তথ্যকেই পর্ষদ ‘ডিজিটাইজ়ড’ বলছে। এই পর্যবেক্ষণ ফুটে ওঠায় ‘ডিজিটাইজ়ড কপি’ নিয়ে সিবিআইয়ের অজ্ঞতায় বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে করা প্রশ্নের ধরন নিয়ে বিচারপতি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এই মামলার কিছু হবে না। সিবিআইকে দিলাম এর চেয়ে উলুবেড়িয়া থানাকে কেসটা দিলে ভাল হত! বিচারপতির নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার যে কেস ডায়েরি আদালতে সিবিআই জমা করেছে তাতেই অসন্তুষ্ট বিচারপতি। সব ফাইল দেখে বিচারপতি জানান, কেস ডায়েরিতে অনেক তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।কেস ডায়েরিতে যে তথ্য থাকা উচিত তা না থাকায় তিনি তদন্তে অখুশি হন। বিচারপতি মন্তব্য করেন, সিবিআই আধিকারিকরা বোকা নয়, তারা সেয়ানা।তাই বিচারপতি বলেন, সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কি আবার তদন্তের নির্দেশ দিতে হবে? যে কোনও বুদ্ধিমান লোক আসল প্রশ্ন করবে। কী প্রশ্ন করবে সেটাও কি আমাকে বলে দিতে হবে? আমি চিৎকার করতে চাই না। আপনারা বাধ্য করছেন। সিবিআইয়ের এই অফিসাররা লজ্জাহীন। আগে সিবিআই শুনলে লোকে ভয় পেত। এখন লোকে সিবিআইয়ের কথা শুনলে হাসে। সাধারণ মানুষের ধারণা, সিবিআইয়ে কিছু হবে না। সিবিআই নিজেই অপরাধীদের ঢাকার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করার পাশাপাশি সিবিআই নিয়ে এবার প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও নালিশ করার চিন্তাভাবনা করছেন বলে এ দিন জানিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct