আপনজন ডেস্ক: অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটি সারা দেশে একটি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে মুসলিম মহিলারা তাদের পিতার সম্পত্তিতে তাদের অংশ পেতে পারে। অনেকে মনে করেন, শরিয়াহ আইন কন্যাকে পিতার উত্তরাধিকারে একটি নির্দিষ্ট অংশ দেয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে কন্যারা এই অংশ পায় না। একইভাবে ছেলের সম্পত্তি থেকে মা এবং স্বামীর সম্পত্তি থেকে বিধবাও কিছু সময় তাদের অংশ থেকে বঞ্চিত হয়। এ বিষয়ে কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তগুলি তুলে ধরে বোর্ডের মুখপাত্র এস কিউ আর ইলিয়াস বলেন, বোর্ড এটাও উপলব্ধি করেছে যে কন্যা ভ্রূণ হত্যা, যৌতুক, দেরিতে বিবাহের সমস্যা, তাদের মর্যাদা ও পবিত্রতার উপর আক্রমণ, কর্মক্ষেত্রে শোষণ, গার্হস্থ্য সহিংসতা ইত্যাদির মতো অনেক সামাজিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।বোর্ড এই বিষয়গুলি কঠোরভাবে লক্ষ্য করে এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছে,সমাজের সংস্কারের জন্য ভিতর থেকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে। সমাজ সংস্কারের উদ্দেশ্যে সমগ্র দেশে দায়িত্ব তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। তিন সেক্রেটারি মাওলানা এস আহমদ ফয়সাল রাহমানী, মাওলানা মোঃ উমরাইন মাহফুজ রাহমানী ও মাওলানা ইয়াসিন আলী উসমানীকে এর জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সমগ্র কাজের পরিকল্পনা ও মানচিত্র প্রণয়নের জন্য মাওলানা এস আহমদ ফয়সাল রাহমানী, মাওলানা মোঃ উমরাইন মাহফুজ রাহমানী এবং এস কিউ আর ইলিয়াসকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইভাবে বোর্ডের সেক্রেটারি মাওলানা সৈয়দ বিলাল আবদুল হাই হাসানী নদভীকে তাফহীম-ই-শরিয়ত কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা ইউনিফর্ম সিভিল কোড সম্পর্কিত বোর্ডের প্রচেষ্টা, বিশেষ করে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের টেবিল সভা এবং সংবাদ সম্মেলনের প্রশংসা করেন। বোর্ডের উদ্যোগে প্রায় ৬৩ লক্ষ মুসলিম ইউসিসি সম্পর্কিত আইন কমিশন এবং বোর্ডের সভাপতির নেতৃত্বে আইন কমিশনের সাথে বোর্ডের প্রতিনিধিদলের বৈঠক ও আলোচনায় সাড়া দিয়েছিলেন। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে বোর্ড ইউসিসির বিরুদ্ধে তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।ওয়ার্কিং কমিটি ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ, ওয়াকফ বোর্ডের ফৌজদারি অবহেলা এবং দেশের বিভিন্ন উচ্চ আদালতে ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, ওয়াকফের শরিয়াহ মর্যাদা, ওয়াকফ সম্পত্তির প্রতি হুমকি এবং সম্ভাব্য প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিয়ে দেশের পাঁচটি প্রধান শহরে ওয়াকফ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। ওয়ার্কিং কমিটি নতুন মধ্যস্থতা আইনের বিভিন্ন দিক বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করেছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে বোর্ডের আইন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি সব দিক খতিয়ে দেখবে এবং বৈবাহিক ও অন্যান্য সামাজিক সমস্যা সমাধানে তা কীভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে তা বোর্ডকে জানাবে। বোর্ডের সভাপতি মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানীর সভাপতিত্বে সভায় সঞ্চালনা করেন বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ ফজলুর রহিম মুজাদ্দিদী। বিশেষ আমন্ত্রিতদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি মাওলানা সৈয়দ আরশাদ মাদানী, অধ্যাপক ড. সৈয়দ আলী মোহাম্মদ নাকভি, সৈয়দ সাদাতুল্লাহ হুসাইনী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ ফজল রহিম মুজজাদ্দিদি, কোষাধ্যক্ষ রিয়াজ উমর, সেক্রেটারি; আহমদ ফয়সাল রাহমানী, সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হাতিম মাছলা, মাওলানা আসগর আলী ইমাম মেহেদী সালাফি, মাওলানা আব্দুল্লাহ মুগাইসী, অধ্যাপক সৌদ আলম কাসমি, মাওলানা আনিসুর রহমান কাসমী, জনাব কামাল ফারুকী, অ্যাডভোকেট মো. এম আর শামশাদ, অ্যাডভোকেট তাহির এম হাকিম, অ্যাডবোকেট ফুজাইল আহমেদ আইয়ুবি, মাওলানা নিয়াজ আহমদ ফারুকী, অধ্যাপক মনিসা বুশরা আবিদী, অ্যাডভোকেট নাবিলা জামিল ও ড. এস কিউ আর ইলিয়াস প্রমুখ। এছাড়া অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হামিদ ওয়ালী ফাহাদ রাহমানি, অ্যাডভোকেট ওয়াজিহ শফিক, অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদির আব্বাসী, ড. ওয়াকার উদ্দিন লতিফি, মাওলানা রিজওয়ান আহমদ নদভী প্রমুখ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct