নকীব উদ্দিন গাজী, নামখানা, আপনজন: বাংলার আকাশে দুর্যোগের মেঘ। নিম্নচাপ ও কৌশিকী অমাবস্যার ভরা কোটালের জোড়া ফালায় উত্তাল সমুদ্র। সমুদ্র উত্তল থাকার কারণে গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞার জারি করেছে মৎস্য দপ্তর। ইতিমধ্যেই মৎস্য দপ্তরের নিষেধাজ্ঞ া পাওয়ার পর থেকেই একে একে মৎস্যজীবী ও ট্রলার গুলি বন্দরের দিকে ফিরে আসছে।আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে মায়ানমার উপকূলে সৃষ্টি হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। যা আগামী তিন দিনে নিম্নচাপে পরিণত হবে। পরে তা শক্তি বাড়িয়ে ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোবে। এর জেরে মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত উপকূল এলাকায় হালকা থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে দুই ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী অনেক জায়গায় বৃষ্টি শুরও হয়েছে। একে একে ট্রলার গুলি বন্দরে ফিরছে আর এর ফলে বড়সড়ো ক্ষতির মুখে মৎস্যজীবীরা। শুরু হয়ে গিয়েছে উৎসবের মরশুম হাতেগোনা আর কয়েক দিনের অপেক্ষা, তারপর বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা। উৎসবের মরশুমের আগে বড়সড় ক্ষতির মুখে মৎস্যজীবীরা।রান্না পুজোয় এবার ইলিশের বাজারে মন্দা হবে এমনটাই জানানো মৎস্যজীবী।ক্যালেন্ডার বলছে বর্ষা পেরিয়ে শরৎ এসে গেল, তবুও ইলিশের দাম কমছে না।দিঘা, শঙ্করপুর, কাকদ্বীপ, নামখানা ,ডায়মন্ড হারবার থেকে ইলিশের জোগান নেহাতই কম।যেটুকু ইলিশ মিলছে বাজারে, তার দাম আকাশছোঁয়া।ভাদ্রমাসের সংক্রান্তিতে যন্ত্রদেবতা বিশ্বকর্মার আরাধনা হয়। আর রান্নাঘরে যাঁরা হাতা-খুন্তি নিয়ে সারা বছর ব্যস্ত থাকেন, বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন তাঁরা মাতেন রান্নাপুজো বা অরন্ধন উৎসবে।এই উৎসবের মধ্যমণি অবশ্যই ইলিশ।প্রতিবছর রান্না পুজোর আগে জমে ওঠে বিভিন্ন পাইকারি মাছ বাজার।তবে চড়া দামে সাধ থাকলেও সাধ্যে কুলোচ্ছে না সাধারণ বাঙালির।পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ইলিশের দাম ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা। খুচরো বাজারে যার দাম বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা। এদিকে, ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের খোকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। কিন্তু রান্না পুজোর আগে ইলিশের তেমন যোগান মিলবে না বলে সাপ জানিয়ে দিল মৎস্যজীবীরা। কাকদ্বীপ ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি তিনি জানান, নিম্নচাপ আর অমাবস্যার কোটালের জেরে কার্যত সমুদ্র উত্তাল হয়ে গিয়েছে। মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেই নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর একে একে গভীর সমুদ্র থেকে মৎস্যজীবী ট্রলার গুলি বন্দরের দিকে ফিরছে। আর কয়েকদিন পরেই রান্না পুজো আর রান্না পুজোতে ইলিশের চাহিদা থাকে বাজারে কিন্তু ইলিশের চাহিদা থাকলেও এ বছর তেমনভাবে বাজারে ইলিশের যোগান দিতে পারবে না মৎস্যজীবীরা। নিম্নচাপের কারণে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারছে না মৎস্যজীবীরা তার ফলেই মাছের যোগান কমবে। এবছর ইলিশের যোগান মেটাতে হিমঘরের থাকা ইলিশ বিক্রি হবে। এই বিষয়ে ট্রলারের ম মালিক মাখন দাস তিনি জানান, ইলিশের মরশুম প্রায় শেষের পথে। রান্না পুজোতে ইলিশের চাহিদা থাকে কিন্তু এ বছর চাহিদা থাকলেও নিম্নচাপ ও কোটালের কারণে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারছে না মৎস্যজীবীরা। এর ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ট্রলার মালিকেরা। কি হবে বুঝে উঠতে পারছি না। বাজারে মাছের দাম কার্যত আকাশ ছোঁয়া হতে চলেছে। এ বিষয়ে এক সাধারণ মানুষ তিনি বলেন, বাজারে মাছের দাম এমনিতেই এখন আকাশ ছোঁয়া। রান্না পুজোতে বাজারে ইলিশের চাহিদা থাকে কিন্তু এ বছর মাছ যদি না পাওয়া যায় তাহলে অল্প পরিমাণ মাছের দামি কার্যত মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাবে। অন্য কোন মাছ দিয়েই রান্না পুজো করতে হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct