সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: বকেয়া বেতনের পরিমাণ বাড়তে বাড়তে পাঁচ মাস ছুঁয়েছে। পুজোর মুখে সেই বকেয়া বেতনের দাবীতে সোনামুখী পুরসভায় টানা দু সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন পুরসভার অস্থায়ী সাফাইকর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে বাইরে থেকে শ্রমিক এনে পুরসভা শহর সাফাইয়ের কাজ করানোয় নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়েছে অস্থায়ী শ্রমিকদের মধ্যে। সোনামুখী পুরসভায় গত কয়েকবছর ধরে মাঝেমধ্যেই অস্থায়ী শ্রমিকদের বেতন বকেয়া হচ্ছে। সেই বকেয়ার অঙ্ক বাড়তে বাড়তে এখন পাঁচ মাস ছুঁয়েছে। পুজোর মুখে বকেয়া সেই টাকা না মেটানো হলে কাজে যোগ না দিয়ে টানা কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন ওই পুরসভায় কর্মরত প্রায় চারশো অস্থায়ী শ্রমিক। টানা দুসপ্তাহের বেশি সময় ধরে অস্থায়ী সাফাই কর্মীরা কাজে যোগ না দেওয়ায় সোনামুখী শহরের মুখ ঢাকা পড়েছে জঞ্জালে। রাস্তার ধারে স্তুপাকারে জমে রয়েছে জঞ্জাল। ভ্যাট উপচে আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ছে রাস্তায়। নাকে রুমাল চাপা দিয়ে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন শহরের মানুষ। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাতে সোনামুখী পুর কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে সাফাই কর্মী এনে শহর পরিষ্কারের কাজ করায় নতুন করে ক্ষোভ ছড়াতে শুরু করে আন্দোলনকারী অস্থায়ী শ্রমিকদের মধ্যে। তাঁদের দাবী পুরসভার অস্থায়ী শ্রমিকদের মাসের পর মাস বেতন বকেয়া রেখে পুরসভা এখন বাইরে থেকে শ্রমিক এনে সাফাই কাজ করে তাদের চাপে ফেলার কৌশল নিয়েছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামীদিনে আরো বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে আন্দোলনকারী অস্থায়ী কর্মীরা। পুরপ্রধানের দাবী সোনামুখী পুরসভার যে আর্থিক ক্ষমতা তাতে সর্বাধিক ১৮০ থেকে ২০০ জন অস্থায়ী কর্মীর বেতন চালানো সম্ভব। কিন্তু সেখানে অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৪০০। প্রায় দ্বিগুণ কর্মীর বোঝা টানতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই বকেয়া পড়ে যাচ্ছে বেতন। সেই বেতনের দাবীতে অস্থায়ী কর্মীরা কর্মবিরতি করায় শহরের মানুষের পরিসেবার কথা চিন্তা করে বাধ্য হয়ে অন্যদের দিয়ে সাফাই কাজ করাতে হয়েছে। পুরসভার এই অচলাবস্থার জন্য শাসক দল তৃণমূলকেই কাঠগোড়ায় তুলেছেন এলাকার বিজেপি বিধায়ক। তার দাবী পুরসভা নির্বাচন এলেই ভোটের জন্য দলে দলে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করে এখন বেতন দিতে পারছে না। তার জেরে সোনামুখীর মানুষকে নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে। এর স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct