আপনজন ডেস্ক: বেন স্টোকস যখন নামেন, ১৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে ইংল্যান্ড। আবার ট্রেন্ট বোল্টের নতুন বলে সুইংয়ের তোপে স্বাগতিকেরা। বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো চাপ নয়, তবে স্টোকসের জন্য সেটিই যেন আদর্শ মঞ্চ। সেখান থেকে ডেভিড ম্যালানের সঙ্গে স্টোকস গড়লেন ১৬৫ বলে ১৯৯ রানের জুটি। আর নিজে খেললেন রেকর্ডগড়া ইনিংস। স্টোকস করেছেন ১২৪ বলে ১৮২ রান, পরে পুরো নিউজিল্যান্ড দল মিলে করতে পেরেছে ১৮৭ রান। ১৮১ রানের বিশাল জয়ে ৪ ম্যাচ সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। অবসর ভেঙে ফেরা স্টোকস ৫০ ওভারের জন্য কতটা প্রস্তুত, সে প্রশ্ন ছিল। সেটি যেন উড়িয়ে দিলেন তিনি এ ইনিংসে। ৪৪ বলে ফিফটি পূর্ণ করার পর মাত্র ৭৬ বলেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এই বাঁহাতি। ইনিংসে সব মিলিয়ে মারেন ১৫টি চার ও ৯টি ছক্কা। জেসন রয়ের ১৮০ রানের ইনিংস (মেলবোর্নের বিপক্ষে ২০১৮ সালে) ছাপিয়ে এটিই এখন কোনো ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানের ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস, ওভালেও যেকোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে স্টোকসের এটি চতুর্থ সেঞ্চুরি। সর্বশেষ সেঞ্চুরিটি এসেছিল ২০১৭ সালের জুনে। এবারের সেঞ্চুরিটি অনায়াসেই ডাবল সেঞ্চুরিতে রূপ দেবেন, এমনই মনে হচ্ছিল। চারে নেমে কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ইনিংসটি (ভিভ রিচার্ডসের সেই বিখ্যাত ১৮৯) ছিল আরও নাগালে। একটিও হয়নি অবশ্য। বেন লিস্টারের ফুলটসে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে থামেন স্টোকস। এর আগে স্টোকসের ঝড়টা সবচেয়ে বেশি গেছে লকি ফার্গুসনের ওপর দিয়ে। ৩০ বলে তাঁর কাছ থেকে ৫৬ রান তুলেছেন স্টোকস। তাঁর এমন ব্যাটিংয়ে ম্লান হয়ে গেছে বোল্টের ৫ উইকেটও।ডেস্টোকস যেমন বিশ্বকাপে নিজের প্রস্তুতিটা দারুণভাবে সেরেছেন। অন্যদিকে ম্যালান উড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্বকাপ দলে তাঁর জায়গা নিয়ে ওঠা শঙ্কার বাতাস। সেঞ্চুরিটাও শুধু পাননি এই বাঁহাতি। ৫২ বলে ফিফটি করেছিলেন, বোল্টের ডাউন দ্য লেগের বলে কট বিহাইন্ড হয়েছেন ৯৫ বলে ৯৬ রানের ইনিংস খেলার পর। ১২টি চারের সঙ্গে তিনি মারেন ১টি ছক্কা।ম্যালান ফেরার পর জস বাটলারের সঙ্গে স্টোকসের জুটিতে আসে ৪৬ বলে ৭৮ রান, লিয়াম লিভিংস্টোনের সঙ্গে স্টোকস যোগ করেন আরও ৪৬ রান। স্টোকস ফেরার আগে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ৩৪৮ রান। সেই তারাই গুটিয়ে গেছে ৩৬৮ রানেই, ইনিংসে তখনো বাকি ১১টি বল। তবে এটিই বলে দেয়, ইংল্যান্ড এখনো খেলছে আগের সেই আগ্রাসী অ্যাপ্রোচেই।ম্যাচ জিততে গেলে নতুন রেকর্ড গড়তে হতো নিউজিল্যান্ডকে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এর আগে কোনো দলই এত রান তাড়া করে জেতেনি। তবে রান তাড়ার কোনো পর্যায়েই মনে হয়নি, কিউইরা তেমন কিছু করতে পারে। এক গ্লেন ফিলিপসের ৭৬ বলে ৭২ রানের ইনিংস ছাড়া তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু নেইও তাদের ব্যাটিংয়ের। ৩৭ রানেই ৪ উইকেট হারানোর পর ড্যারিল মিচেল, রাচিন রবীন্দ্র ও কাইল জেমিসনকে নিয়ে ব্যবধান একটু কমান ফিলিপস। স্টোকসের ব্যাটিং প্রদর্শনীর দিনে ইংল্যান্ডের ৬ বোলারের ৫ জনই পেয়েছেন উইকেটের দেখা। ক্রিস ওকস ও লিয়াম লিভিংস্টোন নেন ৩টি করে উইকেট।ইংল্যান্ডের ইনিংস থেমেছিল ১১ বল বাকি থাকতে, ১১ ওভার বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct