আপনজন ডেস্ক: ত্রিশ হচ্ছে সেই বয়স যখন থেকে জৌলুশ ধরে রাখতে যুদ্ধের শুরু।এই সময় থেকে ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন কমতে থাকে। দেখা দেয় ত্বকের শুষ্কতা, বলিরেখাসহ নানা সমস্যা। আবার এত দিনের অনাদরের ফলও এ সময় থেকে ধীরে ধীরে দেখাতে শুরু করবে ত্বক। ফলে ত্বকের যত্নে ত্রিশ বছর থেকে পরের সময়গুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় অবহেলা না করে সচেতন হতে হবে। যাঁরা ত্রিশে পা রেখেছেন তাঁরা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন দিন দিন ত্বকের আর্দ্রতা কমছে। বাড়ছে মৃত কোষ। আর মরা কোষ মানেই ত্বকের জেল্লা কমে যাওয়া। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের সিবাম উৎপাদন কমতে থাকে। সিবাম ত্বক মসৃণ করে ও আর্দ্রতা ধরে রাখে। তাই আপনার ত্বক যদি স্বাভাবিকভাবে শুষ্ক না হয়েও থাকে তবুও খসখসে ভাব দেখা দিতে পারে। আমাদের ত্বক প্রোটিন দিয়ে তৈরি। আর এই প্রোটিন ত্বকের নমনীয়তা ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখে। কিন্তু ত্রিশের পর থেকে ত্বকে এই প্রোটিনের উৎপাদন কমে যায়। তা ছাড়া সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের এই প্রোটিন উৎপাদন ব্যাহত করে। যার কারণে ত্বকে বলিরেখা পড়তে থাকে। ত্রিশের পর অনেকেই লক্ষ্য করেন যে গালের দুপাশে কালচে ছোপ ছোপ দাগ স্পষ্ট হতে শুরু করছে। এর কারণ হচ্ছে, বছরের পর বছর সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব। এই বয়সে মানসিক চাপের কারণেও ত্বক ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারে। অফিসের কাজ, পরিবারের দেখভাল, মাতৃত্ব, নিদ্রাহীনতা এসব কিছু থেকে তৈরি হওয়া মানসিক চাপ ত্বকের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তবে জীবনযাপন পদ্ধতি বদলালে এবং কিছু বিষয় মেনে চললে দীর্ঘদিন ত্বক সুন্দর রাখা যাবে।
ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে জলসমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। ফল ও সবজির পাশাপাশি স্যুপ রাখতে পারেন খাদ্যতালিকায়। এর পাশাপাশি শর্করাজাতীয় খাবার যাতে কম খাওয়া হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সব ধরনের ত্বকের জন্যই এক্সফলিয়েশন জরুরি। এর ফলে ত্বকের ওপরে জমা হওয়া মারা কোষ সহজেই ঝরে যায়, আর ত্বক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের এক্সফলিয়েটর পাওয়া যায়। এমন এক্সফলিয়েটরের খোঁজ করুন যাতে হাইড্রক্সি অ্যাসিড রয়েছে। এর বাইরে রোজ গোসল করার সময় তোয়ালে দিয়ে শরীর রগড়ে নিলে উপকার পাবেন। ময়েশ্চারাইজার ত্বক আর্দ্র রাখে। এর ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল থাকে। এ ছাড়া এর প্রলেপ থাকলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে কিছুটা হলেও ত্বক সুরক্ষিত থাকে। তাই ত্বকের ধরন বুঝে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। দৈনিক ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম ত্বকের অনেক সমস্যাই কমিয়ে দেবে। একে তরতাজা ও প্রাণবন্ত রাখতে পর্যাপ্ত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। এখন থেকেই ভালো মানের অ্যান্টি এজিং ক্রিম ব্যবহার করুন। তবে এমন ক্রিম বেছে নিতে হবে যাতে রয়েছে রেটিনয়েড, ভিটামিন সি, হাইড্রক্সি অ্যাসিড ও নিয়াসিমাইড। কারণ এসব উপাদানসমৃদ্ধ নাইট ক্রিম ত্বকের বলিরেখা কমাতে, কোলাজেন বৃদ্ধিতে, জেল্লা বাড়াতে এবং ত্বক আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। এখন থেকে রোদে বাইরে বের হলে ত্বকে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে বাধা দেয়। তাই ত্বককে টান টান ও সুন্দর রাখতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct