জয়প্রকাশ কুইরি, পুরুলিয়া, আপনজন: পুরুলিয়ায় সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার ১০ দিনের মাথায় কিনারা করলো পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। সম্প্রতি গত ২৯ ই অগাস্ট ডাকাতির ঘটনার দিনে ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু সূত্র পেয়েছিলো পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। সেই সূত্র থেকেই স্পষ্ট হয়েছিল পুলিশ এই ঘটনায় যোগ রয়েছে বিহার ও ঝাড়খন্ডে। ঘটনার দিন থেকেই পুরুলিয়ার ঝাড়খন্ড সীমান্তে ন্যাকা তল্লাশি সহ একাধিক ভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে গিয়েছিলো পুরুলিয়া জেলা পুলিশের টিম। একের পর এক ইনপুট সংগ্রহ করে চলছিল তদন্ত। শুক্রবার মধ্যরাতে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলার সুদামডি থেকে এই ঘটনায় অন্যতম কিপিং কারণজিৎ সিং সিধু কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বাড়ি ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলার চাষ নালার কাছে পাথরডি এলাকায়। শনিবার তাকে পুরুলিয়া জেল আদালতে পেশ করা হয়। এই ঘটনায় সহযোগী হিসাবে কাজ করা বিকাশ কুমার কে সম্প্রতি দিন কয়েক আগেই দিল্লির নয়ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বাড়ি বিহারে। সে এখন পুলিশ হেপাজতে রয়েছে। ধৃত করণজিৎ ও বিকাশ কুমার কে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করা হবে। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বান্দ্যোপাধ্যায় বলেন ধৃত করণজিৎ কে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে ওই ডাকাতের ঘটনায় মোট ৭ জন ছিল। তার মধ্যে সে একজন। বাকি নামগুলো পাওয়া গেছে তাদের খোঁজে তল্লাসি চলছে। জেলা পুলিশের টিম বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে কাজ করছে। রানাঘাটের ডাকাতের সঙ্গে সরাসরি এই ঘটনার যোগ না থাকলেও দুটো ঘটনার মাস্টার মাইন্ড কিন্তু একজন এবং সংশোধনাগারে বসেই এই ছক বসা হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। গত ২৯ ই অগাস্ট পুরুলিয়ার নামোপাড়ার একটি নাম করা সোনার দোকানে ৮ কোটি টাকার ডাকাতির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। মোটর বাইকে করে আসা ৭ জন দুষ্কৃতী প্রায় আধ ঘন্টার মধ্যে অপারেশন সেরে পুরুলিয়ার সীমানা পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে গা ঢাকা দেয়। বিহার ও ঝাড়খণ্ডের ওই দুষ্কৃতীদের নিখুঁত অপারেশনের সিসিটিভি র হার্ড ডিস্ক খুলেও নিয়ে যায় তাঁরা ফলে এই ঘটনার কিনারা করা কিন্তু খুব একটা সহজ কাজ ছিল না। যদিও শহর পুরুলিয়ার বিভিন্ন রাস্তায় থাকা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে পুলিশ। ঘটিনার পরের দিনই পুলিশ ৩০ ই অগস্ট তদন্তে নেমে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের তত্ত্বাবধনে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট গঠন করে। একই দিনে রানাঘাটের ঘটনা ঘটে। ফলে সেদিনই পুরুলিয়া জেলা পুলিশ একটি দল রানাঘাটে টিম পাঠায়। ওই ঘটনার সঙ্গে পুরুলিয়ার ডাকাতির ঘটনার সরাসরি যোগ না থাকায় জেলা পুলিশের টিম আবার ফিরে আসে। রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা টিমের ইনপুট থেকে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ জানতে পারে রানাঘাট ও পুরুলিয়া দুটো ডাকাতের ঘটনার মাস্টার মাইন্ড একজন। তার নামও পেয়ে গেছে পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে গোপনীয়তা অবলম্বন করে একেবারে উৎস স্থলে পৌঁছাতে চাইছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। যদিও সোনার দোকানে ডাকাতি হওয়া সোনা এখনও উদ্ধার করতে পারে নি পুলিশ। এখনও অধরা বাকি দুষ্কৃতীরা। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ কিনারা হবে সেদিকে তাকিয়েই পুরুলিয়া জেলার সাধারণ মানুষ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct