সেখ রিয়াজুদ্দিন, বীরভূম: খয়রাশোলে পঞ্চায়েত ভোটের আগের দিন বিবদমান দুই গোষ্ঠী তথা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী এবং ব্লক সাধারণ সম্পাদক মৃনাল কান্তি ঘোষ সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘোষণা করেন আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব বা গোষ্ঠী কোন্দল নেই, সবাই তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক, একসাথে কাজ করছি ও সকলকেই দলীয় প্রতীক পাওয়া প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু সে বার্তা সেখানেই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে। চোরাস্রোত যে বহমান তা বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত। এজন্য জেলার বুকে খয়রাশোল ব্লক এলাকায় সবথেকে বেশি সংখ্যক নেতৃত্ব দলীয় নির্দেশ অমান্য করে বোর্ড গঠন করে ফেলায় তারা দলের কুনজরে পড়েছেন। এমনকি এবিষয়ে আগামী ১০ তারিখে জেলা নেতৃত্বের সাথে কুনজরে থাকা নেতাদের বসার কথা বা জবাবদিহি করতে হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। সেইরূপ চিত্র ফের একবার দেখা গেল পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনের ক্ষেত্রে। এদিন সকাল থেকেই ছিল চাপা গুঞ্জন, ছিল টানটান উত্তেজনা, তবে বিরোধী শিবির নিয়ে নয়, তৃণমূল বনাম তৃণমূল নিয়ে। একপক্ষ ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে তো অন্যপক্ষ সেচ দপ্তরের মাঠে ‘খেলা হবে’ র ঘুটি সাজাতে তথা রণকৌশল নির্ধারণে ব্যতিব্যস্ত। উল্লেখ্য খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন ২৯ টির মধ্যে ২১ টি তৃণমূল ধরে রাখে বাকি ৮ টি আসন বিজেপি ছিনিয়ে নেয়। গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে ১০ টি পঞ্চায়েতের মধ্যে বিজেপি একটি পঞ্চায়েত তৃণমূলের কাছ থেকে দখল করে নেয়। জেলা পরিষদের ৩ টি আসন ধরে রাখতে সক্ষম হন তৃণমূল। স্থায়ী সমিতি গঠনে বিজেপির ৮ সদস্য উপস্থিত থাকলেও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ গঠনের সময় তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় দ্বন্দ্ব যা ভোটাভুটি পর্যন্ত গড়ায়। বিজেপি সভা ছেড়ে বেরিয়ে আসে।সূত্রের খবর ব্লক সভাপতির শিবিরে ২ জন জেলা পরিষদ সদস্য, ৫ জন সমিতির সদস্য এবং ১ জন প্রধান ছিলেন।অন্যদিকে বিক্ষুব্ধ শিবিরে ছিলেন ১ জন জেলা পরিষদ সদস্য,১৬ জন সমিতির সদস্য এবং ৮ জন প্রধান।সেই হিসেবে বাকি স্থায়ী সমিতি গঠনের ক্ষেত্রে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রার্থীদেরকে সমর্থন করেন সকলেই। ভোট গ্রহনের পূর্বেই ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী একটি তালিকা দেখিয়ে বলেন এটা জেলা নেতৃত্বের পাঠানো পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনে নাম ও পদের তালিকা। কিন্তু সেখানে জেলা কমিটির প্যাড বা কোনো সিলমোহর না থাকায় সেটাকে ভূয়ো বলে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী আমল দিতে চাননি। দলের নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে দলীয় শৃঙ্খলা না মানা এবং ভোটাভুটি হওয়ার জন্য ব্লক সভাপতি মাঝপথেই বেড়িয়ে পড়েন। নেতৃত্বের অভাবে সমর্থকরাও অবস্থা দেখে বিমর্ষ হয়ে পড়ে।
এদিকে একদা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শহীদ দীপক ঘোষের স্ত্রী সমিতির নির্বাচিত সদস্য কিন্তু স্থায়ী সমিতি গঠনের ক্ষেত্রে তার নাম জেলা থেকে পাঠানো তালিকায় ছিল না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই।যদিও এবিষয়ে তৃণমূল ব্লক নেতৃত্বের অনেকেই ফোন ধরেননি অনেকে আবার মুখ খুলতে চাননি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct