আপনজন ডেস্ক: ‘ডু অর ডাই’-ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি আফগানিস্তান। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ২৯১ রান তোলে লঙ্কানরা। সুপার ফোরে যেতে ৩৭.১ ওভারে জয় পেতে হতো আফগানদের। ৩৭.১তম ওভার শেষে ২৮৯/৯ স্কোর নিয়ে হাল ছেড়ে দেয় আফগানরা। কিন্তু এই সমীকরণ বাদেও সুপার ফোরে যাওয়ার সুযোগ ছিল মোহাম্মদ নবী-রশিদ খানদের। ৩৭.৪ ওভারে ২৯৫ রান করলেও সুপার ফোরে যেতো আফগানিস্তান। অর্থাৎ ৩৭.১তম ওভারে মুজিব উর রহমান আউট হওয়ার পরও তিন বলে একটি ছক্কা মারলেই চলতো। গণমাধ্যমের খবর, সেই সমীকরণগুলো ক্রিজে থাকা ক্রিকেটারদের জানাননি আফগানিস্তানের ‘টিম অ্যানালিস্ট’ মহসিন শেখ। আর তাই ম্যাচ হারায় এই বিশ্লেষককে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছেন আফগান সমর্থকরা। মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার দেয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তাণ্ডব চালাতে থাকেন আফগান ব্যাটাররা। ৩৬ ওভারে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ২৭৭ রান। অর্থাৎ, ৩৭.১ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছাতে ৭ বলে ১৫ রান দরকার ছিল।স্ট্রাইকে ছিলেন রশিদ খান। প্রথম দুই বলে কোনো রান না পেলেও তৃতীয় বলে চার মারেন রশিদ। সুপার ফোরের টিকিট পেতে তিন বলে ১১ রান বাকি থাকা অবস্থায় পরপর দু’টি চার মারেন রশিদ। এতে ৩৭ ওভার শেষে আফগানদের স্কোর দাঁড়ায় আট উইকেটে ২৮৯ রান। অর্থাৎ এক বলে তিন রান করলেই সুপার ফোর নিশ্চিত। তবে ৩৭.১ ওভারের পরও আফগানিস্তানের সামনে জয়ের সুযোগ ছিল। ৩৮ তম ওভারের প্রথম বলে মুজিব উর রহমান কোনো রান না পেলেও জয়ের জন্য হাতে আরো বল পেতো আফগানিস্তান। তারই মধ্যে প্রথম বলে আউট হয়ে যান মুজিব। তিনি আউট হয়ে গেলেও আফগানিস্তান যদি পরবর্তী তিন বলের মধ্যে ২৯৫ রান তুলে ফেলত, তাহলে তারা সুপার ফোরে উঠে যেতো। নেট রানরেটের হিসাব অনুযায়ী, ৩৮.১ ওভারে গিয়েও আফগানরা ম্যাচ জিতলে এশিয়া কাপে টিকে থাকতো।
সেক্ষেত্রে তাদের প্রথমে শ্রীলঙ্কার স্কোরে (২৯১) পৌঁছাতে হতো। তারপর একটি ছক্কা মেরে ২৯৭ রান তুলতে পারলেই সুপার ফোরের টিকিট পেতো। আবার ৩৭.৫ ওভারে আফগানিস্তানের স্কোর যদি ২৯৫ হতো, তাহলে শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তানের নেট রানরেট সমান হত। সেক্ষেত্রে টসের মাধ্যমে নির্ধারিত হত যে কারা সুপার ফোরের চতুর্থ দল হবে। তবে সম্ভাবনার শেষ হিসাবটুকু নিয়ে কোনো ধারণাই ছিল না রশিদদের। কারণ টিম ম্যানেজমেন্টের তরফে কোনো বার্তা পাননি তারা। শেষ পর্যন্ত ৩৭.৪ ওভারে ২৮৯ রানে অল-আউট হয়ে ম্যাচটাই হেরে যায় আফগানিস্তান। ২ রানের জয়ে সুপার ফোরে পৌঁছে শ্রীলঙ্কা।ম্যাচের পর টিম অ্যানালিস্ট মহসিন শেখকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (টুইটার) একজন লিখেন, ‘এই বিশ্লেষককে বরখাস্ত করা উচিত। তিনি কীভাবে জানতেন না যে ৯ উইকেট পড়ার পরও তাদের সুযোগ ছিল! যদি ফজল (হক ফারুকি) একটি সিঙ্গেল নিতেন এবং রশিদ ছক্কা হাঁকাতেন তাহলেই তারা সুপার ফোরে পৌঁছে যেতো। কিন্তু তারা এই সিনারিও সম্পর্কে জানতেনই না। খুবই হতাশাজনক!’ এক ব্যক্তি চিৎকার করছেন, এমন একটি ভিডিও পোস্ট করে একজন লিখেছেন, ‘ফজলহক ফারুকি যখন জানবেন যে, সেও ম্যাচ জেতাতে পারতো (তখন এভাবে চিৎকার করবেন)।’ রশিদ খানের কিছু হতাশার ছবি পোস্ট করে এক অ্যাকাউন্ট থেকে লেখা হয়েছে, ‘হতভাগা লোক রশিদ খান। শক্ত থাকো। আমরা তোমায় ভালোবাসি।’যা বললেন আফগান অ্যানালিস্ট ম্যাচের পর সমালোচকদের উল্টো এক হাত নিয়েছেন আফগানিস্তানের টিম অ্যানালিস্ট মহসিন শেখ। এক্সে (টুইটার) তিনে লিখেছেন, ‘ম্যাচ পরিচালকদের কাছ থেকে আমরা জেনেছিলাম ৩৭.১ ওভারের মধ্যে জয় না পেলে আমরা সুপার ফোরে পৌঁছাতে পারব না। কি-বোর্ড যোদ্ধা (যারা সমালোচনা করছেন) হওয়া এবং কটুক্তি করা খুব সহজ। আমরা যে মানের ক্রিকেট খেলা দেখিয়েছি, তার প্রশংসা তো কেউ করলো না।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct