হরিয়ানার নূহ জেলায় গত ৩১ জুলাই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্রজমণ্ডল যাত্রাকে কেন্দ্র করে সংহিংসতার পর হরিয়ানা প্রশাসন বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয় একের পর এক বাড়ি। সেই ঘটনার প্রায় এক মাস পরে হিন্দি দৈনিক ভাস্কর-এর সাংবাদিক শিবাঙ্গ সাক্সেনা-র অন্তর্তদন্তমূলক রিপোর্ট ‘আপনজন’-এ তুলে ধরা হল।
পারভীনের দুই ছেলে ২২ বছর বয়সি ইনসাফ এবং ২৫ বছর বয়সী নাসিরকে ১৮ আগস্ট পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ইনসাফ ৮ম পাস এবং একটি মাংসের কারখানায় কাজ করত। দ্বাদশ পাস নাসির বাড়িতেই থাকতেন।পারভিনা বলেন, ‘৩১ জুলাই ইনসাফ সকাল ১০টায় কারখানায় যায় এবং দুপুর ১টায় ঘরে ফেরে। ১৮ আগস্ট রাতে পুলিশ বাড়িতে প্রবেশ করে। বড় ছেলে নিচে ঘুমাচ্ছিল। সেখান থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায়। ছোট ছেলে ওপরের তলায় ঘুমাচ্ছিল। তাকেও নিয়ে গেল। এমনকি আমাদের কোনো কারণও দেওয়া হয়নি।ইনসাফ ও নাসিরের ভাই আকিব বলেন, ‘এসপি সাহেব বলেছিলেন, নিরপরাধদের ভয় পাওয়ার দরকার নেই। গ্রামশূন্য হয়ে গেল, কিন্তু আমরা যাইনি। এখন সারারাত কেউ ঘুমাতে পারে না। সবাই ভীত। পুলিশ একতরফা ব্যবস্থা নিচ্ছে। শুধু মুসলমানদের ছেলেদের তুলে নেওয়া হচ্ছে। সকলের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। গ্রেফতারকৃত হিন্দুরা সহজেই জামিন পেয়ে যায়।নাগিনা গ্রাম থেকে ৫০ বছর বয়সী ফজলনূরকেও তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। সবজি বিক্রি করতেন। তার ঘর তালাবদ্ধ। এই সব মামলা আদালতে আছে। আসামি পক্ষের মামলা লড়ছেন আইনজীবী তাহির হোসেন রূপাদিয়া। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৬১টি এফআইআর নথিভুক্ত হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৩০০ আসামিকে। এর মধ্যে ৯৮% মানুষ মুসলিম।সহিংসতার সাথে জড়িত ছিল না এমন গ্রেপ্তারও হয়েছে। তারা তাদের অফিসে ছিল। সিসিটিভিতে কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। কিছু লোক হরিয়ানা বা উত্তর প্রদেশের। তাদের বিরুদ্ধে 307, 302, 379A এবং 435 ধারা আরোপ করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে মেডিকেল কলেজের গার্ডকে। সেখানকার অধ্যক্ষ লিখিতভাবে জানিয়েছেন, তিনি সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ডিউটিতে ছিলেন।গ্রেপ্তারের বিষয়ে আমরা নূহের ডিএসপি অশোক কুমারের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তের জন্য সিট গঠন করা হয়েছে। এর বিভিন্ন দল কাজ শুরু করেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct