অন্ধের পিরাকী
আব্দুল মুকিত মুখতার (লন্ডন থেকে)
জন্মান্ধ পিরের খবর পেয়ে অনুরক্ত মুরিদ
নিজ আলয়ে নেমন্তন্ন করে খোশআমদিদ।
আনন্দ বন্যায় ভাসছে যেন সবাই বাড়িময়
পীর বলে কথা! কোন প্রকার কমতি উচিত নয়।
শাক শব্জি গোস’ত পোলাও সাজানো থরেথরে
দধি মাখন পায়েস কাবার একটা একটা করে।
স্বহস্তে দিচ্ছে মুরিদ তুলে একটু একটু খাবার
ধীরে ধীরে পির সাহেবও করছেন তা সাবাড়।
এটা ওটা বলছেন তিনি মেন্যু’র দিছেন বর্ণনা
শোনে শোনে খাচ্ছেন তবে চোখে দেখছেন না।
অন্ধ মানুষ! কী করবেন, নির্ভর করে চলেন
সব শেষে বলা হলো, দুগ্ধ দেই! দুগ্ধ খাবেন?
দুগ্ধ কী! চিনি না তো, দেখতে কেমন, বলুন
ঐ যে সাদা বকের মতো থাকে গাভীর ওলুন!
সাদা বক কী, দেখতে কেমন, আমি তো চিনি না
লম্ব গলার পাখি ঐ যে মাছ ধরে খায়, জানেন না!
লম্বা গলা কি রকম, আমি তো কখনও দেখি নাই
গলাটা হচ্ছে কাস্তে মতো, ধান কাটে, যে, তাই।
কাস্তেটা কী, কেমনে চিন’ব, দেখিনি কোনদিন
মুরিদ বললো, এই দেখাচ্ছি, নিজেই দেখে নিন।
দা—এর মতো কাস্তে একটা দিল পিরের হাতে
ধারা’ল তায় দানাকাটা, হাত কেটে যায় তাতে।
ভয়ের ছুটে পির বললেন, রক্ষা করো আমাকে
এমন দধি খেতে চাই না, যেথায় কাটা থাকে।
তোমরা আমায় মারতে চাও? উদ্দেশ্যটা কী
খেতে চাই না নেমতন্ন, আর নহে তো পিরাকী।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct