এম মেহেদী সানি, হাবড়া, আপনজন: উত্তর ২৪ পরগণা জেলার হাবড়া এলাকার কৃষকরা সোনালি আঁশে ভরসা হারাচ্ছেন । অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বৃষ্টির পরিমাণ কম হওয়ায় শুরুতেই পাট চাষে ব্যাঘাত ঘটেছিল, শেষটাও সুবিধার হলো না, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় পাঠ পঁচাতে সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা । তুলনামূলকভাবে এবার পাটের বাজারদর অনেকটাই কম বলে জানা গিয়েছে । কৃষকরা এখন পাটের কাঙ্ক্ষিত মূল্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন । বর্তমানে তেল সারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে ফসলের সঠিক দাম না পেলে লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই তুলতে পারবেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পাট চাষিরা । ঝনঝনিয়া গ্রামের পাট চাষী প্রবল মিত্র জানান, ‘পাট চাষের শুরু থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত সমস্যার শেষ নেই, তারপর আবার পাট বিক্রির জন্য পাট ব্যবসায়ীদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, দুই একজন ব্যবসায়ীকে পেলেও দাম বলছে সাড়ে তিন হাজার - চার হাজার টাকা প্রতি কুইন্টাল ।’ হতাশা এবং আক্ষেপের সুরে প্রবল বলেন, ‘পাটের দর কমপক্ষে আট-দশ হাজার টাকা প্রতি কুইন্টাল না হলে হাজার হাজার টাকা লস হবে, জমি বেঁচে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না ।’ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে এবার উন্নতমানের তন্তু পাওয়া যাচ্ছে না, বহু পাট মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাহিদা অনেকটাই কমেছে । তবে ভালো তন্তু হলে পাঁচ হাজার টাকা প্রতি কুইন্টাল পর্যন্ত পাট ক্রয় করা হচ্ছে ।পাটের কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় চাষীদের সমস্যা প্রসঙ্গে হাবড়া-১ ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা কুসুম কমল মজুমদার বলেন, ‘চাষিরা সমস্যায় পড়লে, পাটের দর নিয়ে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কালোবাজারির অভিযোগ থাকলে আমাদেরকে জানাতে পারেন, আমরা ব্যবস্থা নেব, তবে সরকারিভাবে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে পাট ক্রয় করা হয় না, কেন্দ্রীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে জেসিআই-এর মাধ্যমে পাট ক্রয় করে। সেখানে ৫২৫০ টাকা এবং ৫৫৫০ টাকা দরে প্রতি কুইন্টাল পাট ক্রয় করছে । তবে হাবড়া-১ ব্লকে জেসিআই-এর পাট ক্রয় কেন্দ্র নেই, কাছাকাছি যে দুটি পাট ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে তা হল দেগঙ্গা এবং স্বরূপনগর ব্লকে । সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে হাবড়া-১ ব্লকে ১৪০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে । তবে পাট চাষে বিপুল খরচের কারণে চাষিরা লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct