আপনজন ডেস্ক: বিচ্ছেদ, শোক বা কষ্টের যে কারণই থাকুক না কেন, তা প্রত্যেক মানুষের দেহে অনেকটা একই রকম প্রভাব ফেলে। যেকোনো বিচ্ছেদই মানুষকে কষ্ট দেয়। বিচ্ছেদের পর মনের মধ্যে সন্দেহ ও সংশয়ের উদ্রেক হয়। কেন এমনটা হলো?এই প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। পেটের ভেতরে একধরনের অস্বস্তিকর অনুভূতি হয়।  এসব অনুভূতি বিশ্লেষণ করে এর পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করছেন বিজ্ঞানীরা। স্নায়ুবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিচ্ছেদের পর প্রায় সবাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এর প্রভাব শরীরেও পড়ে। এর পেছনে মস্তিষ্কের রাসায়নিক উপাদান দায়ী। মস্তিষ্কের রাসায়নিক উপাদান সেরেটোনিন, অক্সিটোসিন ও ডোপামিন। সেরেটোনিন সুখের অনুভূতি উদ্রেক করে। খারাপ লাগলে অক্সিটোসিন। ভালো কাজে অনুপ্রাণিত হলে মস্তিষ্ক ডোপামিন নিঃসরণ করে। এই তিন উপাদানের ওপর ব্যক্তির ভালো-খারাপ লাগা নির্ভর করে। এই তিন উপাদানের মাত্রা বেশি হলে মানুষ ভালো বোধ করে। আর কম হলে ব্যক্তির খারাপ লাগা অনুভূত হয়। এর মধ্যে প্রধান উপাদান ডোপামিন, যাকে চূড়ান্ত প্রাকৃতিক ওষুধ বলা হয়। হৃদয় ভাঙার প্রভাব নিয়ে ব্রাউন ১৫ কিশোরের ওপর গবেষণা করেন। অনাকাঙ্ক্ষিত বিচ্ছেদের ফলে কিশোরদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপে কী পরিবর্তন হয় তা পর্যবেক্ষণ করেন। তাদের প্রাক্তন সঙ্গীদের ছবি দেখানো হয় এবং তখন মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়া স্ক্যান করা হয়। তাতে দেখা যায়, ডোপামিনের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। এই মাত্রাকে ব্রাউন কোকেন আসক্তির সঙ্গে তুলনা করেন। কাছের কেউ সঙ্গে থাকলে আনন্দদায়ক অনুভূতি হয়। তাদের সঙ্গে বিচ্ছেদে সেই অনুভূতি নাই হয়ে যায়। কিন্তু ছবি দেখার ফলে অন্য ধরনের এক প্রাপ্তির খোঁজে মস্তিষ্কের ডোপামিনের নিঃস্বরণ অনেক বেড়ে যায়। আসলে মন ভাঙার ক্ষেত্রে সবার অভিজ্ঞতা আলাদা হলেও সবার দেহের ওপর প্রভাব অনেকটা একই রকম। গবেষণায় দেখা যায়, এই সময়ে শারীরিক ব্যথার সঙ্গে যুক্ত মস্তিষ্কের অঞ্চলগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। কেউ প্রত্যাখ্যাত হলে মস্তিষ্কের একটি অংশ সক্রিয় হয়, যাকে ইনসুলার কর্টেক্স বলা হয়। এই অংশ ব্যাথার সময় যন্ত্রণার প্রতিক্রিয়া জানায়—মৌমাছি হুল ফোটালে মস্তিষ্ক যেরকম সক্রিয় হয়। মানসিক উদ্বেগ, মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরার মতো লক্ষণ প্রকাশ করে। অনেক সময় বিচ্ছেদের ফলে বুকে ব্যাথা অনুভূত হয়, যাকে ‘ব্রোকেন হার্ট সিম্পটম' বলা হয়। ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের সিনিয়র কার্ডিয়াক নার্স সিন্ডি জোদার বলেন, এর লক্ষণগুলি হল শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা, যা হার্ট অ্যাটাক বা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। গবেষণায় বলা হয়, প্রতিবছর যুক্তরাজ্যের ৫ হাজার মানুষের মধ্যে এ ধরনের লক্ষণ দেখা যায়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সুস্থ বোধ করেন। 

শ্বশুরবাড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত জামাই

তালডাংরা উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন সিপিআইএম প্রার্থী

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তায় নতুন প্রহরী: রোবট কুকুর!