আপনজন ডেস্ক: হরিয়ানার নূহ জেলায় গত ৩১ জুলাই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্রজমণ্ডল যাত্রাকে কেন্দ্র করে সংহিংসতার পর হরিয়ানা প্রশাসন বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয় একের পর এক বাড়ি। সেই ঘটনার প্রায় এক মাস পরে হিন্দ দৈনিক ভাস্কর-এর সাংবাদিক শিবাঙ্গ সাক্সেনা-র অন্তর্তদন্তমূলক রিপোর্ট ‘আপনজন’-এ তুলে ধরা হল। সহিংসার প্রায় একমাস পর নুহের কাছে পৌঁছেছে। তদন্তে আমরা পাঁচটি জিনিস জানতে পেরেছি। নূহ সহিংসতার পর প্রশাসন ১২০৮টি বাড়িঘর ও দোকানপাট ভেঙে দিয়েছে এবং অনেক জায়গায় নোটিশও দেওয়া হয়নি। ৭ আগস্ট পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্ট প্রশাসনের পদক্ষেপে স্থগিতাদেশ দেয়। ততক্ষণে ৩৫৪ জনের স্থায়ী বাড়িঘর বা দোকানপাট ধ্বংস হয়ে গেছে। যার মধ্যে ২৮৩টি মুসলমান এবং ৭১টি হিন্দুদের। এগুলি বেদখলের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে হরিয়ানা প্রশঅসনের দাবি। প্রিয়দর্শিনী যোজনায় ভেঙ্গে যাওয়া দুটি বাড়ি পাওয়া গেছ্ িআদালতের স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও কিছু বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। লোকজন বলছেন, বাড়ি ভাঙার আগে তাদের জিনিসপত্র বের করার সময়ও দেওয়া হয়নি। সহিংসতার ক্ষেত্রে ৬১টি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। ৩০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৯৪ জন মুসলমান এবং মাত্র ৬ জন হিন্দু। হিন্দুদের মধ্যে ৬ অভিযুক্তের সবাই জামিন পেয়েছেন। ৩১ জুলাই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্রজমণ্ডল যাত্রার সময় নুহতে সহিংসতার পরে, প্রশাসন মোট ১২০৮টি বাড়ি, কংক্রিট এবং কাঁচা দোকান বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলে। দাঙ্গায় জড়িত থাকার কারণে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে হরিয়ানা প্রশাসনের দিাবি। ৪ঠা আগস্ট থেকে ৭ই আগস্ট পর্যন্ত বুলডোজিং চলতে থাকে। প্রশাসনের বুলডোজার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়েছে ফিরোজপুর, ঝিরকা ও নাগিনায়। আমরা এখান থেকেই তদন্ত শুরু করেছি। আমরাও নলহারে গিয়েছিলাম, যেখানে সহিংসতা শুরু হয়েছিল। এই তিনটি এলাকা থেকে সর্বোচ্চ গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। প্রথম দিনে যাদের দোকান ভাঙা হয়েছে তাদের মধ্যে আবদুল রসেদ ওরফে নবাবও রয়েছেন। নূহ মেডিকেল কলেজের সামনে তার জমিতে বিশটি দোকান গড়ে উঠেছে। নবাব বলেন, ‘দোকান ভেঙ্গে আমার এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’ মোহাম্মদ আরিফ, আব্দুল রশিদ ওরফে নবাব ও হাজী শরীফের পারিবারিক জমির বিপরীতে রাস্তার দুপাশে নূহ মেডিকেল কলেজ শহীদ হাসান খান মেওয়াতি কলেজ বা নূহ মেডিকেল কলেজ। এসব জমিতে নবাবের ২০টি, আরিফের ২২ টি এবং হাজী শরীফের ১১টি দোকান ছিল। কিছু দোকান তিনজনের সংসার চালাত, বাকিগুলো ভাড়ায়। আরিফ, নবাব ও শরীফের মতে, তাদের ৫৩টি দোকানের মধ্যে ৪০টি প্রশাসন অবৈধভাবে ভেঙে দিয়েছে। ইতিমধ্যে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সিদ্ধার্থ দাহিয়া অনুসারে ৩৮টিদোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫% দোকানদার ছিল হিন্দু এবং ৪৫% মুসলমান। এর বাইরে ১০টি অস্থায়ী দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct