নিজস্ব প্রতিবেদক, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: উত্তর ২৪ পরগনা দত্তপুকুর থানার নীলগঞ্জ এলাকার বেআইনি বাজি কারখানাতে বিস্ফোরণে মুর্শিদাবাদ জেলার কমপক্ষে পাঁচজন ব্যক্তির মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে মৃত ব্যক্তিদের নাম আমজাদ শেখ (২০) ছোটন শেখ (১৭), রনি শেখ, কলেজ শেখ (৪০) এবং জেরাত শেখ। যদিও গ্রামের অনেকেই জেরাতের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করতে পারেননি। তাদের ধারণা জেরাত গুরুতর আহত অবস্থায় অন্য কোথাও পালিয়ে গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে -মৃত আমজাদ এবং ছোটন জেরাতের নিজের ছেলে এবং রনি শেখ জেরাতের ভাই ইশা শেখের ছেলে।মৃত ব্যক্তিদের সকলের বাড়ি মুর্শিদাবাদের সুতি থানার নতুন চাঁদড়া গ্রামে। কয়েকমাস আগে এরা অতিরিক্ত উপার্জনের আশাতে দত্তপুকুরে বাজির কারখানাতে কাজ করতে গিয়েছিল বলে জানা গেছে। যদিও মৃত্যুর এই খবর এখনও সরকারিভাবে সুতি থানাতে এসে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন থানার এক শীর্ষ আধিকারিক। নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক গ্রামবাসী জানিয়েছেন-জেরাত গ্রাম থেকে সকলকে দত্তপুকুরের বাজি কারখানাতে কাজ করার জন্য নিয়ে গিয়েছিল। যদিও কাজে নিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে কি কাজ করতে হবে তাদেরকে জানানো হয়নি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য জেরাতের দাদা ঈশা খান নিমতিতা বিস্ফোরণ কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বর্তমানে এনআইএ-র হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল হেফাজতে রয়েছেন। জেরাতের বিরুদ্ধেও একাধিক অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বছর কয়েক আগে জেল থেকে ছাড়া পান জেরাত। তারপর নিজের স্ত্রী আসমা বিবিকে নিয়ে সে গ্রাম ছেড়ে চলে যান। নাসিমা বিবি নামে গ্রামের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন,’ জেরাত গ্রামে না থাকলেও ফোনের মাধ্যমে গ্রামের লোকেদের সাথে যোগাযোগ রাখত। কলেজ শেখের বোন সুলতানা বিবি বলেন ,আমার দাদাকে রাজমিস্ত্রির কাজ দেব বলে নিয়ে গিয়েছিল। মাসে ১৮ হাজার টাকা বেতনও দিত। কিন্তু দাদা কি কাজ করত আমরা কেউ জানতাম না। এখন শুনছি সে বিস্ফোরণে মারা গেছে।বোমা বিস্ফোরণের খবর পেয়ে সোমবার সকালে জেরাতের স্ত্রী আসমা বিবি নতুন চাঁদরা গ্রামে ফিরেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, মোহন শেখ নামে এক ব্যক্তি আমার দুই ছেলেকে দত্তপুকুরে কাজে নিয়ে গিয়েছিল। তবে আসমার এই অভিযোগ মানতে নারাজ গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দা।তাদের বক্তব্য-একমাত্র জেরাতই বাজিরকারখানাতে কাজ করানোর জন্য গ্রাম থেকে ছেলেদেরকে বাইরে নিয়ে যেত।সুতি থানা সূত্রে জানা গেছে-কয়েকজনের মৃত্যুর খবর ‘নিশ্চিত’ হওয়ার পর নতুন চাঁদরা গ্রাম থেকে বেশ কিছু লোক বারাসাতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। তবে সোমবার সকাল পর্যন্ত কোনও পরিবারের তরফ থেকে পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct