জিয়াউল হক, চুঁচুড়া, আপনজন: কেন্দ্র সরকারের চাকরি হয়েছে, শুধুমাত্র শংসাপত্রের জন্য যোগদান করতে পারছেন না, তাই রাজ্যপালের দ্বারস্থ হলেন চুঁচুড়ার যুবক। চুঁচুড়া দক্ষিণায়ণের বাসিন্দা সায়ন কর্মকার কেন্দ্রীয় সরকারের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (ডিআরডিও) এ পরীক্ষা দিয়ে মেধাতালিকায় এক নম্বরে জায়গা করে নেন। ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন করিয়ে চাকরিতে যোগ দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয় তাঁকে। কিন্তু আটকে গেছে সায়নের চাকরি (Hooghly youth not get DRDO job)। সায়ন জানান, ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে একাধিকবার যাতায়াত করেও মেলেনি ডিপ্লোমার শংসাপত্র। তাঁর চাকরি আটকে আছে জানানোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজের প্যাডে হাতে লিখে একটি শংসাপত্র দেয়। প্যাডে লিখে দিলেও ডিআরডিও তা গ্রহণ করেনি। পরে আবার একটি ছাপা শংসাপত্র দেওয়া হয় যেখানে উপাচার্যের কোনও সই নেই। তাই সেই শংসাপত্রও গ্রহণ করেনি ডিআরডিও।সায়ন বলেন, “২৭ মে ২০২৩ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই। সহ-উপাচার্য, ডিনও নেই। আমার মতো অনেক ছাত্রই পরীক্ষায় পাশ করে বসে আছে। কিন্তু শংসাপত্র পায়নি। আমি শংসাপত্র না পেলে আমার চাকরিটাই হয়তো হবে না। তাই বাধ্য হয়ে রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিলাম। যদিও রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা হয়নি। আমি রাজ্যপালের অফিসে একটি আবেদনপত্র দিয়ে এসেছি যাতে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি সহ রাজ্যের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে উপাচার্য নেই সেখানে দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ করা হয়।
চন্দননগরের কানাইলাল স্কুল থেকে বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে বি-টেক করেন সায়ন। এরপর ২০১৭-১৮ সালে রাজারহাটের ডিরোজিও মেমোরিয়াল কলেজ থেকে ফটোগ্রাফি অ্যান্ড ভিডিও প্রোডাকশন নিয়ে ডিপ্লোমা করেন। তার আগে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন কলেজ থেকে ৬ মাসের সার্টিফিকেট কোর্সও করেন সায়ন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডিআরডিওতে টেকনিক্যাল ফটোগ্রাফার টেকনিশিয়ান পদের জন্য পরীক্ষায় বসেন। লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেন। এপ্রিল মাসের ৩ তারিখ পুনেতে রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্সে গিয়ে মৌখিক পরীক্ষা দেন। ৭ মে রেজাল্ট বেরোয়। ১২ মে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের চিঠি আসে।সায়নের মা দীপা কর্মকার বলেন, “সরকারি চাকরির অবস্থা খুবই খারাপ। সায়ন একটা ভালো চাকরি পেয়েও পাচ্ছে না। শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য না থাকায় এই অবস্থা ,রাজ্যপালের কাছে আবেদন করব দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ করে আমার ছেলের মতো আরও অনেক ছেলের সমস্যা দূর করতে। আমি ছেলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা কিছু করতে পারেনি। চিন্তায় রাতে ঘুম হচ্ছে না। কী হবে কিছুই বুঝতে পারছি না।সায়ন জানান, তিনি ২০১৯ সালে পাশ করেছেন। মার্চ মাসে কলেজ থেকে ফরোয়ার্ড লেটার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। তিনমাস আগে পর্যন্ত উপাচার্য ছিলেন। তাও তাকে শংসাপত্র দেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের পর থেকে ডেটা আপলোড করা আছে, কিন্তু অনলাইনেও শংসাপত্র পাওয়া যায়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct