নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত, আপনজন: দত্তপুকুরে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে নামলো সিআইডি। মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশে ঘটনাস্থলে যান রাজ্য পুলিশের আইজি দক্ষিণবঙ্গ। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন সিআইডির ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ সহ বোমা বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিক তদন্তে বেআইনি বিস্ফোরক মজুত ছিল ঘটনাস্থলে তার প্রমাণ মিলেছে। এলাকায় আরো অনেক বেআইনি বাজির স্বয়ংক্রিয় কারখানার হদিশ পেয়েছে সিআইডি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ এই কারখানাগুলোর মালিক স্থানীয় প্রভাবশালী লোকেরা। এখনো পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বারাসাত হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে ৭ জন। এদের মধ্যে শিশু রয়েছে একটি। আহতরা কোন কোন হাসপাতালে আছে তার সন্ধানে পুলিশ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল নার্সিংহোম ও সরকারি হাসপাতালে অফিসার পাঠিয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে,গত ১৬ মে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছিল। মৃত্যু হয়েছিল ৯ জনের। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পাঁচ দিনের মাথায়, ২১ মে রবিবার কলকাতার অদূরে বজবজের একটি বাড়িতে বাজি বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। পর পর দু’জায়গায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, সেই ঘটনার সাড়ে তিন মাস কাটতে না কাটতেই আবারও বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নীলগঞ্জ এলাকা। এ বারও কাঠগড়ায় সেই বেআইনি বাজি কারখানা। এর ফলে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠছে।এগরা ও বজবজে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকেই বেআইনি বাজি উদ্ধারে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু হয়। সে সময় উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরেও পুলিশি অভিযানে উদ্ধার হয়েছিল২০০ কুইন্টাল বাজি। কিন্তু তারপর আর কোন অভিযান হয়নি।
দত্তপুকুর থানার নীলগঞ্জ ফাঁড়ির নীলগঞ্জ ইছাপুর পঞ্চায়েত এলাকায় সে সময় গোপন সূত্র মারফত খবর মেলে, কাঠুরিয়া এলাকায় ইবাদত মণ্ডল নামে এক জনের বাড়িতে প্রচুর বাজি মজুত রয়েছে। সেই খবর পাওয়ামাত্রই বারাসতের এসডিপিওর নেতৃত্বে ইবাদতের বাড়িতে তল্লাশি চালায় দত্তপুকুর থানার পুলিশ। সেখান থেকেই উদ্ধার হয়েছিল বেআইনি বাজি। কিন্তু তারপর আবার সব অভিযান থেমে গিয়েছিল। অথচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন কোনোভাবেই বেআইনি বাজিয়ে মজুদ করা যাবে না এবং তা নজর রাখতে হবে পুলিশকে । লাগাতার চালাতে হবে।স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন আরও সচেতন হলে রবিবার সকালে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, প্রশাসনের ব্যর্থতায় এই সব কারখানা চলে। একাধিক জায়গায় বিস্ফোরক মজুত রাখা হয়েছিল।’’ স্থানীয় এক ব্যক্তি সামসুলের বাড়িতে ইট-পাটকেল ছোড়ে এলাকার ক্ষুব্ধ জনতা। তাঁর বিরুদ্ধেই মূল অভিযোগ। সেই নাকি বেআইনি বাজি কারখানা চালানোর মূল পান্ডা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct