আপনজন ডেস্ক: উত্তর প্রদেশের এক স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শনিবার তার ছাত্রদের তাদের মুসলিম সহপাঠীকে চড় মারার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার এই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে বিরোধী নেতারা ক্ষমতাসীন বিজেপিকে ‘ঘৃণার রাজনীতির’ জন্য তিরস্কার করেন। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য শিক্ষা বিভাগ স্কুলটিকে একটি নোটিশও দিয়েছে।
এক বিদ্বেষমূলক ঘটনাটি মোজাফ্ফরনগর শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে কুব্বাপুর গ্রামের নেহা পাবলিক স্কুলে বৃহস্পতিবার ঘটে। তৃপ্ত ত্যাগী নামে ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা সাত বছর বয়সি এক মুসলিম ছাত্রটিকে চড় মারতে অন্য শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি তার ধর্মের কারণে তাকে স্কুল থেকে বিতাড়িত করতেও তাদেরকে উৎসাহিত করেন। সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওটি শুক্রবার ছড়িয়ে পড়ে। এতে একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা তৃপ্ত ত্যাগিকে ইসলাম বিদ্বেষী মন্তব্য করতে দেখা যায়।
ভিডিওতে ত্যাগিকে বলতে শোনা যায় : ‘আমি ঘোষণা করছি, সকল মুসলিম শিশুকে চলে যেতে হবে।’ তিনি শিক্ষার্থীদেরকে আরো জোরে চড় মারতে বলেন। এর মধ্যেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিষোদগারও চালিয়ে যেতে থাকেন।
শিশুটি যখন শ্রেণীকক্ষে দাঁড়িয়ে আতঙ্কে কাঁদছিল, তখন সেখানে উপস্থিত এক পুরুষকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি ঠিক বলেছেন, তারা শিক্ষাকে ধ্বংস করে ফেলছে।’ শিশুটির মা রুবিনা বলেন, ‘গতকাল আমার ছেলে কাঁদকে কাঁদতে বাসায় ফেরে। সে ছিল সন্ত্রস্ত্র। এভাবে তো শিশুদের সাথে আচরণ করা ঠিক নয়।’ তিনি বলেন, ‘শিক্ষিকা যুক্তি হিসেবে জানিয়েছেন যে আমার ছেলে পড়া না শেখায় এমনটা করেছেন।’
মা বলেন, ‘আমার ছেলে তার পড়াশোনায় ভালো। সে ঠিকমতো পড়ে। শিক্ষিকা কেন এমন আচরণ করলেন, বুঝতে পারছি না। মনে হচ্ছে, ওই শিক্ষিকার দেহ ঘৃণায় ভরা।’
পুলিশ ভিডিওটি শেয়ার না করার জন্য সামাজিক মাধ্যমে অনুরোধ জানানোর পর অনেকে তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে তা সরিয়ে নিয়েছে।
শিশুটির কৃষক বাবা মোহাম্মদ আলতামাশ ওবলেন, দেশে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ছড়িয়ে পড়া ঘৃণার কারণেই তার ছেলের সাথে এমন খারাপ আচরণ করা হয়েছে। স্কুলটিতে হিন্দু ও মুসলিম উভয় ধর্মের শিক্ষার্থী রয়েছে। শিশুটার বাবা জানান, ইতোমধ্যেই ওই শিক্ষিকা ভুল করার কথা স্বীকার করেছেন, ক্ষমাও চেয়েছেন। তবে তিনি তার ছেলেকে ভিন্ন স্কুলে নিয়ে যাবেন। যদিও এই ঘটনায অভিযুক্ত শিক্ষিকা তৃপ্ত ত্যাগি দাবি করেন, ছাত্রটি বাবা মা তার ছেলেকে মাসক করতে বরেছিলেন। কারণ সে হোম ওয়ার্ক ঠিকঠাক করছিল না। আমি প্রতিবন্ধী হওয়ায় অন্য ছাত্রদের তাকে মারার নির্দেশ দিই।
ছাত্রের পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩ এবং ৫০৪ ধারায় তৃপ্ত ত্যাগীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। যদিও এই ধারাগুলি গ্রেফতারে জন্য যথেষ্ট নয়। গ্রেফতারির জারির ধারা রুজু না করলে গ্রেফতার করা যাবে না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct