শামিম মোল্যা, বসিরহাট, আপনজন: বুধবার ৬ টা বেজে ৪ মিনিটে অবতরণের সাথে সাথে চন্দ্রযান-৩ মিশন সফল হওয়ার ছবি দেখে ইসরোর সঙ্গে যুক্ত বসিরহাটের বিজ্ঞানী মানস সরকারের পরিবারসহ বসিরহাটবাসী উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ে। পরিবারের হর্ষ ধ্বনি, মিষ্টিমুখ শুরু হয়ে যায়। আনন্দে মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে।প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৪ জুলাই চাঁদের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছিল ইসরোর চন্দ্রযান-৩। আর দীর্ঘ ৩৯ দিন পর অবশেষে চাঁদের মাটিতে পা রাখতে সক্ষম হয়েছে চন্দ্রযান-৩। উৎক্ষেপণের পর থেকে কখন চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে চন্দ্রযান? এই নিয়ে সময় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছে গোটা দেশ। ইসরোর সেই সমস্ত বিজ্ঞানী যারা এই মিশনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যুক্ত সেরকমই এক বিজ্ঞানী হলেন বসিরহাটের মানস সরকার। যিনি চন্দ্রযান-৩ মিশনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।বসিরহাটের ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তের কলাপোতা গ্রামের সরকার পরিবারের বসবাস। সীমান্তের ইডিন্ডা ইউনিয়ান হাই স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে যাদবপুর থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েন মানস, পরে রাজাবাজার এবং হলদিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রফেসর পদ, রাজ্যপালের কাছ থেকে গোল্ড মেডেল পাওয়া সবটাই ছিল তার ঝুলিতে। সেই সময় আমেরিকা থেকে ডাক পেলেও তিনি যাননি দেশের হয়ে কাজ করবেন বলে। তারপর ২০০৬ সালে ইসরো গবেষণা কেন্দ্রে নিযুক্ত হন। ছেলের এই সাফল্যে মা-বাবার চোখে মুখে একদিকে যেমন আনন্দ অশ্রু। অন্যদিকে চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটিতে পা রাখায় মানসের পরিবারের সঙ্গে আনন্দধারা দেশবাসীর মধ্যেও। বিজ্ঞানীর বাবা প্রাক্তন সেনা কর্মী শচীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “অধীর আগ্রহে বসে ছিলাম, চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযানের ল্যান্ডিং দেখার জন্য। আর এই সফলতা দেখে দেশের সঙ্গে গর্ব হচ্ছে নিজের ছেলের জন্যও। চন্দ্রযান-৩ এর সফলতায় বসিরহাট সহ ভারতের নাম উজ্জ্বল করলো।” এলাকাবাসী তপন মন্ডল বলেন, বসিরহাটের এই বিজ্ঞানীর কৃতিত্ব যথেষ্টই প্রশংসনীয়। আগামী প্রজন্মকে বিজ্ঞানমুখী করতে তার এই কৃতিত্ব যথেষ্ট অনুপ্রেরণাদায়ক। বলা বাহুল্য, ২০০৮ সালে চন্দ্রযান-১, ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ সফলভাবে উৎক্ষেপণ হলেও শেষ মুহূর্তে গিয়ে চাঁদে পা রাখতে পারেনি। হতাশা গ্রাস করেছিল গোটা ভারতীয়দের মধ্যে। বসিরহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নৈহাটির প্রাক্তন সেনা কর্মীর পরিবারের সন্তান মানস সরকার ২০০৬ সালে ইসরোতে গবেষক হিসেবে নিযুক্ত হন। সেখান থেকেই একের পর এক গবেষণায় যুক্ত থেকে চন্দ্রযানের উৎক্ষেপণ দেখলেও শেষ পর্যন্ত তা চাঁদে সফলভাবে পৌঁছতে পারেনি। সেই আফশোষের কথা জানালেন গবেষক পরিবারের মা রঞ্জিতা সরকার, বাবা শচীন্দ্রনাথ সরকার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct