নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁচল, আপনজন: বোর্ড গঠনের ৪৮ ঘন্টা আগে নাটকীয় মোড়।কংগ্রেসের গোপন শিবির থেকে পালিয়ে গেল জয়ী দুই মহিলা প্রার্থী। প্রার্থীদের খোঁজে ঠিক যে মুহূর্তে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে কংগ্রেস,ঠিক সেই সময় স্বামীদের পাশে দাঁড়িয়ে সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও বার্তা দিলেন ওই দুই মহিলা প্রার্থী।সেই ভিডিও বার্তায় তারা অভিযোগ করেছেন,নির্বাচনের ফলাফলের পরের দিন থেকে কংগ্রেস জোর করে গোপন শিবিরে আটকে রাখে।পরিবারের কারোর সাথে যোগাযোগ রাখতে দিচ্ছিল না।শিবিরের মধ্যে দুর্ব্যবহার করা হতো।তাই স্বেচ্ছায় পালিয়ে গিয়েছি।এদিকে এই ভিডিও বার্তা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূল তাদের প্রার্থীদের অপহরণ করেছে।পাল্টা তৃণমূলের দাবি,ওই দুই প্রার্থী স্বেচ্ছায় তৃণমূলে যোগদান করছে।মূলত,মালদহের চাঁচল-১ নং ব্লকের কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত দখল নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে তৃণমূল এবং কংগ্রেসের মধ্যে।২০ টি আসন বিশিষ্ট এই গ্রাম পঞ্চায়েতে ৮ টি আসনে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস,৭ টিতে তৃণমূল,৩ টি বিজেপি ও ২ টি আসনে জয়ী হয় সিপিআইএম।ফলাফল বেরোনোর পরের দিন থেকেই নিজেদের ৮ জন প্রার্থী ও সিপিআইএমের ২ জয়ী প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে গোপন শিবিরে রেখেছিল কংগ্রেস। চলতি ইংরেজি মাসের ১১ তারিখ কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া ছিল।পঞ্চায়েত দপ্তরের ভেতর ভোটাভুটি চলাকালীন দুই পক্ষের মধ্যে গন্ডগোলের জেরে ভেস্তে যায় গঠন প্রক্রিয়া।তবে সেই দিনই কংগ্রেসের এক জয়ী প্রার্থী হাজেরা বিবি তৃণমূলে যোগ দেয় বলে তৃণমূল দাবি করেছে।বাকিদের নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব ফের গোপন শিবিরে চলে যায়।প্রশাসনের নির্দেশে আগামী ২৪ আগষ্ট পুনরায় বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া দিন ধার্য্য হয়েছে।আর তার আগেই এবার বড় ধাক্কা খেলো কংগ্রেস। কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্ডীগাছি ১৫৮ নং বুথের কংগ্রেসের দুই জয়ী প্রার্থী হেনা খাতুন ও সানজিবা খাতুন কংগ্রেসের শিবির ছেড়ে তৃণমূলের শিবিরে চলে গিয়েছেন।সেখান থেকেই নিজেদের স্বামীদের পাশে নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও বার্তা দেন ওই দুই প্রার্থী।যা ভাইরাল হয়ে যায় গোটা এলাকায়। ভিডিও বার্তা থেকে তারা দাবি করেন, কংগ্রেসের শিবিরে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করত। পরিবারের কারোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে দিত না। ফোন ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছিল। আমাদের নিজস্ব মতামত রয়েছে। সেই মতামত শোনা হতো না। তাই আমরা স্বেচ্ছায় শিবির থেকে পালিয়ে গেছি।ঘটনা প্রসঙ্গে মালদা জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন জানান, ওই দুই প্রার্থী আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করবে। পাল্টা জবাবে চাঁচল ১ নং ব্লক কংগ্রেস কমিটির সভাপতি আনজারুল হকের দাবি, আমাদের গোপন শিবির থেকে রবিবার সন্ধ্যে বেলা ওই দুই প্রার্থী অপহৃত হয়েছে। আমরা এখনো গ্রাম পঞ্চায়েত দখলের ব্যাপারে আশাবাদী। যদিও ওই দুই জয়ী প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct